ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

অনুপ্রবেশে সায় দিচ্ছেন মমতা, সিএএ হবেই: অমিত শাহ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২৩
অনুপ্রবেশে সায় দিচ্ছেন মমতা, সিএএ হবেই: অমিত শাহ

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভারতে লোকসভা ভোটের ঘণ্টা বাজিয়ে গেলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ২০২৪ সালে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী করার জন্য ফের একবার আহ্বান জানালেন তিনি।

সঙ্গে মমতা সরকারের দুর্নীতি, সীমান্ত পার হয়ে অনুপ্রবেশ এবং 'সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন' (সিএএ) চালু হবেই, কেউ ঠেকাতে পারবে না, এমন চ্যালেঞ্জও জানিয়ে গেলেন অমিত শাহ।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) কলকাতার এসপ্ল্যানেড অঞ্চলে বিজেপির জনসভা থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতা করে একপ্রকার লোকসভা ভোটের প্রচার করে গেলেন অমিত শাহ। সমাবেশে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে মমতার সরকারকে নিশানা করে অমিত শাহ বলেন, অনুপ্রবেশ ইস্যু এ রাজ্যে চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। আসামেও এই সমস্যা ছিল। কিন্তু সেখানকার মানুষ বিজেপি সরকারকে ক্ষমতায় আনার পর সেখানে অনুপ্রবেশ কমে গেছে। এমনকি একটা পাখি পর্যন্ত ঢুকতে পারে না।

অথচ পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে, সীমান্ত পার হয়ে আসা অনুপ্রবেশকারীদের কিভাবে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড করে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের পুলিশ সব জেনেও একেবারে চুপ। আপনারাই বলুন যে রাজ্যে এত অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটে সেখানে কখনো উন্নয়ন হতে পারে? আর এই কারণেই মমতা দিদি সিএএর বিরোধিতা করছে। কিন্তু, আমি এই সভা থেকে পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, মমতা দিদি সিএএ দেশের একটা আইন। এটাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না। আমরা এই আইনকে কার্যকর করেই ছাড়বো।

অমিত শাহ বলেন, একটা সময় অনুপ্রবেশ ইস্যুতে এই মমতা দিদি সংসদে সরব হয়েছিলেন। অধিবেশন চলতে দেন়নি। অথচ আজ এই অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ভোটার কার্ড আধার কার্ড তৈরি করে দিচ্ছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, যারা ওপার থেকে (বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান) থেকে এসেছে। তাদের সবার এই দেশের ওপর অধিকার আছে। ঠিক যতটা অধিকার আমার রয়েছে। তাদের অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত করতে পারবে না।

এদিনের জনসভা থেকে রাজনৈতিক সহিংসতা, দুর্নীতি, সিন্ডিকেট, তোষণের রাজনীতিসহ একাধিক ইস্যুতেও তৃণমূলকে নিশানা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, পরিবর্তনের কথা বলে কমিনিউনিস্ট হটিয়ে এরাজ্যে তৃণমূল সরকার এসেছিল। কিন্তু আপনাদের জিজ্ঞাসা করতে চাই, বাংলায় কি পরিবর্তন হয়েছে? তোষণ নীতি কি বন্ধ হয়েছে? দুর্নীতি কি বন্ধ করা গেছে?  

মোদীজি কয়েক কোটি রুপি বাংলার উন্নয়নের জন্য পাঠায়, কিন্তু তৃণমূল সরকার বাংলার গরীব মানুষদের কাছে সেই অর্থ পৌঁছে দেয় না। গোটা দেশে নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে এই পশ্চিমবঙ্গে। গোটা দেশে গরীব কম হচ্ছে, কিন্তু বাংলা থেকে দারিদ্র্য ঘোচার কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। যে বাংলা একসময় সাহিত্য, সংস্কৃতি, মণিষী, স্বাধীনতা আন্দোলনকারী, উদ্যোগপতি- সব ক্ষেত্রে ভারতকে নেতৃত্ব দিত, সেই বাংলা এখন সবচেয়ে পেছনে। দিদির সরকারই এই বাংলাকে বরবাদ করে দিয়েছে।

এদিন তার ভাষণে বাংলার শাসক দলের ধৃত মন্ত্রী ও নেতাদের নাম উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে শাহ বলেছেন, আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করছি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলকে পার্টি থেকে সাসপেন্ড করে দেখান। দিদি এখন রোজ দুর্গানাম জপছেন। যাতে ভাইপোর নাম না আসে।  

দুর্নীতি নিয়ে শাহ আরও বলেন, আমি গুজরাটে রাজনীতি করেছি। কখনও কোনো নেতার বাড়ি থেকে এত বান্ডিল বান্ডিল টাকা বেরোতে দেখিনি, যা দেখাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ।

এদিনের জনসভা থেকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীকে ফের একবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি আগামী ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনেও দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজেপিকে জয়ী করে রাজ্যে বিজেপির সরকার গঠনের ডাক দিয়ে যান অমিত শাহ। উপস্থিত বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, অনুপ্রবেশ, দুর্নীতি রুখতে ও বাংলার উন্নয়ন করতে পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতা সরকারকে উৎখাত করুন এবং এখানে বিজেপি সরকারকে নিয়ে আসুন। কারণ আমরা এমন সরকার চাই যে সরকার উন্নয়ন করবে। ২০২৪ সালে মোদীজিকে ফের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করুন।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২৩
ভিএস/নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।