ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ট্রাইব্যুনাল

রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া কোনো সুযোগ নেই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৭ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১৬
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া কোনো সুযোগ নেই আনিসুল হক- ফাইল ফটো

ঢাকা: মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, আমরা কিছুটা হলেও ভারমুক্ত।
 
রায় কার্যকরে আইনি প্রক্রিয়ায় এখন একটাই ধাপ বাকি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কোনো আইনি সুযোগ নেই।


 
নিজামীর করা রিভিউ (রায় পুনর্বিবেচনা) আবেদন খারিজ করে বৃহস্পতিবার (৫ মে) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন।
 
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, আজকে নিজামীর শাস্তির শেষ ধাপে রায় আমরা পেয়েছি, এটা ঋণ শোধ করার প্রক্রিয়ার মধ্যে একটা। আমরা আজকে কিছুটা হলেও ভারমুক্ত।
 
‘সার্বিক বিবেচনায় এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, এইসব মানবতাবিরোধী অপরাধী-যুদ্ধাপরাধীদের মামলা প্রমাণ করার জন্য বিশ্বের কোথাও এতটা ধাপ দেওয়া হয় না। আমরা তাদের সেই সুযোগ দিয়ে, সর্বাত্মক আইনি সুযোগ দিয়ে তাদের বিচার সমাপ্ত করেছি এবং বিচারের মাধ্যমে আমাদের এবং দেশের জনগণের যে বক্তব্য তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ’
 
রায় কার্যকরের পরবর্তী ধাপ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, এর আগেও অনেকগুলো রায় হয়েছে এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে।
 
‘আইনত একটাই ধাপ এখন বাকি আছে। সেটা হচ্ছে, যিনি ফাঁসির আসামি, ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন, তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইতে পারেন। এইটুকু রিজিনিবেল টাইম হয়তো তিনি পাবেন, তাছাড়া আর কোন আইনি সুযোগ নেই। ’
 
রায় কার্যকরের সময় প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় বেরিয়ে গেছে। এখন রিভিউ পিটিশনের রায় বের হতে তো বেশি সময় লাগার কথা নয়। সেইটুকু সময় হয়তো তারা হাতে পাবেন।
 
‘আমাদের কথা হচ্ছে, এর আগে যতগুলো ফাঁসির রায় যেভাবে কার্যকর হয়েছে, ঠিক এটাও সেভাবেই করা হবে। ’
 
নিজামীর রিভিউ রায় আইনের শাসনের দিকে যাওয়ার প্রমাণ বলে জানান আইনমন্ত্রী।
 
‘আমাদের দেশে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর বিচারহীনতার সংস্কৃতি ছিল, আজকে ধীরে ধীরে আমরা আইনের শাসনের সংস্কৃতির দিকে যাচ্ছি, এই রায় সেটারই একটা জলজ্যন্ত প্রমাণ। ’
 
রায়ে একাত্তরের শহীদদের ঋণের বোঝা কিছুটা হলেও ভারমুক্ত হওয়া সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী।
 
তিনি বলেন, আমরা চিরকালই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশ স্বাধীন করার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন, যারা বীরাঙ্গনা হয়েছেন তাদের কাছে ঋণী থাকবো। কিন্তু ঋণ শোধ করার জন্য কিছু কিছু পদক্ষেপ আমাদের নিতে হবে।
 
‘সব চেয়ে বড় জিনিস হচ্ছে, আমার বয়স ষাট, এই রায়গুলো ব্যক্তিগতভাবে ইমোশনাল ব্যাপার। কারণ একাত্তরে এদের যে দাম্ভিকতা, যে ব্যবহার... সেসবগুলোর বিচার হয়ে সাজা হচ্ছে- সেটা দেখতেও ভালো লাগে। ’
 
আইনমন্ত্রী বলেন, এই বিচারের মাধ্যমে আমরা বিচারপ্রার্থীরা অন্ততপক্ষে বুঝতে পারছি এবং দেশের জনগণ বুঝতে পারছে কোন অপরাধী, যারা অপরাধ করে তারা বিচারের আওতার বাইরে থাকবে না এবং অপরাধ করলে শাস্তি হবেই, এটাই হচ্ছে আইনের শাসনের সবচেয়ে বড় মাত্রা।
 
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।
 
তিনি বলেন, আমি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনজীবীদের ধন্যবাদ জানাই যে তারা ৪৪ বছর পরেও এই মামলাগুলোর সাক্ষী-প্রমাণ জোগাড় করে এ পর্যন্ত আনতে সহযোগিতা করেছেন।
 
নিজামীর ক্ষেত্রে জেল কোড প্রযোজ্য হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আপনারা তো সবই জানেন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৬ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৬
এমআইএইচ/এসএনএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ট্রাইব্যুনাল এর সর্বশেষ

welcome-ad