ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পর্যটনে নতুন উদ্যোগ

ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুর

সাব্বির আহমেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুর

ঢাকা: ট্যুরটার নাম ‘ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুর’। বিদেশিদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়।

ভারতের কেরালায় ট্যুরিস্টরা এরকম একটা ট্যুর করেন। তবে বাংলাদেশে প্রথম বারের মতো এই ধারণা নিয়ে বরিশালে চালু হয়েছে ‘বরিশাল ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুর’।

ট্রিপ টু বাংলাদেশ দেশে প্রথম এই ট্যুরিস্ট সেবা নিয়ে এসেছে।

ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুরে বিদেশিদের বেশ আকর্ষণ জানিয়ে ট্রিপ টু বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদ হাসান খান বাংলানিউজকে বলেন, বরিশালের একটি গ্রামে খালের মধ্যে নৌকায় বেড়ানোর স্বাদ দিতে ও নৌকায় ঘুরে ঘুরে গ্রামীণ চিত্র এবং রাতে গ্রামের কুঁড়েঘরে থাকার জন্য এই ট্যুর, যার নাম দিয়েছেন তিনি ‘বরিশাল ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুর’ ।

প্রতি বছর প্রায় এক হাজার বাংলাদেশি এই ‘ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুর উপভোগ করেন। আর মাসে প্রায় ৮টি বিদেশি পর্যটক ট্যুর হয়।

এ ট্যুরের বর্ণনা দিয়ে মাহমুদ বলেন, বিদেশিদের তিনি গ্রামের একটি বাড়িতে নিয়ে রাখেন দুই দিন। এসব বিদেশি সেখানকার কৃষকের বাড়িতে থাকেন। গ্রামীণ জীবন উপভোগ করেন। নৌকায় সেখানকার জীবন চিত্র দেখেন।

পৃথিবীর একটা ফটোজেনিক জায়গা বরিশালের গ্রামের ‘ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুর’-এমন মন্তব্য করেছেন ঘুরে আসা অনেক বিদেশি।

মাহমুদ জানান, ভারতে এই ট্যুরে পর্যটকদের কাছ থেকে প্রতিদিনে ৩০০ ডলার নেয়া হয়, আর বরিশালে ২ দিন থাকা, ঘুরে দেখা, ঢাকা থেকে যাওয়া-আসা মিলিয়ে নেয়া হচেছ ৩০০ ডলার, আর দুজন হলে ৩৪০ ডলার।

‘বরিশাল ব্যাকওয়াটার অ্যান্ড ভিলেজ ট্যুর’ ভারতের কেরালার ওই ট্যুরের চেয়ে অনেক বেশি আকর্ষণীয় বলে জানান তিনি।

মাহমুদ মনে করেন, দেশে এমন অনেক জায়গা আছে যেগুলো ঠিকঠাক উপস্থাপন করা গেলে হাজার হাজার বিদেশি শুধু বাংলাদেশ দেখতে আসবে।

মাহমুদ ৫ হাজারের বেশি বিদেশি পর্যটকের সঙ্গে মিশেছেন। যাদের ঘুরে দেখিয়েছেন বাংলাদেশ। কিন্তু পর্যটকদের আগ্রহে কেবল কক্সবাজার ছিলো বলে জানান তিনি।

মাহমুদ বলেন, কোন বিদেশি পর্যটককে শুধু পুরান ঢাকা দেখালেই যথেষ্ট। একদিনের কয়েক ঘণ্টার জন্য হলে প্রথমেই পর্যটককে নিয়ে যাই পুরান ঢাকায়, আর্মেনিয়ান চার্চে। তারপর তাঁতিবাজর শাখাঁরিবাজার সদরঘাট ঘুরে দেখাই।

আর এতেই মুগ্ধ হয়ে যান পর্যটক। মাহমুদ বলেন, সদরঘাটকে বিদেশিরা ফ্রান্সের সঙ্গে তুলনা করে।

মাহমুদ শুরুটা করেছিলেন কোন লাভ ছাড়াই বিদেশিদের বাংলাদেশ দেখানোর সহযোগিতা দিয়ে। ১২ বছর পর নিজের একটি ট্রাভেল প্রতিষ্ঠান ‘ট্রিপ টু বাংলাদেশ’ গড়ে তুললেও এখনও পর্যটক কোন মূল্য ছাড়াই তার কাছ থেকে টিকেটিং সুবিধা, হোটেল বুকিংসহ ট্রিপ প্ল্যান পেয়ে থাকেন।
শুধু তার ‘ভিজিট বাংলাদেশ’ এই ফেসবুক পাতার মাধ্যমে দেশীয় পর্যটকদের নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বিভিন্ন গন্তব্যে মাহমুদ।

ভ্রমণপাগল মানুষদের জন্য দেশ ঘুরে দেখার তার রয়েছে জনপ্রিয় ফেসবুক পেজ ‘বেড়াই বাংলাদেশ’। এটি সম্পূর্ণ নন কমার্শিয়াল বলে জানান মাহমুদ। যে কেউ বাংলাদেশের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে ঘুরে আসতে পারেন-www.facebook.com/beraibangladesh/?fref=ts

এছাড়া বাংলাদেশ ঘুরে দেখতে রয়েছে তার ফেসবুক ভিত্তিক জনপ্রিয় ভ্রমণ গ্রুপ www.facebook.com/groups/beraibangladesh/?pnref=story
তিনি বলেন, ‘বেড়াই বাংলাদেশের’ মাধ্যমে মাসে অন্তত ৩টি ট্রিপ দেয়া হয়। কখনো টাঙ্গাইলের মহেরা জমিদার বাড়ি, কখনো সোনারগাঁওয়ের পানাম নগরী, কখনো বুড়িগঙ্গা তীরের সদরঘাট-এভাবেই ড্রে ট্রিপ সাজানো থাকে।

সকালে গমন এবং সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসার পরিকল্পনা নিয়ে ডে ট্রিপ করেন মাহমুদ। আর ডে ট্রিপের এমন আহবানে প্রচুর সাড়া পড়ে ফেসবুকে। এছাড়াও লং ট্রিপ আছে তার ট্যুর প্ল্যানে।

মাহমুদ দেশি বিদেশি পর্যটকদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঘুরতে নিয়ে যান গ্রামে। দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যময় স্থানে। এর পর্যটকরা এটাই পছন্দ করেন বলে জানান তিনি।

৫ হাজার বিদেশি পর্যটকের সঙ্গে মেশার অভিজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের মাত্র ৫ থেকে ৬ জন কক্সবাজার নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন, আর বাকি সবার আকর্ষণ ছিলো পুরান ঢাকা।

এ প্রসঙ্গে একটি রকেট স্টিমার সার্ভিসের কথা বলেন মাহমুদ। প্রায় ৭০ থেকে ৮০ বছরের পুরোনো কিছু জাহাজ ঢাকা থেকে মোড়েলগঞ্জ যায়। এই স্টিমারের জার্নিটা বেশ উপভোগ করেন বিদেশিরা।

এতে নদীর দু’পাশ দেখতে দেখতে যাওয়া যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
এসএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ