রামু, কক্সবাজার থেকে: রাবার গাছের সবুজ পাতাগুলো বাতাসের সঙ্গে দুলছে। ঘন এসব গাছের মাঝ দিয়ে হাঁটা দিলে সবুজের সমারোহে হারিয়ে যাবে মন।
ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়, টিলা ও বিস্তৃত সমতল পাহাড়ের মধ্যে এ রাবার বাগানের চারপাশে তাকালেও দেখা মিলবে অপরুপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের।
কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলায় এমনই নয়নাভিরাম রাবার বাগান রয়েছে। অনন্য প্রাকৃতিক শিল্পসত্ত্বায় পরিপূর্ণ এ বাগানে অনায়াসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারেন দর্শনার্থীরা।
তবে পর্যটন স্পট হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এ রাবার বাগান খুব বেশি দর্শনার্থী টানতে পারছে না।
স্থানীয় ও দর্শনার্থীরা জানালেন, পযর্টকরা এখানে এসে তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা পান না। দর্শনার্থীদের কাছে রাবার বাগানটি আকর্ষণীয় হিসেবে গড়ে তোলার জন্যও নেওয়া হয়নি তেমন কোনো পদক্ষেপ। সব মিলিয়ে সম্ভাবনাময় পযর্টনের স্থান হিসেবে থাকা এ রাবার বাগান হাতছানি দিচ্ছে কোনো এক সফলতার গল্পের।
রেস্ট হাউসের চর্তুদিকে আরাকান সড়কের উভয় পাশের বিশাল এলাকার জুড়ে রাবার বাগানটি অবস্থিত। গত শুক্রবার (০৮ এপ্রিল) পুরো রাবার বাগান ঘুরে তেমন কোনো দর্শনার্থী বা বনভোজনের দলের দেখা মিললো না। কেউ কেউ এসেছেন কিন্তু খুব অল্প সময় থেকেই চলে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ের ওপরে এ রাবার বাগানের মধ্যে একাধিক ফাঁকা জায়গা রয়েছে। যেখানে পযর্টকরা আড্ডায় মেতে উঠতে পারেন। এমনকি বনভোজনও করতে পারেন। পাশাপাশি ফুটবল, ক্রিকেটসহ একাধিক খেলায় মেতে ওঠার সুবিধা রয়েছে।
এ বাগান ভ্রমণে এসে নতুন অনেক কিছুর সঙ্গে পরিচিতও হতে পারবেন দর্শনার্থীরা। জানতে পারবেন রাবার চাষ সম্পর্কে নানা তথ্য। দেখার সুযোগ রয়েছে কীভাবে রাবার গাছ থেকে কষ সংগ্রহ করা হয়।
পাহাড়ের ওপরে হাজার হাজার রাবার গাছের মধ্য দিয়ে হাঁটলে অন্যরকম এক অনুভূতি কাজ করবে। এ সবুজের সমারোহ ও মনোরম পরিবেশে সময় কাটাতে হলে আসতে হবে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলায়।
বেলা তিনটার দিকে রাবার বাগানে কথা হয় দর্শনার্থী আজগর হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, রাবার বাগান হিসেবেই এ জায়গাটি বেশ বিখ্যাত। দেশের বড় এ রাবার বাগানের রয়েছে নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্য। কিন্তু দর্শনার্থীরা এসব বিষয়ে জানার কোনো সুযোগ পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, একটি নতুন জায়গায় এসে পযর্টকরা সবকিছু বিস্তারিত জানতে চান। জায়গাটি যেন খুব সহজে ব্যবহার করতে পারেন সে বিষয়টি নিশ্চিত হতে চান। কিন্তু এখানে এসে তার কিছুই নমুনা পেলাম না।
স্থানীয় গৌতমসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এক সময়ে অনেক মানুষ রাবার বাগানটি পরিদর্শন করতে আসতেন। কিন্তু এখন অনেকটা কমে গেছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ বাগানকে পযর্টকদের কাছে তুলে ধরছে না কর্তৃপক্ষ, এমন অভিযোগের সুরও পাওয়া যায় তার কাছ থেকে।
রাবার বাগানটিকে পযর্টন স্পট হিসেবে আরও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরার আহ্বানও মিললো অনেকের কাছ থেকে।
বাগানের মাঝখান দিয়ে একটি সড়ক রয়েছে। পাহাড়ের চূড়ার শেষ প্রান্তে আছে জেলার পুরনো বিশ্রামাগারটি। এর চারপাশের অপরুপ পরিবেশ এখানকার সৌন্দর্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের পর্যটন নগরী কক্সবাজারের এ রাবার বাগানকে ঘিরে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হলে দেশের অন্যতম একটি পর্যটন স্পট ও অর্থনৈতিক লাভজনক খাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে এটি।
১৯৬০-৬১ সালের দিকে সরকারি বনভূমির উপর রাবার বাগানটি সৃজিত হয়। বর্তমানে বাগানের বিস্তৃতি ২,৬৮২ একর। এর মধ্যে ১,১৩০ একর এলাকা থেকে লিকুইড বা কষ সংগ্রহ করা হয়। রামুর রাবার বাগানে উৎপাদনক্ষম গাছ আছে প্রায় ৫৮ হাজার। এসব গাছ থেকে বছরে প্রায় আড়াই লাখ কেজি রাবার উৎপাদন হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৬
একে/জেডএস
** সম্ভাবনাময় বাঁকখালী নদীর বুকে মেঘ জমছে!
** যেন স্বয়ং বুদ্ধ শুয়ে আছেন!
** পদ্ম বেচে সংসারে হাসি ফেরান আহমেদ হোসেন
** সেন্টমার্টিন যেভাবে যাবেন
** বছরজুড়ে দেশ ঘুরে: কক্সবাজারে বাংলানিউজ
** কক্সবাজারে বাংলানিউজের দ্বিতীয় টিম
** তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রাম টিম এখন কক্সবাজারে
** মারমেইড ও মুগ্ধতার গল্প...
** সেন্টমার্টিন দেখতে কেমন (পর্ব-২)
**সেন্টমার্টিন দেখতে কেমন (পর্ব-১)
** কুকুর যখন ‘টুনা’ শিকারি
** ‘পর্যটন মৌসুম শব্দটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে’
** তৈরি হচ্ছে ‘বিচ ডাটাবেজ’
** সেন্টমার্টিনে সৈকত জুড়ে কাঁকড়ার আল্পনা
** সেন্টমার্টিনে বাজার সদাইয়ের সংগ্রাম (ভিডিওসহ)
** সৈকতের আল্পনাশিল্পীদের করুণ মৃত্যুগাথা