কলকাতা: বেশি দিনের ঘটনা নয়, চলতি বছর ২ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘীতে জয়ের উল্লাসে উড়েছিল লাল সবুজ আবির। কারণ, তৃণমূলের গড় বলে পরিচিত সাগরদিঘীর বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করেছিলেন, সংখ্যালঘুর ভোটে কংগ্রেসের এই জয় পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের কাছে এক অশনি সংকেত। বাম-কংগ্রেস জোটের এই মডেল আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে অন্য সমীকরণ হতে চলেছে। কিন্তু, সব জল্পনার অবসান ঘটল মাত্র ৮৯ দিনে।
সোমবার (২৯ মে) সেই বাইরন যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। ফলে বাংলার বিধানসভায় ফের কংগ্রেসের খাতা বন্ধ হয়ে গেল।
এ দিন পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন সাগরদিঘীর বিধায়ক বাইরন। দলবদল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজ্যের উন্নয়নে শামিল হতে, নিজের কেন্দ্রের উন্নয়নের জন্যই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলাম।
যদিও রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, বাইরনকে ভয় দেখিয়ে তৃণমূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তৃনমূল এখন দুটো জিনিস করছে; হয় ‘টাকা’ নয় ‘ডান্ডা’। টাকার লোভ অনেকদিন ধরে দেখাচ্ছিল, কিন্তু না পেরে ভয় দেখিয়ে তাকে তৃণমূলে নিল।
জবাবে বাইরন বলেছেন, তৃণমূলে ভয় দেখানোর কী আছে। আমি তো তৃণমূলেরই লোক। তৃণমূলের ভোটেই তো আমি জিতেছি। সাগরদিঘীতে কংগ্রেসের ভোট নেই। যারা ভোট দিয়েছেন আমাকে দেখেই দিয়েছিলেন।
পাণ্টা অধীর বলেছেন, বাইরন ভাইটি আমার, কংগ্রেসের বদনাম কোরো না। তোমার নিয়ত, তোমার ইমান, ধর্মকে প্রশ্ন করো। কংগ্রেস তোমাকে প্রার্থী করেছিল। বামেদের সমর্থন নিয়ে কংগ্রেস কর্মীরা রাতদিন এক করে তোমাকে জিতিয়েছে। মানুষ কংগ্রেসের ওপর ভরসা রেখেছে। তার প্রোডাক্ট হলে তুমি। এবার কেনাবেচার রাজনীতিতে তুমি নিজে কী করলে সেটা তোমার ব্যাপার। তাই বলছি, কংগ্রেসের বদনাম করো না। তুমি ভালো পরিবারের ছেলে। তোমার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি দেখেই প্রার্থী করেছিলাম।
এখন দেখার বিষয় বাইরন তৃণমূলে যাওয়ায় বাম-কংগ্রেস জোটে কোনো ধাক্কা লাগে কিনা? তৃণমূলবিরোধী মানুষেরা কি আর এই জোটকে বিশ্বাস করবে? কারণ যে বাইরন রাজ্যের শাসকদলের ওপর গর্জে উঠেছিলেন, সেই তিনিই এখন শাসকদলের অঙ্গ। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিধায়ককে কিনতে পারলেও মানুষের মনোভাবকে তৃণমূল পাল্টাতে পারবে না। তার ফল আগামী নির্বাচনে তারা জিতবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, ২৯ মে, ২০২৩
ভিএস/এমজেএফ