ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

বিএসএফের সঙ্গে সীমান্ত পাহারায় মৌমাছি!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৯, ২০২৩
বিএসএফের সঙ্গে সীমান্ত পাহারায় মৌমাছি!

কলকাতা: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অপরাধ ও চোরাচালান ঠেকাতে মৌমাছিকে পাহারাদার হিসেবে ব্যবহার করবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে মৌমাছির চাক বসাচ্ছে বিএসএফ।

এতে যেমন সীমান্ত সুরক্ষার কাজ হবে, তেমনি স্থানীয়দের জীবিকার সংস্থান হবে। প্রাথমিকভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলায় বিএসএফের ৩২ ব্যাটেলিয়ান এই উদ্যোগ নিয়েছে।

ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মানুষের মৃত্যুর সংবাদ প্রায়ই পাওয়া যায়। এই নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকার ও সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ ও ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় বিএসএফকে। ধারণা করা হচ্ছে, এমন বদনাম থেকে রেহাই পেতে বিকল্প পথ হিসেবে এ ধরনের পরিকল্পনা বেছে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষামূলকভাবে গড়ে তোলা হতে পারে মৌমাছিদের বাহিনী।

ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে চার হাজার ৯৬ কিলোমিটারের সীমানা রয়েছে। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে ২,২১৭ কিলোমিটার। বিএসএফের এই প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করতে হাত বাড়িয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশনায় ‘ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রামের’ আওতায় সীমান্তবর্তী এলাকায় মৌমাছি পালন এবং মধুর গুণগত মান পরীক্ষাকে একটি পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে নিয়েছে ভারত সরকার। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোর অর্থনৈতিক বিকাশ ও সার্বিক উন্নয়নে এই প্রকল্পকে কৌশলগতভাবে ব্যবহারের সুযোগ হিসেবে দেখছে বিএসএফ।



উদ্ভাবনী এই প্রকল্পের আওতায় সীমান্তের কাঁটাতারের কাছে কৌশলগতভাবে মৌমাছির বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। বাক্সগুলোর কাছাকাছি স্থাপন করা হয়েছে, মৌমাছি বান্ধব ফল ও ফুলের গাছ। এতে একদিকে মৌমাছিদের আকর্ষণের অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে অন্যদিকে, বাক্সগুলো পাবে প্রাকৃতিক ছায়া। কাঁটাতারের পাশে এমন উদ্যোগে প্রাকৃতিকভাবে সীমান্তে হুমকি হবে অপরাধ ও  চোরাচালানকারীদের জন্য। অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে মৌমাছির ঝাকের আক্রমণে যে কেউ গুরুতর আহত হতে পারে।

এক প্রেস বিবৃতিতে বিএসএফ জানিয়েছে, এতে স্থানীয় কৃষকরা নিবিড়ভাবে নিযুক্ত রয়েছে। আর সারা বছর মৌমাছির জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করবে ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রাম। গ্রামবাসীদের মধ্যে সরিষা চাষ ও বিভিন্ন ফুল গাছের চারা রোপণে উৎসাহিত করা হয়েছে, যা মৌমাছির খাদ্য সরবরাহে আরও সহায়তা করবে।

বিএসএফের ৩২তম ব্যাটালিয়নের কমান্ড্যান্ট সুজিত কুমার জানিয়েছেন, কেন্দ্র সরকারের ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রামের (ভিভিপি) অধীনে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মৌমাছিরা যাতে পর্যাপ্ত ফুল পায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখার পাশাপাশি ওষুধি গাছও রোপণ করা হবে।

তবে এখন দেখার সীমান্তে চোরাচালান রুখতে বিএসএফকে কতটা সহায়তা দিতে পারে মৌমাছির দল! কারণ, মাছি তো আর শুধু অপরাধ জগতের মানুষ চিনবে না। তাদের চাকে ঢিল পড়লে সবাই শক্র!

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২৩
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।