কলকাতা: চলছে পবিত্র রমজান মাস। শুক্রবার (৩১ মার্চ) রোজার ৮ম দিনে বাহারি পসরায় সেজে ওঠে কলকাতার ইফতার বাজার।
এদিন (৩১ মার্চ) সকাল থেকে তোড়জোড় শুরু হলেও কেনাবেচা শুরু হয় দুপুর থেকে। ইফতারের সময় ঘনিয়ে আসতেই বিক্রেতাদের হাঁকডাক বেড়ে যায়।
বিশ্বজুড়ে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে কলকাতার ইফতারের আয়োজন অবশ্য একটু অন্যরকম। সাধারণত ইফতারে ফল এবং খেজুর অন্যতম।
এদিন (৩১ মার্চ) পার্ক সার্কাস অঞ্চলের ফলের দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, খেজুর, পেঁপে, তরমুজ, কলার চাহিদাই বেশি। এ অঞ্চলে তিন পিস কলা ১০ রুপি, সফেদার হালি ৫০ রুপি, বেদানার কেজি ৮০ রুপি, তরমুজের কেজি ৩০ রুপি, পাকা পেঁপের কেজি ৬০ রুপি, আপেল প্রতি কেজি ২০০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ভালো মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ২৫০ রুপি থেকে ১৫শ রুপি।
তবে কলকাতার উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- এখানে এক পিস বা ১০০ গ্রাম ফলও কেনা যায়। সেক্ষেত্রে এক পিস আপেল বা কলা যেমন কেনা যায়, তেমনি পেঁপে এবং তরমুজের মতো বড় ফলও রোজাদারদের প্রয়োজন অনুযায়ী কেটেও বিক্রি করছেন দোকানিরা।
এছাড়া যারা কলকাতার নিউমার্কেট বা মারক্যুউ স্ট্রিটে এসেছেন, তারা জানেন যে, এ অঞ্চলে সারা বছর সব ধরনের ফল কেটে একত্রিত করে শালপাতার বাটি বা ওয়ানটাইম বাটিতে বিক্রি হয়। যাকে বলা হয় ‘ফ্রুট স্যালাদ’। রোজার দিনগুলোয় কলকাতাজুড়ে সেই কাটা ফলের চাহিদা বাড়ে ঢের। জায়গা বিশেষ প্রতি প্লেট ২০ রুপি থেকে ৫০ রুপিতে বিক্রি হয়। তবে দাম যত বাড়বে, ফলের ভ্যারাইটিও ততো বাড়বে। সাধারণত ৫-৬ রকম ফল থাকে। ক্রেতার সামানেই কেটে তা বিক্রি করা হয়।
এছাড়া খুচরা ৪-৫ পিস খেজুর ১০-২০ রুপিতে কেনা যায়। ভাজাপোড়ার দামও মোটামুটি সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, ডাল বড়া, ডিমের বড়া, ছোলা মাখা- এসবই পার্ক সার্কাস অঞ্চলে প্রতি পিস ৮-১০ রুপির মধ্যে পাওয়া যায়। জিলাপি পাওয়া যায় ৬-১০ রুপিতে।
এসব যেমন আলাদা করে কিনে পরিবার বা অফিসে বসে ইফতার করা যায়। তেমনি সব ধরনের ফল, খেজুর, ভাজাপোড়া দিয়ে একবারে তৈরি ইফতারের প্লেটও বিক্রি হয়। এ ধরনের প্লেটও কেনেন সাধারণ ক্রেতারা। তবে এসবের চল বেশি রয়েছে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে।
যারা জীবিকার সন্ধানে পথেই থাকেন, তাদের কথা কেউ না ভাবলেও ভাবেন বিক্রেতারা। আবার কেউ কেউ সেমাই কিনে নিয়ে যান। যা প্রতি কেজি ১৬০ রুপি।
তবে কলকাতার নিউমার্কেট অঞ্চলে ইফতারির বাজারে বেচাকেনায় এখনো সেই ভিড় দেখা না যাওয়ায় অনেক দোকানির অভিমত, ১৫-১৬ রমজানের পর কেনাবেচায় গতি আসবে। কারণ ওই সময় বাংলাদেশিরা ঢুকতে শুরু করবে শহরে।
তবে বাজারে ইতোমধ্যেই লেবুর দাম বেড়েছে। তিন পিস লেবুর দাম ১০ রুপি। কদিন আগেও যে ১০ রুপিতে পাওয়া যেত ৫ পিস লেবু।
এ বিষয়ে ফল বিক্রেতা সেলিম জানান, কি আর করা যাবে। সব জিনিসের দাম বাড়ছে। রোজার কয়টা দিন মানিয়ে নিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২৩
ভিএস/এনএস