ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বাণিজ্যমেলা

বাণিজ্য মেলায় ব্যবসায়ীদের সাড়া কম

ঊর্মি মাহবুব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৪
বাণিজ্য মেলায় ব্যবসায়ীদের সাড়া কম ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: এবারের বাণিজ্য মেলায় ব্যসায়ীদের অপেক্ষাকৃত কম সাড়া পড়েছে। গত বছরের তুলনায় অন্তত ৩৫টি কম স্টল নিয়ে এবারের মেলা শুরু হয়।



অন্যান্য বছরগুলোতে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিন থেকে বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন হলেও এবার রাজনৈতিক অস্থিরতায় ১০ দিন পিছিয়েছে।

বিগত বছরগুলোতে বাণিজ্য মেলায় স্টলের সংখ্যা বাড়লে এবার সে ধারা অব্যাহত থাকেনি।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে বাণিজ্য মেলায় স্টলের সংখ্যা মোট ৪৭১ টি। গতবছর বাণিজ্য মেলায় মোট ৫০৬টি স্টল ছিলো। বাণিজ্য মেলায় স্টলের সংখ্যা কমার কারণে এ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

মেলায় স্টলের সংখ্যা কম হওয়ার কারণে হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিরতাকেই দায়ী করা হচ্ছে।
 
এ বিষয়ে ইপিবির সহ-সভাপতি শুভাষিস বসুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
 
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইপিবির এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক সহিংসতায় বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগসহ ভাঙচুর করা হচ্ছে।

এর ফলে বিদেশি ব্যবসায়ীরা যেমন আসতে ভয় পেয়েছেন, তেমনি দেশীয় ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অন্যবার বাণিজ্য মেলায় স্টল বরাদ্দের জন্য অস্বাভাবিক প্রতিযোগিতা থাকলেও এবার ছিলো ভিন্ন চিত্র। এবার না ছিলো কোনো তদবির, না কোনো তোড়জোড়।
 
নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কায় কমেছে বিদেশিদের অংশগ্রহণও। গত বছরের বাণিজ্য মেলায় বিদেশি অংশগ্রহণকারী দেশের সংখ্যা ছিলো প্রায় ১৫টি। যা চলতি বছর এসে দাঁড়িয়েছে ১২টিতে।

শুধু তাই নয় রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাণিজ্য মেলার সফলতা অর্জন করা কতোটা সম্ভভ হবে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলেছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছরই ব্যবসায়ী সমাজ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার জন্য অপেক্ষা করেন। কিন্তু এবার রাজনৈতিক অস্থিরতায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।

তাছাড়া হরতাল-অবরোধ যদি আবার শুরু হয়, তবে আগে যে সুনাম ছিলো তাও আর থাকবে না। রাজনীতিকরা দেশের অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। সাধারণ মানুষদের কথা একবারও চিন্তা করছেন না।

এসব বিষয়ে বাংলাদেশ রফতানিকারক সমিতি (ইএবি)’এর সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বাংলানিউজকে বলেন, দেরিতে হলেও বাণিজ্য মেলা শুরু হওয়ায় আমরা আশাবাদী। কিন্তু রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মেলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এটা ঠিক। আর তাই সংশ্লিষ্ট সবার এক সাথে কাজ করা উচিত। কারণ এখন আর আমাদের হাতে কিছু নেই। আমরা কাজ করতে চাইলেও কিছু করতে পারছি না।

অন্যদিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানিকারক পোশাকের শিল্পের নেতারাও একইভাবে ভাবছেন বলে জানান বাংলাদেশ নীট পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) এর প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

মোহাম্মদ হাতেম বাংলানিউজকে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এবারের বাণিজ্য মেলায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এ কথার সাঙ্গে আমি একমত। সরকারের উচিত বর্তমান পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটিয়ে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা। নয়তো এর দায় ভার সবাইকেই বহন করতে হবে।

এবারের বাণিজ্য মেলায় ১৫৭ কোটি টাকার রফতানি আদেশ আসলেও তার ধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়েও নানা সংশয় দেখা দিয়েছে ব্যবসায়ীদের মনে। তবে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন কোনো বিশৃঙ্খলা ছাড়াই এবাবরের বাণিজ্য মেলা শেষ হবে।
 
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গন খোলা থাকবে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ মেলা।

বাংলালাদেশ সময়: ১৯১৯, জানুয়ারি ১১, ২০১৩
সম্পাদনা: তমাল আবদুল কাইয়ূম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।