ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সামিল হওয়ার প্রস্তাব দেয় ত্রিপুরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সামিল হওয়ার প্রস্তাব দেয় ত্রিপুরা আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখছেন বক্তারা। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের ডাকে পূর্বপাকিস্তান যখন উত্তাল তখন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন চলছিলো। ওই অধিবেশনে আশারামবাড়ী বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিদ্যাচরণ দেববর্মা প্রস্তাব পেশ করেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত যাতে সহায়তা করে তার জন্য বিধানসভায় জরুরি ভিত্তিতে আলোচনা করা হোক। আলোচনার সিদ্ধান্ত ভারত সরকারের কাছে প্রস্তাব আকারে পাঠানো হোক।

তিনি আরো বলেন, ত্রিপুরার বাজেট অধিবেশনের চেয়ে এটি অনেক বেশী জরুরি বিষয়।

তারপর ত্রিপুরা বিধানসভায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে আলোচনা করা হয় ও প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে এই যুদ্ধে সহযোগিতার জোরালো দাবি জানানো হয়।

এর পর ভারত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়।

আগরতলায় আয়োজিত ‘ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ বর্ডার: ইন্টাৠাকশন অ্যান্ড ক্রস বর্ডার রিলেশন্স উইথ স্পেশাল রেফারেন্স টু নর্থ-ইস্ট ইন্ডিয়া অ্যান্ড রোড অ্যাহেড’ শীর্ষক  দুদিন ব্যাপী যৌথ আলোচনা সভার প্রথম দিন সোমবার (২৩ অক্টোবর) রামঠাকুর কলেজের অধ্যাপক তথা গবেষক মোজাহিদ রহমান এ তথ্য তুলে ধরেন।

অাসামের ও কে ডি ইনস্টিটিউট অব সোসাল চেঞ্জ এন্ড ডেভেলপমেন্ট', ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম এন্ড মাসকমিউনিকেশন বিভাগ এবং জাপানের সাসকাওয়া পিস ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।

মোজাহিদ রহমান বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় আগরতলা সার্কিট হাউসে ১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে।

এই সময় বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদের সহায়তায় সাধারণ মানুষ, স্কুল ছাত্রছাত্রী, এমনকি ত্রিপুরার জেলে বন্দিরাও তাদের একদিনের খাবার ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন।

ত্রিপুরা রাজ্যের বিশিষ্ট সাংবাদিক তথা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক মানস পাল জানান, বিখ্যাত শোলে সিনেমার গব্বর চরিত্র বাস্তবে ছিলো ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে। এই গব্বরকে খতম করেছিলেন দু:সাহসী আর্মি অফিসার কে এস রুস্তমজি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিবাহিনীর বিরুদ্ধে রণনীতি স্থির করার দায়িত্ব রুস্তমজিকে দিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তখন তিনি ব্রিগেডিয়ার বি সি পান্ডে'র নেতৃত্বে বাংলাদেশের দুই হাজার গেরিলা সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেন এবং বিভিন্ন সেক্টরে যুদ্ধের জন্য পাঠান।

মানস পাল বলেন, মুক্তি বাহিনী প্রশিক্ষণ শেষ করে যুদ্ধে নামার আগেই ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী(বিএসএফ) পাকিবাহিনীর চলাচল বন্ধ করতে লুঙ্গি পরে বাংলাদেশ ঢুকে একের পর এক সেতু ও রেলসেতু ধ্বংস করে দেয়।  

এদিন আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, রাজনীতিবিদ বিজয় কুমার রাংখল, সলিল দেববর্মা, রাজ্যের বিশিষ্ট সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য্য, সঞ্জিব দেব, অধ্যাপক দেবজিৎ চক্রবর্তী প্রমুখ।

মঙ্গলবার(২৪ অক্টোবর) আলোচনা সভার দ্বিতীয় ও শেষ দিন বিশিষ্ট জনেরা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৭
এসসিএন/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।