আগরতলা (ত্রিপুরা): গণতন্ত্র রক্ষার জন্য ত্রিপুরার আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন শুধু ত্রিপুরা রাজ্যের জন্যই নয়, সমগ্র ভারতবর্ষের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরী।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।
জানা গেছে, আসন্ন ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং তিপ্রামথা দলের মধ্যে নির্বাচনী জোটের বিষয়ে আলোচনা চলছে। বামফ্রন্টের অন্যতম বড় শরিক দল সিপিআইএম এ বিষয়ে নিজেদের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) আগরতলায় এক দিবসীয় বৈঠক করে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরী, সিপিআইএমের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাত, ত্রিপুরার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারসহ দলের অন্যান্য নেতারা।
সেই বৈঠক শেষে বুধবার তিনি সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জোটের বিষয়ে নিজেদের মতামত জানান। বলেন, ত্রিপুরার বর্তমান সরকার গত ৫ বছরে তাদের দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। সারা দেশের মধ্যে ত্রিপুরায় বিভিন্ন ধরনের অপরাধের তালিকায় প্রথম সারিতে রয়েছে। রাজ্য জুড়ে নানা ধরনের সমস্যা থাকলেও তারা এসবের প্রতি কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। সাধারণ মানুষকে ধর্মীয়ভাবে প্রভাবিত করা হচ্ছে।
সীতারাম ইয়েচুরী বলেন, এই পরিস্থিতিতে বিজেপিকে হারানো বামফ্রন্টের প্রধান লক্ষ্য। তাই আমরা কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এগুলি হলো অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলোর সঙ্গে মানুষের স্বার্থে আলোচনা করা। রাজ্যের উন্নয়নে সম্প্রীতি রক্ষায় জাতি ও জনজাতির মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে বিজেপিকে কোনঠাসা এবং নিজেদেরকে আরও শক্তিশালী করা। বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলোকে নিজেদের ঐক্য মজবুত করো। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরা রাজ্যের নির্বাচনী জোট গঠনের জন্য কংগ্রেস এবং তিপ্রামথা দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
এ সময় সাংবাদিকরা বলেন, একইভাবে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস এবং বামদের মধ্যে জোট হয়েছিল, কিন্তু দেখা যায় সেই জোট চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে। এর উত্তরে সীতারাম বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বামদের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন ভাগাভাগি হয়েছিল যে বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সমর্থন ছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নেতৃত্ব আসন ভাগাভাগির পাশাপাশি সে রাজ্যে কিছু অভিন্ন ন্যূনতম চুক্তি করেছিল যেগুলো নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আপত্তি ছিল।
তিনি আরও বলেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি এবং তৃণমূলকে পরাস্ত করার জন্য আসন ভাগাভাগি হয়েছিল। কিন্তু এখন ত্রিপুরায় শুধুমাত্র বিজেপিকে কোনঠাসা করার জন্য আসন ভাগাভাগির বিষয়ে আলোচনা চলছে। তাই আশাকরি এবার সাফল্য আসবে।
তিপ্রামথা দলের ত্রিপুরা রাজ্যকে ভাগ করে নতুন একটি রাজ্য গঠন কঅন্যতম প্রধান দাবি। এমন পরিস্থিতিতে বামেরা তাদের এই দাবি মেনে নেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, যা কিছু সংবিধানের মধ্য থেকেই আলোচনা হবে। অধিক স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার বিষয়ে বামেরা রাজি আছে। তাদের এই দাবি সংবিধানের মধ্য থেকেই করা হচ্ছে।
এদিনের এই সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরীর সঙ্গে সিপিআইএমের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক জিতেন চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২৩
এসসিএন/এমএমজেড