ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

সৌদি আরব

মিনায় নিহতদের মধ্যে ৫ জন বাংলাদেশি

সৌদি আরব করেসপন্ডেন্ট ও ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫
মিনায় নিহতদের মধ্যে ৫ জন বাংলাদেশি ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের মিনায় বড় জামারাতে (প্রতীকী শয়তান) পাথর ছোড়ার সময় পদদলিত হয়ে ৫ বাংলাদেশি হাজি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন নিহতদের স্বজনরা।

বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এতে আরও ১৫ বাংলাদেশি হজযাত্রী আহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন- সুনামগঞ্জের জুলিয়া হুদা, ফেনীর তাহেরা বেগম ও তার ভাই নুরুন্নবী মিন্টু, জামালপুরের ফিরোজা খানম এবং মুন্সিগঞ্জের জাহানারা আরজু।

নিহতদের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে যোগাযোগ করা হলে বৃহস্পতিবার দিনগত বাংলাদেশ সময় রাত দেড়টার দিকে জেদ্দা কনস্যুলেটের কনস্যুলার (হজ) আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে না বললে, আমি নিহতদের ব্যাপারে কিছুই বলতে পারব না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন হাসপাতালে আমাদের লোক পাঠিয়েছি এবং সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা নিহতদের জাতীয়তাসহ পরিচয় প্রকাশ করার পর আমরা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারবো।

এ ঘটনায় ১৫ বাংলাদেশি আহতের খবরটি নিশ্চিত করেছে মক্কা বাংলাদেশ হজ মিশন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সৌদিতে নিযুক্ত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ বাংলানিউজকে বলেছিলেন, এখনও পর্যন্ত কোনো বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে আহতদের মধ্যে ৮ বাংলাদেশি হাজিকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজির অবস্থা গুরুতর। তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আহত বাকি বাংলাদেশি হাজিদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া।

এদিকে নিহত ও আহতদের সংখ্যা বেড়েই চলছে বলে জানান কনস্যুলার (হজ) মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, এখনও সৌদি কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত তালিকা করেনি। তাই পূর্ণাঙ্গ তালিকা আমরা পাইনি। তবে হতাহতদের মধ্যে বাংলাদেশিরা আছেন। মক্কা ও মিনার হাসপাতালগুলোতে খবর নিচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস ও জেদ্দা মিশন।

এদিকে বাংলানিউজের সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি শাহজাহান চৌধুরী জানান, সুনামগঞ্জ সদরের হাজীপাড়া এলাকার বদরুল হুদা সস্ত্রীক হজ পালনের জন্য সৌদি গিয়েছেন। তাদের সঙ্গে পরিবারের আরও দুই সদস্যও রয়েছেন। বৃহস্পতিবার অসুস্থবোধ করায় মিনায় ‘শয়তান স্তম্ভে’ পাথর ছুড়তে যাননি বদরুল। তবে তার স্ত্রী জুলিয়াসহ অন্যরা মিনায় যান। পাথর ছোড়ার সময় গরমের মধ্যে জুলিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন।

তিনি আরও জানান, উদ্ধার করে মিনার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের স্বামী বদরুল হুদা দেশে তার ভাই সুনামগঞ্জ চেম্বারের সভাপতি খায়রুল হুদা চপলকে ফোনে জুলিয়ার মৃত্যুর খবর দেন।

বাংলানিউজের ফেনী করেসপন্ডেন্ট সোলায়মান হাজারী ডালিম জানিয়েছেন, মিনায় পদদলিত হয়ে ফেনীর ২ হাজী নিহত ও একজন নিখোঁজ রয়েছেন। তারা হলেন- সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের কলিম উদ্দিন মুন্সি বাড়ির নুরন্নবী মিন্টু (৬৯) ও একই উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়নের শুলাখালি গ্রামের তাহেরা বেগম (৭৩) । এছাড়া সোনাগাজী পৌরসভার চরগনেশ গ্রামের মৃত শেখ এজহারুল হকের স্ত্রী বিবি ফাতেমা (৬৫) নিখোঁজ রয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ইমাম উদ্দিন ঘঠন বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বলে তিনি জানান।

জামালপুর শহরের হাটচন্দ্রা গ্রামের ফিরোজা খানম নিহত এবং একই পরিবারের আরও ৪ জন আহত হয়েছেন বলে বাংলানিউজের জামালপুর করেসপন্ডেন্ট জানিয়েছেন।

ফিরোজা খানমের ছেলে খন্দকার ফরিদুল ইসলাম বাংলানিউজে জানান, সকালে তার ভাইসহ পরিবারের অন্যরা মিনায় যাওয়ার সময় তার মা পদদলিত হয়ে মারা যান। এ সময় তার পরিবারের আরও ৪ জন আহত হয়েছেন। আহতরা হলেন- ফিরোজ, শফিউল আজম, ইকবাল বাহার চৌধুরী ও সাইফুল ইসলাম।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) মিনায় ‘শয়তান স্তম্ভে’ পাথর ছোড়ার সময় পদদলিত হয়ে ৭১৭ জন মারা যান। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮৬৩ জন হাজি।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৫/আপেডট: ২২০৪ ঘণ্টা/০২১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫/০৪১৩ ঘণ্টা
জেপি/আরএইচ/এমএ/আরএম

** ‘আহত ৮ বাংলাদেশি হাসপাতালে’
** মিনায় আহতদের কয়েকজন বাংলাদেশি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

সৌদি আরব এর সর্বশেষ