ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

সম্প্রীতি ত্রিপুরায়: হিন্দু-মুসলিম চাঁদা তুলে পূজার আয়োজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
সম্প্রীতি ত্রিপুরায়: হিন্দু-মুসলিম চাঁদা তুলে পূজার আয়োজন

আগরতলা (ত্রিপুরা): ত্রিপুরার আগরতলার বিটারবন এলাকার শান্তপ্রিয় জনপদ মুল্লাপাড়া। এই পাড়ায় হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস।

তারা একে-অপরের সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন। ভাগাভাগি করেন আনন্দ আয়োজন। এরই অংশ হিসেবে সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের ঈদ আর হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা—যেকোনো উৎসবে শামিল হন সবাই।

বরাবরের মতো এবারও সেখানে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন করেছে স্থানীয় তুলার মাঠ সার্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। আর এই কমিটিতে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। তারা সবাই মিলে পূজামণ্ডপ তৈরি থেকে শুরু করে আয়োজন, সব কিছু কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে করছেন।

পূজা কমিটির সদস্য স্বপন দাস বাংলানিউজকে জানান, এলাকায় বসবাসকারী সবাই একসঙ্গে মিলেমিশে থাকেন। ২০০৩ সাল থেকে এখানে এই পূজার আয়োজন করা হচ্ছে। উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে চাঁদা তোলা থেকে শুরু করে মণ্ডপ তৈরিসহ যাবতীয় কাজ একসঙ্গে করে থাকেন। সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ যাতে ভালো থাকে এই প্রার্থনা দেবীর কাছে করা হয়।

তিনি আরও বলেন, শুধু দুর্গাপূজাই নয়, এই এলাকায় রোজা, ঈদ, মাহফিল, শ্যামা পূজা, গণেশ পূজাসহ সবকিছু একইসঙ্গে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা আনন্দ ভাগ করে নেন এসব উৎসবে।

পূজা কমিটির আরেক সদস্য রাজু মিয়া বলেন, এই পাড়ার বেশিরভাগ বাসিন্দাই গরিব। কিন্তু দুর্গাপূজা আয়োজনের জন্য কেউ কোনো কার্পণ্য করেন না। সবাই মিলে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চাঁদা তোলা, শ্রম ও সময় দিয়ে পূজার আয়োজন করে থাকেন। শুধু দুর্গাপূজাই নয়, অন্যান্য সব ধর্মের অনুষ্ঠানে সবাই মিলে নেমে পড়েন উৎসব সফল করতে।  

এই পূজা থেকে তিনি ভারতসহ বিশ্ববাসীর উদ্দেশে বার্তা দেন, যে যেখানেই রয়েছেন, সবাই যেন ঐক্যবদ্ধভাবে মিলিত হয়ে থাকেন এবং একসঙ্গে আনন্দ-উৎসব উপভোগ করেন। জীবনে আনন্দই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাওনা। তাই সবার আনন্দে যেন সবাই শামিল হন।

জামাল মিয়া নামে কমিটির আরেক সদস্য বাংলানিউজকে বলেন, গত ২১ বছর ধরে যৌথভাবে এখানে দুর্গাপূজা এবং মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। এই দুটি অনুষ্ঠানেই সব ধর্মের মানুষ সমানভাবে শামিল হন। এখানে কোনো জাত-ধর্মের বিচার নেই। সবাই একজোট হয়ে সব কাজ করে থাকেন। আগামী দিনেও যেন এইভাবে সবাই মিলে আনন্দের সঙ্গে সব উৎসবে শামিল হতে পারেন এই প্রার্থনা করি।  

পাশাপাশি তিনি সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখানে সবাই প্রায় গরিব। আর্থিক ক্ষমতা খুবই সীমিত, নিজেদের চেষ্টায় এই পূজার আয়োজন করা হয়ে থাকে। এসব সম্প্রীতির আয়োজনে সরকারি অনুদান পেলে আরও ভালোভাবে আয়োজন করা যেত। তাই আগামী দিনে সরকার যেন এদিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২৩
এসসিএন/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।