পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস কর্তৃক মর্যাদাপূর্ণ কালাক্রান্তি গভর্নর এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন ভারতের বিশিষ্ট কূটনীতিক হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা।
দার্জিলিংয়ের রাজভবনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফোরামের (ইউএসআইএসপিএফ) সহযোগিতায় আয়োজিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টের এই গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানটি উন্মোচিত হয়।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে তার বিশিষ্ট কর্মজীবনের জন্য তিনি সুপরিচিত। অতি সম্প্রতি ভারতের অনুষ্ঠিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেই সাথে দার্জিলিং ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
অ্যাওয়ার্ড উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শিল্পের কর্ণধারদের সাথে গঠনমূলক আলোচনা এবং পশ্চিমবঙ্গ ও সেখানকার মানুষের উন্নয়নের জন্য অনেক প্রকল্প আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফোরাম (ইউএসআইএসপিএফ) এর একটি বিশিষ্ট প্রতিনিধি দল, নেতৃস্থানীয় মার্কিন করপোরেশনের সিইও এবং শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা তাদের দার্জিলিংয়ে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানান।
অনুষ্ঠানে প্রতিনিধি দলের সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পাভেক ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মধ্যে সুষম অংশীদারিত্ব পুনরুজ্জীবিত করার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি কৃষি, দক্ষতা উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তি, আতিথেয়তা এবং স্বাস্থ্যসেবার মতো খাতে বিভিন্ন বিনিয়োগের সুযোগ অন্বেষণের ওপর জোর দেন, যা ভারতের উত্তরবঙ্গ এবং দার্জিলিং অঞ্চলে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন আনবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস কর্তৃক হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাকে কালাক্রান্তি গভর্নরের শ্রেষ্ঠত্ব পুরস্কার প্রদান। এ সময় হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি দার্জিলিংয়ের জনগণকে উৎসর্গ করেন এবং এর মাধ্যমে তার নিজের শহরের প্রতি অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি পুরস্কারের এক লাখ রুপি দার্জিলিংয়ের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সহায়তায় ব্যয় করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
একটি প্রেস বার্তায় হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা প্রথম কালাক্রান্তি গভর্নর এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডের জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন। দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কূটনৈতিক কর্মজীবনে ব্যস্ত রয়েছেন শ্রিংলা। তিনি তার এই অর্জিত অ্যাওয়ার্ড নিজ শহর দার্জিলিংয়ের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন।
একই সঙ্গে শ্রিংলা ইউএসআইএসপিএফকে দার্জিলিং-এ পর্যটন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়ন-সহ বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ এবং অর্থনৈতিক সুযোগ অন্বেষণের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা এই অঞ্চলের জন্য উল্লেখযোগ্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি করবে।
শ্রিংলা তার নিজের শহর দার্জিলিং এবং পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। তিনি বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন, যারা বিশ্বজুড়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে, তাদের দার্জিলিংয়ে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য তার ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। দার্জিলিংয়ের যুব সমাজের উন্নয়নে একটি বড় কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ শিবিরেরও পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
শ্রিংলা এবং ইউএসআইএসপিএফ দার্জিলিংয়ের যুবকদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রতি জোর দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০২৩
এসআইএস