ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বাণিজ্যমেলা

আঁকিয়ে নিতে পারেন কাঠপেন্সিলের পোর্ট্রেট

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৪
আঁকিয়ে নিতে পারেন কাঠপেন্সিলের পোর্ট্রেট

মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থীদের জন্য কাঠপেন্সিলের ছোয়ায় জীবন্ত পোর্ট্রেট আঁকছেন কয়েকজন তরুণ। আগ্রহীরা তাদের কাছ থেকে আঁকিয়ে নিচ্ছেন তাদের জীবন্ত পোর্ট্রেট।



মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলার প্রবেশপথ বরাবর চত্ত্বরে বসে কয়েকজন তরুণ আগ্রহী দর্শনার্থীদের পোর্ট্রেট আঁকছেন। বিনিময়ে তারা নিচ্ছেন সামান্য কিছু পারিশ্রমিক। সংখ্যায় এ ধরনের শিল্পীর সংখ্যা ৭ থেকে ৮ জন।
 
তাদের মধ্যে একজন নড়াইলের চিত্রশিল্পী পার্থ। তিনি কথা বলতে পারেন না, এমনকি কানেও শুনেন না। তবে লিখে সবকিছু প্রকাশ করতে পারেন। তিনি মেলায় আসা আগ্রহী দর্শনার্থীদে পোর্ট্রেট আঁকছেন। এজন্য ১১ ইঞ্চি বাই ১৬ ইঞ্চি কগজে একটি ছবির জন্য তিনি নিচ্ছেন ৩০০ টাকা। ছবির আকার ভেদে তিনি পারিশ্রমিকও নিচ্ছেন কম-বেশি।
 
অন্যবারের চেয়ে এবার মেলায় আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে পোর্ট্রেট আঁকিয়ে নেওয়া আগ্রহীদের সংখ্যা কিছুটা কম বলে জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন চিত্রশিল্পী। তবে ছুটির দিনে মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড় হলে আগ্রহী দর্শনার্থীরা তাদের কাছে ভিড় জমান বলে জানান তারা।

এ বছর মেলা শুরু হওয়ার পর থেকে গত মঙ্গলবার তারা সবচেয়ে বেশি পোর্ট্রেট এঁকেছেন বলেও জানান তারা।
 
তার পাশেই ছবি আঁকছেন চিত্রশিল্পী রাশেদ মাহমুদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের এ শিক্ষার্থীর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায়। তিনি গত ছয় বছর ধরে ছবি আঁকছেন। শখের বশেই ছবি আঁকা শিখেছেন এবং এটাকে নিয়েছেন পেশা হিসেবেও।
 
সাতক্ষীরার চিত্রশিল্পী তরুণ কান্তি সরকার জানান, অন্যের ছবি আঁকা দেখেই ছবি আঁকার আগ্রহ জন্মে তার। সে থেকেই নিজে চেষ্টা করে পোর্ট্রেট আঁকা শিখেছেন। তবে তার কোনো প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই।
 
তিনি জানান, প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচটি ছবি আঁকেন তিনি। মেলায় আসা দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করি সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি ছবি আঁকতে পারবো।
 
সাদাকালো একটি ছবির জন্য তিনশ এবং রঙিন ছবির জন্য ২ হাজার টাকা নেন তিনি। তবে রঙিন ছবি মেলাতে বসে আঁকা সম্ভব হয় না। এজন্য আগ্রহীদেরকে অগ্রীম অর্ডার করতে হবে।
 
তার পাশেই ছবি আঁকছিলেন অ‍ারেক শিল্পী অরুণ দাশ। তিনি বলেন, এবারের মেলায় ছবি আঁকিয়ে নেওয়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ কম। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ৪ থেকে ৫টি ছবি আঁকা হয়।
 
মেয়েদের ছবি আঁকার প্রতি বিশেষ আগ্রহ রয়েছে অরুণের। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মেয়েদের ভিতরে বিশেষ সৌন্দর্য লুকিয়ে রয়েছে। কাঠপেন্সিল দিয়ে সে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে চান তিনি।
 
বিশেষ এ দিনে মেলায় এসে নিজের পোর্ট্রেট আঁকিয়ে নিতে পেরে খুশি আগ্রহীরা। তারা বলছেন ক্যামেরা বা মোবাইলে আমরা ছবি তুলি অহরহ। কিন্তু কাঠপেন্সিলে নিজের প্রতিচ্ছবি আঁকিয়ে নেওয়ার সুযোগ সব সময় হয় না। তাছাড়া ক্যামেরা বা মোবাইলে যেমন সবাই ছবি তুলতে পারে কাঠপেন্সিল দিয়ে সবাই ছবি আঁকতে পারে না। তাই এ সুযোগ হাতছাড়া করছেন না অনেকেই।
 
নিপা আক্তার নামের মেলায় আসা একজন গৃহবধূ বাংলানিউজকে জানান, আমার ল্যাপটপে এবং বাঁধানো অবস্থা কয়েক শত ছবি আছে। তবে হাতে আঁকা কোনো ছবি নেই। তাই আজ বাণিজ্য মেলায় এসে এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি।
 
ছবি আঁকিয়ে নিতে কত টাকা নিয়েছে-জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে জানান, আমার কাছ থেকে ২০০ টাকা নিয়েছে। তবে শিল্পীরা বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে বিভিন্ন রকমের পারিশ্রমিক নিচ্ছেন।
 
ব্যবসায়ী আনিস মোহাম্মদ বাংলানিউজকে জানান, সাধারণত কাজের চাপে পরিবার নিয়ে প্রথম চারদিন মেলায় আসতে পারি নি। তবে বুধবার চাপ কম থাকায় স্ত্রী ফারজানা ও ছেলে রাহিদ আহাম্মদকে নিয়ে মেলায় ঘুরতে এসেছি। ভেতরে প্রবেশ করেই রাহিদ আহম্মেদের বায়না অনুযায়ী তিনজন একত্রে পরে কাঠপেন্সিলের পোর্ট্রেট আঁকিয়ে নিচ্ছি।
 
তিনি আরও বলেন, ছবি আঁকিয়ে নিতে বেশ সময় লাগলেও কাঠপেন্সিলের ছুঁয়ায় পরিবারের পোর্ট্রেট হাতে পেয়ে বেশ ভালো লাগছে।  
 
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫, জানুয়ারি ১৫, ২০১৪
সম্পাদনা: তমাল আবদুল কাইয়ূম, নিউজরুম এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।