ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

কিশোরের মগজ খেয়ে নিল অ্যামিবা, পানি নিয়ে সতর্কতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪১ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০২৩
কিশোরের মগজ খেয়ে নিল অ্যামিবা, পানি নিয়ে সতর্কতা

কলকাতা: ভারতের কেরালায় দূষিত পানিতে গোসল করে করে মৃত্যু হলো এক কিশোরের। ওই পানি থেকে তার মস্তিষ্কে সংক্রমণ হয়।

সংক্রমণের জেরেই মৃত্যু হয়েছে কিশোরের।  

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কিশোরের মৃত্যু হয়েছে ব্রেন ইটিং তথা মগজ খেকো অ্যামিবার কারণে।

রাজ্যটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ জানিয়েছে, দূষিত পানি থেকে ওই অ্যামিবার সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বিরল অ্যামিবায়োটিক মেনিনগোয়েনসেফালিটিস রোগে আক্রান্ত হয়েছিল ১৫ বছরের ওই কিশোর। সে ছিল আলেপ্পি জেলার বাসিন্দা।
 
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তরফে সাধারণ মানুষকে পানি নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। গোসলের জন্য দূষিত পানিতে যাতে কেউ না নামে, তার জোর প্রচার চালানো হচ্ছে।

এরআগে এই অ্যামিবার কারণে কেরালায় এখন পর্যন্ত ৫ জনের শরীরে এই সংক্রমণ বাসা বেঁধেছিল। প্রত্যেকেরই মৃত্যু হয়েছে। বিজ্ঞানীদের মতে, এই রোগে মৃত্যুর হার শতভাগ। এখন পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত কাউকেই বাঁচানো যায়নি।
 
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যামিবা হলো থার্মোফিলিক অর্থাৎ উষ্ণ প্রস্রবণ বা গরম পানিতে এই অণুজীবকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। ১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট  (৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় ভলো থাকে এই অ্যামিবা। সে জন্য হট ওয়াটার লেক বা উষ্ণ প্রস্রবণগুলোয় এদের দেখা মেলে অনেক বেশি।  

এছাড়া শিল্পাঞ্চলের কাছাকাছি এলাকায়, দূষিত পানিতেও দেখা মেলে এদের। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার না করা সুইমিং পুল বা জীবানুমুক্ত (ক্লোরিনেটেড) নয় এমন বদ্ধ পানিতে দ্রুত ছড়ায় অ্যামিবা। যাকে চিকিৎসকের ভাষায় বলা হচ্ছে, ব্রেন ইটিং অ্যামিবা। এর সংক্রমণ হলে মানুষের স্নায়ুকোষ আগে অকেজো হয়ে যায়।

নাক দিয়ে শরীরে ভেতরে ঢুকে বাসাবাঁধে মস্তিষ্কের কোষে। এই অ্যামিবার কারণে যে রোগ হয় তাকে বলা হয় নাইগ্লেরিয়াসিস বা প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোএনসেফেলাইটিস (পিএম)। এর উপসর্গ জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, পেশির খিঁচুনি। দ্রুত অ্যান্টি ফাঙ্গাল ড্রাগ না দিলে মস্তিষ্কের কোষ ছিঁড়তে থাকে এই অণুজীবটি।

২০১৬ সালে কেরালার আলেপ্পি জেলাতেই এই রোগের প্রথম সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছিল। তারপর ২০১৯ এবং ২০২০ সালে মালাপ্পুরম জেলায় দুজন সংক্রমিত হয়েছিলেন। ২০২০ এবং ২০২২ সালে যথাক্রমে কোঝিকোড় এবং ত্রিশূর থেকে আরও দুটি মৃত্যুর খবর মেলে। ষষ্ঠ মৃত্যুর খবর এলো আবার আলেপ্পি জেলা থেকেই।

আমেরিকায় প্রথম এমন অ্যামিবার সংক্রমণে মৃত্যুর খবর শোনা গিয়েছিল। এখন ভারতেও থাবা বসিয়েছে ভয়ঙ্কর অ্যামিবা ঘটিত রোগ। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যামিবা হলো এককোষী প্রাণী। খালি চোখে দেখা যায় না এই জীবটিকে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০২৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।