ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আগরতলা

স্বাদে মানে অনন্য ত্রিপুরার জম্পুই পাহাড়ের কমলা

সুদীপ চন্দ্র নাথ, আগরতলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৩৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬
স্বাদে মানে অনন্য ত্রিপুরার জম্পুই পাহাড়ের কমলা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ত্রিপুরা রাজ্যের মরসুমি ফলের মধ্যে অন্যতম হলো কমলা লেবু। আর ত্রিপুরা রাজ্যের সব চেয়ে বেশি এবং ভাল মানের কমলা লেবুর চাষ হয় রাজ্যের উত্তর জেলার জম্পুই পাহাড়ে।

আগরতলা: ত্রিপুরা রাজ্যের মরসুমি ফলের মধ্যে অন্যতম হলো কমলা লেবু। আর ত্রিপুরা রাজ্যের সব চেয়ে বেশি এবং ভাল মানের কমলা লেবুর চাষ হয় রাজ্যের উত্তর জেলার জম্পুই পাহাড়ে।

স্বাদে মানে অনন্য হওয়ার জন্য জম্পুই পাহাড়ের কমলা লেবুর কদর শুধু ত্রিপুরা রাজ্যেই নয় উত্তরপূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও।

তবে দিন দিন জম্পুই পাহাড়ের বাগানগুলোতে কমলার উৎপাদন কমে আসছে। মূলত বাগানের গাছের বয়স বেশি হয়ে যাওয়ায় উৎপাদন কমে আসছে বলে অভিমত চাষিদের।

জম্পুই পাহাড়ের ৭টি এডিসি ভিলেজে ১শ’র বেশি কমলা লেবুর বাগান রয়েছে।

ইতিমধ্যে রাজধানী আগরতলাসহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকার এসে গেছে জম্পুইয়ের সুস্বাদু কমলা। আগরতলা শহরের বিভিন্ন বাজারে মাঝারি আকারের চারটি কমলা লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ রুপি করে।

ত্রিপুরার পাশাপাশি আসামের করিমগঞ্জ, বদরপুর, পাথারকান্দি, শিলচরসহ অন্যান্য জায়গার ব্যবসায়ীরাও জম্পুই পাহাড়ে এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন কমলালেবু।

জম্পুই পাহাড়ের পাশাপাশি রাজ্যের, বড়মুড়া পাহাড়, শাখানটাং পাহাড়, জম্পুইজলা, পানিসাগর সহ প্রায় প্রতিটি জেলার পাহাড়ি এলাকায় কম বেশি কমলা লেবু চাষ হয়ে থাকে। সব মিলিয়ে এখন ত্রিপুরা রাজ্য জুড়ে কমলা লেবুর ভরা মরসুম।

এদিকে দেশবিদেশে ত্রিপুরার কমলার চাহিদা বাড়ায় দিন দিন বাড়ছে কমলা লেবুর উৎপাদন। রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১১-১২ অর্থবছরে কমলার উৎপাদন হয়েছে ২৩ হাজার ৫শ’ ৯০ মেট্রিক টন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ২৮ হাজার ৮শ’ মেট্রিক টন এবং ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উৎপাদিত হয়েছে ৩৩ হাজার ৯শ’ মেট্রিক টন কমলা।

উদ্যান অধিদফতরের নথি অনুসারে রাজ্যে বর্তমানে ২২ হাজার ১শ’ ৪১জন চাষি কমলা লেবু চাষ করছেন। চাষ হচ্ছে ৭ হাজার ১শ’ ৪২ হেক্টর এলাকায়। এছাড়া রাজ্যের টিলাভূমিতে বসবাসকারী বহু মানুষ নিজ বাড়িতে ছোট পরিসরে কমলা লেবুর চাষ করে থাকেন যার হিসেব সংশ্লিষ্ট দফতরে নেই।  

ত্রিপুরা রাজ্যের উৎপাদিত কমলা উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যসহ বাংলাদেশেও রপ্তানি হয়। রাজ্যের উত্তর জেলার ধর্মনগরের রাগনা সীমান্ত দিয়েই বেশি রপ্তানি হয়। তাছাড়া আগরতলার ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট দিয়েও কিছু কমলা রপ্তানি হয় বলে জানান এক্সপোর্ট ইমপোর্ট এসোসিয়েশনের সম্পাদক হাবুল বিশ্বাস।

রাজ্য সরকার কমলা চাষের জন্য চাষিদের উৎসাহিত করছে। চাষিদের পাশাপাশি রাজ্যের ও বাইরের রাজ্যের পর্যটকদের মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যের কমলাকে ছড়িয়ে দিতে প্রতিবছর কমলা উৎসবের আয়োজন করা হয়।  

এসব উৎসবের জন্য মূলত বেছে নেয়া হয় কমলা বাগানকেই। যেখানে পর্যটকরা নিজের হাতে গাছ থেকে টাটকা কমলা পেড়ে তার স্বাদ নিতে পারেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৬
এসসিএন/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।