কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে জনসংযোগে গিয়ে গ্রামবাসীদের প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন টালিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শতাব্দী রায়।
বীরভূম জেলার তৃণমূল থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য তিনি।
রোববার (০৪ ডিসেম্বর) বীরভূমের সাঁইথিয়ার হাতোড়া নামের গ্রামের বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন এ তারকা-সংসদ সদস্য।
সে গ্রামের নারীরা শতাব্দীকে ঘিরে ধরেন। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়া নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূলের স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তোলেন গ্রামবাসী।
তাদের দাবি, প্রতিশ্রুতি থাকলেও অনেকেই এখনও বাড়ি পায়নি, অনেক গ্রামে রাস্তা হয়নি, এমনকি পুকুরে ঘাটও বাঁধিয়ে দেওয়া হয়নি।
শতাব্দীর সামনে এমনই নানা অভিযোগ তুললেন গ্রামবাসীরা।
এ সময় মেজাজ হারান শতাব্দী। গ্রামবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যা পেয়েছেন অনেক বেশি পেয়েছেন, তবে যারা পাননি এবার পেয়ে যাবেন। ’
তবে এর পর পরই রাজ্য সরকারের প্রকল্প ‘দুয়ারে সরকার’ উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রামবাসীর সমস্যা সাধানের আশ্বাস দেন এই তৃণমূল নেত্রী।
শতাব্দী রায়কে ঘিরে গ্রামবাসীর এই ক্ষোভ সঙ্গত বলেই মনে করছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো।
গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে শতাব্দীর এমন বক্তব্যে শতাব্দী রায়ের সমালোচনা করেছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা।
তিনি বলেছেন, জয়লাভের পর থেকেই বীরভূমের সংসদ সদস্যকে তো দেখা যায় না। এখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নিজের নির্বাচনী এলাকার কথা মনে পড়েছে। মানুষ তো বিক্ষোভ দেখাবেনই। দুর্নীতিতে ডুবে আছে গ্রাম। টাকার পাহাড় মিলছে সবখানে। তবে এই ক্ষোভ প্রদর্শণ শুভ লক্ষণ। মানুষ প্রতিবাদ করছেন। যা আগে হতো না।
তিনি আরও বলেন, ‘গরীব মানুষকে পাকা বাড়ি’ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প, রাজ্য সরকার নিজের প্রকল্প বলে চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের আর একনেতা (অনুব্রত মন্ডল) অবৈধ বালি পাচার, পশু পাচার করে মানুষকে অতিষ্ট করে তুলেছেন। মানুষ আর কতদিন সহ্য করবে?
শতাব্দী রায়ের ঘটনায় সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, গতকাল কাঁথির এক গ্রামে গিয়ে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে গ্রামের প্রধান, উপ-প্রধানকে খারিজ করেছেন। এবার শতাব্দীও কি প্রধান, উপ-প্রধানকে বরখাস্ত করবেন? ধিকিধিকি জ্বলছে মানুষের ক্ষোভ।
শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে স্বজনভা করার আগে এলাকার একটি গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি না পাওয়াসহ তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ শুনেছিলেন সংসদ সদস্য। পরে সভায় পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধানকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দেন তৃণমূল নেতা।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা ১৬০৫, ডিসেম্বর ০৪, ২০২২
ভিএস/এসএএইচ