ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

প্রথম যাত্রায় যাত্রীতে পরিপূর্ণ সুন্দরবন-১০

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৯ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৬
প্রথম যাত্রায় যাত্রীতে পরিপূর্ণ সুন্দরবন-১০ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বরিশাল থেকে: বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও সর্বাধুনিক যাত্রীবাহী নৌযান সুন্দরবন-১০ এর উদ্বোধনের পর ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে প্রথম যাত্রার শুরতেই কেবিন, সোফা আর ডেকে যাত্রীতে পরিপূর্ণ দেখা যায়।

শনিবার (২৫ জুন) বিকেল ৫টা থেকেই যাত্রীদের ভিড়ে নিচতলা ও দোতলার পেছনের ডেক মুহূর্তেই পূর্ণ হয়ে যায়।

ডেকে জায়গা না পেয়ে অনেকে দোতলা ও তিনতলার কেবিনের সামনের বারান্দায় ঠাঁই নিয়েছেন।

একদিন আগেই লঞ্চটির দুইশ’ আসনের সবগুলোই বুকিং হয়েছে। এমনকি ছয়টি স্পেশাল, ভিআইপি ১৫টি এবং সেমি-ভিআইপি কেবিনও বুক হয়েছে আগেই। ৩০টি সোফায়ও প্রায় একই অবস্থা।

সন্ধ্যার কিছু আগে লঞ্চটিতে থাকা হাজার খানেক বাতির সবগুলোই জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কেবিনের দরজা জানালা ও সিলিংয়ের বাহারি নকশায় অপূর্ব সাজে সজ্জিত করা হয়েছে লঞ্চটি। এতে ভ্রমণ করতে ঢাকা থেকে বরিশালগামী যাত্রীদের গুণতে হবে- ডেকে ২০০ টাকা, সোফায়-৫০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১ হাজার টাকা, ডাবল কেবিন ২ হাজার টাকা এবং ভিআইপি কেবিনে ৪ থেকে ৬ হাজার টাকা।

ডেকে জায়গা না পেয়ে দোতলায় লঞ্চের সামনে চাদর বিছিয়ে বরিশালের উদ্দেশে রওনা দেন কাওসার হোসেন। তিনি জানান, জায়গা পাওয়াটা বড়ো কথা নয়, লঞ্চটি বড়, নতুন ও আধুনিক হওয়ায় এটিতে যাত্রা করার শখ জেগেছে। সেই শখ মেটাতেই এই লঞ্চে উঠেছেন তিনি।

বরিশাল নগরের বাসিন্দা ও লঞ্চের যাত্রী রাজিব হোসাইন বলেন, নতুন এই লঞ্চের প্রথম যাত্রায় যাত্রী হয়ে বেশ আনন্দিত তিনি ও তার বন্ধুরা। সবাই  মিলে ঈদ করতে বাড়িতে যাওয়ার আনন্দের ভাগটা দ্বিগুণ করে দিয়েছে লঞ্চটি।

তবে লঞ্চের টেলিভিশনের সংযোগের কাজ, ওয়াইফাই জোনের কাজ শেষ না হওয়ার কথাও জানালেন তিনি।

লঞ্চটির প্রথমদিনে এতো যাত্রী ও যাত্রীদের হাসিমুখ দেখে কম খুশি নন লঞ্চের মালিক কেন্দ্রীয় লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি, বরিশাল সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও সুন্দরবন নেভিগেশনের স্বত্বাধিকারী সাইদুর রহমান রিন্টু।

তিনি বলেন, সুযোগ-সুবিধা বেশি থাকায় প্রথম যাত্রায় যাত্রীরা লঞ্চটিকে মন থেকে বেছে নিয়েছেন। এটাই তার ভালো লাগা, আর ব্যবসার সঙ্গে মানুষের সেবা করতে পেরে তিনি নিজেও খুশি।

আধুনিক প্রযুক্তির এমভি সুন্দরবন-১০ লঞ্চটি ৩০ মাসের ধৈর্য্যের ফসল। গত এপ্রিলে কীর্তনখোলা নদীতে ভাসিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চলাচল করে। ৩৩২ ফুট দৈর্ঘ্য ৫২ ফুট প্রস্থের এই লঞ্চে চলাচলে অক্ষম এমন ব্যক্তিদের জন্য লিফট, সিসিইউ বেড, নামাজের  নির্দিষ্ট স্থান, ইন্টারনেট-ওয়াইফাই, এটিএম বুথ, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, শিশু বিনোদন কর্নার, ফুড কোড ও সেলুনের ব্যবস্থা রয়েছে।

এক হাজার ৪০০ যাত্রী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন লঞ্চটির নিচের অংশে ১২টির মতো কম্পার্টমেন্ট রাখা হয়েছে। যাতে পানির নিচের এক অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে অপর অংশ না হয় এবং এটি তলিয়ে না যায়। পাশাপাশি নিচ ও দ্বিতীয় তলায় ডেক ছাড়াও থাকছে যাত্রীদের দুইশ’র অধিক প্রথম শ্রেণির কেবিন, ১৫টি ভিআইপি, ৬টি ভিভিআইপি কেবিন ও ৪০টি সোফার ব্যবস্থা।

দুইশ’ টন পণ্য পরিবহনের সুবিধাতো থাকছেই। পাশাপাশি লঞ্চটি সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা চালু রয়েছে। আধুনিক অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা তো আছেই।

সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, জার্মানির তৈরি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ২ হাজার ৭৫০ হর্স পওয়ায় দু’টি ইঞ্জিন দ্বারা লঞ্চটি পরিচালিত হবে। হুইল হাউজে (চালকের কক্ষ) সম্পূর্ণ অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর যন্ত্রাংশ সংযোজন করা হয়েছে। এর রাডার সুকান ‘ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক’ ও ম্যানুয়াল দ্বৈত প্রদ্ধতিতে ব্যবহার করা যাবে। ঘন কুয়াশায় চলাচলের জন্য আছে বিশেষ ফগ লাইট।

পাশাপাশি জিপিএস পদ্ধতি সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে লঞ্চটি চলাচলরত নৌ-পথের এক বর্গকিলোমিটারের মধ্যে গভীরতা ছাড়াও আশপাশের অন্য যে কোনো নৌ-যানের উপস্থিতি চিহ্নিত করতে পারবে বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘন্টা, জুন ২৬, ২০১৬
এএসআর/টিআই 

 

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ