আগরতলা (ত্রিপুরা): বাঁশ ও বেতের কাজের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা, সেই সঙ্গে কি করে বাঁশ ও বেতকে ভিত্তি করে নিত্য নতুন সামগ্রী তৈরী করা যায়, তার জন্য প্রতিনিয়ত গবেষণা করে যাচ্ছে ভারতের সর্ব প্রথম বাঁশ ও বেত বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্র ব্যাম্বো অ্যান্ড ক্যান ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট (বিসিডিআই)। এটি আগরতলার লিচুবাগান এলাকায় অবস্থিত।
এই সংস্থার অধিকর্তা ড. অভিনব কান্ত বাংলানিউজকে জানান, বিসিডিআই ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মূলত সারা দেশের বাঁশ ও বেত ভিত্তিক শিল্পের উন্নতির লক্ষ্যে ভারত সরকারের উদ্যোগে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রায় ৪৯ বছরের যাত্রায় দেশের প্রতিটি রাজ্য থেকে বহু শিল্পীরা এখানে এসে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের সমৃদ্ধ ও বাঁশ-বেত শিল্পে নিজেদের রাজ্যকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করছেন। শুধু দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বিদেশের বহু শিল্পীরাও এখানে এসে প্রশিক্ষণ নিয়ে গেছেন।
এই প্রতিষ্ঠানে মূলত দুই ধরণের কাজ হয়। শিল্পীদের কাজের গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ এবং নতুন নতুন সামগ্রী ও সামগ্রীর নতুন নতুন ডিজাইন উদ্ভাবন করা। কারণ হস্তশিল্পের সামগ্রীর নতুন নতুন ডিজাইনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ থাকে। তাই বিভিন্ন ধরনের সামগ্রীর নতুন ডিজাইন উদ্ভাবন করেন তারা, যোগ করেন ড. অভিনব।
সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল গাছের বা ঘাসের মধ্যে বাঁশ অন্যতম। ফলে অন্যান্য কাঠের পরিবর্তে এখন নানা কাজে বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই কাঠের বিকল্প হিসেবে বাঁশকে কী কী কাজে লাগানো যায়- এ নিয়ে কাজ করা হয়। বাঁশের জন্য বা এর পাশাপাশি যে সব প্রযুক্তি রয়েছে, সেগুলোকে সংযুক্ত করে আর কী কী করা যেতে পারে, তা নিয়েও গবেষণা করা হয়। ধূপকাঠির শলা উৎপাদন, বাঁশের চারকুল তৈরী বিষয়ে নানা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
বাঁশজাত পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কী করে বাঁশ চাষ করা যায়- তা নিয়েও গবেষণা চালানো হয়। আগামী দিনে সারা বিশ্বের জন্য বাঁশ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী হয়ে উঠছে। তাই এই সামগ্রীকে কী করে আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে ব্যবহার করা যায়- এসব বিষয় নিয়ে নিয়মিত পরীক্ষামূলকভাবে কাজ করছে সংস্থাটি।
এই সংস্থাটি শুধু স্থানীয় বা আঞ্চলিক স্তরে নয়, জাতীয় স্তরেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষির পর হস্ত ও কারু শিল্প থেকে দেশের সবচেয়ে বেশী কর্মসংস্থান ও রোজগার হয় বলেও জানান বিসিডিআই অধিকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০২৩
এসসিএন/এনএস