কলকাতা: রোববারের (১৬ এপ্রিল) পরও তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি জারি থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছিল আগেই।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) আবহাওয়া দপ্তর জানিয়ে দিল, আগামী ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গজুড়ে এরকম পরিস্থিতি অব্যাহত থাকতে পারে।
তারপরে তাপমাত্রা নিম্নগামী হবে কি না, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
কলকাতার আবহাওয়া দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গণেশ দাস জানিয়েছেন, শেষবার ২০১৬ সালের এপ্রিলে কলকাতাসহ ভারতের দক্ষিণবঙ্গে টানা সাতদিন এরকম তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি চলে।
শুষ্ক গরমের দাপটে শনিবার (১৫ এপ্রিল) থেকে আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে কলকাতা। প্রকৃত অর্থে শহরের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপদাহ। যদিও সরকারিভাবে এখনো ঘোষণা হয়নি।
এদিন (১৫ এপ্রিল) কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। হাওয়া অফিসের তথ্য মতে, যা অনুভব হচ্ছে ৪৬ ডিগ্রির সমান। ফলে এদিন সকাল ১০টার পর বাসা থেকে বের হলে গরমে ত্বকে জ্বলুনিভাব আসছে। শুষ্ক গরমে চোখ জ্বালা করছে। ফেটে যাচ্ছে ঠোঁট ও হাত-পা। মনে হচ্ছে, আকাশ ভেদ করে যেন আগুন ঝরছে। কলকাতার পরিস্থিতি এখন এমনই।
অপরদিকে, কলকাতা লাগোয়া সল্টলেকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ঘরে। একইভাবে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে।
টানা এমন পরিস্থিতি চলার কারণ কী? আবহাওয়াবিদরা বলছেন, একদিকে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে উষ্ণ ও শুষ্ক হাওয়া ঢুকছে। অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্প অনেক কম মাত্রায় ঢুকছে। এর জেরে গায়ে যেন আগুনের ছ্যাঁকা লাগছে।
আবহাওয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বঙ্গোপসাগরে কোনো উচ্চচাপ বলয় বা বিপরীত ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হলে বেশি জলীয় বাষ্প ঢুকতে শুরু করবে। সে রকম পরিস্থিতি তৈরি হলে বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু তেমন পরিস্থিতি কবে হবে, তা আবহাওয়াবিদরা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না।
এহেন পরিস্থিতিতে কলকাতাসহ রাজ্যের স্কুলগুলোর প্রধান শিক্ষকদের একটা অংশ গরমের ছুটি এগিয়ে আনার পক্ষে মত দিয়েছেন। অনেকেই আবার বিপক্ষে মত দিয়েছেন। বিরোধীদের বক্তব্য, ছুটি দেওয়ার হলে তা এখনই ঠিক ছিল।
তাদের দাবি, আগামী ২ মে নাগাদ আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা এখনই কেউ বলতে পারে না। বেশি ছুটির কারণে পঠনপাঠন ব্যাহত হবে।
অনেক অবিভাবক বলছেন, এই গরমে সন্তানদের স্কুল আনা তো দূরে থাক, নিজেরাই বের হতে পারছি না। ফলে করোনার মতো কিছুদিন অনলাইন ক্লাস চালু করা হোক। তাহলে অন্তত ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা গরম থেকে কিছুটা রেহাই পাবে। সেই সঙ্গে তাদের পঠনপাঠনেও ব্যাঘাত ঘটবে না।
অনেকেই আবার স্কুলের সময়সীমা কমিয়ে এবং ক্লাস শুরু এবং ছুটির সময় এগিয়ে আনাতে মত দিয়েছেন।
মূলত, পশ্চিমবঙ্গে স্কুলে গরমের ছুটি পড়ে মে মাসের ১৬ তারিখের পর থেকে। রাজ্য সরকার চাইছে, গরমের ছুটি ২ মে থেকে শুরু করতে। শিক্ষকমহল চাইছেন, এখনই ছুটি শুরু হোক। পরিস্থিতি অনুয়ায়ী সরকারের নির্দেশিত গরমের ছুটি কিছুটা কাটছাঁট করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, ১৫ এপিল, ২০২৩
ভিএস/এনএস