ঢাকা, রবিবার, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৯ রবিউস সানি ১৪৪৬

পর্যটন

ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন ষাটগম্বুজ মসজিদ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১১ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৭
ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসুন ষাটগম্বুজ মসজিদ ষাটগম্বুজ মসজিদ-ছবি: মানজারুল ইসলাম

খুলনা: সাগর, পাহাড়, বন-জঙ্গল, ঝরনা— ইতোমধ্যে যাদের সবই দেখা শেষ; তারা ভাবছেন, এবার ঈদের ছুটিতে কোথায় ঘুরতে যাবেন। চিন্তা নেই, প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম পুরাকীর্তি বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ।

সুলতান নসিরউদ্দীন মাহমুদ শাহের (১৪৩৫-৫৯) আমলে খান আল-আজম উলুগ খানজাহান সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে খলিফাবাদ রাজ্য গড়ে তোলেন। খানজাহান বৈঠক করার জন্য একটি দরবার হল গড়ে তোলেন যা পরে ষাটগম্বুজ মসজিদ হয়।

তুঘলকি ও জৌনপুরী নির্মাণশৈলী এতে সুস্পষ্ট। ষাটগম্বুজ মসজিদ বাগেরহাট শহরথেকে মাত্র সাত কিলোকিটার দূরে খুলনা-বাগেরহাট মহাসড়কের উত্তর পাশে ষাটগম্বুজ বাস স্টপেজ লাগোয়া সুন্দরঘোনা গ্রামে অবস্থিত।

হজরত খানজাহানের (র.) পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত অপূর্ব কারুকার্যময়  এ মসজিদটি এর দরগাহ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। স্থাপত্য কৌশলে ও লাল পোড়া মাটির উপর লতাপাতার অলংকরণে পাঁচ শতাব্দীরও বেশি পুরনো এ মসজিদ এক বিশেষ স্থান অধিকার করে রয়েছে। ষাটগম্বুজ মসজিদ নামে পরিচিত হলেও এ মসজিদে মধ্যযুগীয় স্থাপত্যশৈলীর মোট ৮১টি গম্বুজ রয়েছে। এ মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী আসেন। ষাটগম্বুজ মসজিদ-ছবি: মানজারুল ইসলামষাটগম্বুজ ছাড়াও বাগেরহাট এলে ঘুরে দেখতে পারবেন খান জাহানের নির্মিত প্রাচীন রাস্তা, জিন্দাপীর মসজিদ, নয় গম্বুজ মসজিদ, সিংড়া মসজিদ, রণবিজয়পুর মসজিদ, চুনাখোলা মসজিদ, বিবি বেগনী মসজিদ, সাবেকডাঙ্গা পুরাকীর্তিসহ অন্যান্য ঐতিহাসিক নিদর্শন।  

বাগেরহাটের ঐহিত্যবাহী ষাটগম্বুজ মসজিদের ইমাম (খতিব) আলহাজ মাওলানা মো. হেলাল উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি পর্যটকরা আসেন। তবে ঈদের ছুটিতে ষাট গম্বুজ মসজিদ ও খান জাহান আলীর মাজার এলাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি হয়। হাজারো দর্শকের পদচারণায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে এখানে।

ষাটগম্বুজ মসজিদের পাশেই রয়েছে একটি জাদুঘর। ইউনেস্কোর সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটি প্রতিষ্ঠা করেছে। ঐতিহাসিক এলাকাটি থেকে প্রাপ্ত প্রাচীন নিদর্শনগুলো এখানে সংরক্ষণ করা হয়েছে যাতে বাগেরহাটের ইতিহাস সম্পর্কে মানুষকে জানানো যায়। ষাটগম্বুজ মসজিদ-ছবি: মানজারুল ইসলামএখানে তিনটি প্রদর্শনী কক্ষ রয়েছে যেখানে ‘বাগেরহাটের ঐতিহাসিক মসজিদের শহর’ সংক্রান্ত প্রাচীনলেখনী, সিরামিক, টেরাকোটা ও কারুকার্যময় ইটের নিদর্শন রয়েছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দালানের ছবিও প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে।

বাগেরহাট জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান গোলাম ফেরদৌস বাংলানিউজকে বলেন,  ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ষাটগম্বুজ মসজিদ ও হজরত খানজাহানের (র.) মাজারসহ বাগেরহাটের পর্যটন স্পটগুলো দেখতে প্রতি ঈদের ছুটিতে ব্যাপক পর্যটকের আগমন ঘটে। সাধারণের জন্য জনপ্রতি টিকেট এর দাম বিশ টাকা। শিক্ষার্থীদের জন্য পাঁচ টাকা। বিদেশি দর্শনার্থীর জন্য টিকেট মূল্য দুইশো টাকা।

তিনি জানান, গ্রীষ্মকালে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কেল্লা খোলা থাকে। মাঝখানে দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত আধঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকে। ষাটগম্বুজ মসজিদ-ছবি: মানজারুল ইসলামযেভাবে যাবেন ও যেখানে থাকবেন
ঢাকা থেকে সড়ক পথে বিভিন্ন পরিবহনে বাগেরহাট যাওয়া যায়। এছাড়া ঢাকা থেকে বিমানে যশোর এসে সেখান থেকে সড়ক পথে যাওয়া যায় বাগেরহাট। বাগেরহাট শহরে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি হোটেল রয়েছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০১৭
এমআরএম/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।