কলকাতা: কলকাতায় জেঁকে বসেছে শীত। সেই শীতের আমেজ নিতে বছর শেষে শহরে ভিড় বাড়াচ্ছেন বাংলাদেশিরা।
ওয়েল ফেয়ার সোসাইটি চাইছে, বাংলাদেশিদের সহযোগিতা করতে একযোগে কাজ করুক, কলকাতার ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাব।
সম্প্রতি মারক্যুইস স্ট্রিট এলাকায় ব্যাগ ছিনতাইয়ের ফলে মোবাইল ফোন, পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা সামনে এসেছিল। যার সত্যতা স্বীকার করেছিল কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন। এসব তথ্য তুলে ধরেছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভারতীয় প্রতিনিধিরা। যাদের দ্বারা তৈরি ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাব।
মূলত দেখা গেছে, বাংলাদেশিরা বিপদে পড়লে তাদের জন্য দুটি জায়গা খোলা থাকে। এক. স্থানীয় প্রশাসন, দুই. বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস। এ দুই প্রতিষ্ঠান সরকারি বলে কিছু বাধ্যবাধকতা থাকে। কিন্তু তা থাকে না ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাবের।
এ বিষয়ে প্রেসক্লাবের কনভেনর ভাস্কর সরদার বলেন, সব সময়ই সার্বিকভাবে বাংলাদেশিদের সহযোগিতা করে থাকে আমাদের প্রেসক্লাব। যেহেতু মিনি বাংলাদেশ বলে পরিচিতি মারক্যুইস স্ট্রিটের সঙ্গে যুক্ত হলাম, তাই দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। এ পরিস্থিতে বাংলাদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে মারক্যুইস স্ট্রিট-ফ্রিস্কুল স্ট্রিট ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সঙ্গে একযোগে কাজ করবে কলকাতার ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাব।
এতে ভারতে আশা বাংলাদেশিদের দুই দিক দিয়েই সুবিধা হলো। একদিকে যেমন গোটা মারক্যুইস স্ট্রিট অঞ্চলে ওয়েলফেয়ার সোসাইটির তরফে তাদের হেল্প ডেক্সের নম্বর দেওয়া হয়েছে। যে নম্বরে যোগাযোগ করলেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে সোসাইটি। একই ভাবে ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাবের ওয়েবসাইটে কীভাবে বাংলাদেশিদের সুবিধা দেওয়া হবে, তার সমস্ত তথ্য এবং ফোন নম্বর রয়েছে সেই সাইটে।
অপরদিকে বড়দিন এবং সামনেই নতুন বছরকে বরণ করে নেবেন কলকাতাবাসী। সেই উপলক্ষে সেজে উঠেছে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল। সেভাবেই বাংলাদেশিদের ওয়েলকাম জানাতে আলোয় সেজে উঠেছে মিনি বাংলাদেশ বলে পরিচিতি মারক্যুইস স্ট্রিট।
এ উপলক্ষে রোববার(২৪ ডিসেম্বর) ওয়েল ফেয়ার তরফে মারক্যুইস স্ট্রিট এলাকায় এক অনুষ্ঠান করেছে। সেখানেই যুক্ত করা হলো ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাবকে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ওয়েল ফেয়ারের সদস্য মনোতোষ সরকার, মনোতোষ সাহা, কামরুদ্দিন মালিক, শ্যামলী যাত্রী পরিবহনের কর্ণধার অবনী ঘোষ, কলকাতা পুরসভার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর প্রতিনিধি সন্দীপন সাহাসহ অনেকে। একই ভাবে ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাবের তরফে ছিলেন সভাপতি কিংশুক চক্রবর্তী, সম্পাদক শুভজিৎ পুততুণ্ড, কনভেনর ভাস্কর সরদার, বিশ্বজিত দাস, বিক্রম লাহা, ধৃমল দত্তসহ অনেকে।
ওয়েল ফেয়ারের সদস্য মনোতোষ সাহা বলেন, আমরা বাংলাদেশি পর্যটকদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। তাই তাদের কথা মাথায় রেখেই এ বছরই প্রথম রঙিন আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে এলাকা। পাশাপাশি পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ৩২টি সিসিটিভি লাগানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাবকে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে পেয়ে আমরা খুব গর্বিত। ভবিষ্যতে এ ক্লাবের কাছ থেকে আরও বেশি করে সহযোগিতা আশা করেন মনোতোষ সাহা।
ইন্দো-বাংলা প্রেসক্লাবের মুখপাত্র দীপক দেবনাথ বলছেন, বাংলাদেশি পর্যটকরা আমাদের কাছে অতিথির মতো। তাই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সবার। তারা কলকাতায় এলেই এ নিউমার্কেটকে বেছে নেন, তার কারণ, রাত দুটোতেও তারা স্বাচ্ছন্দ্যে নিশ্চিন্তে ঘোরাফেরা করতে পারেন।
স্থানীয় কাউন্সিলর সন্দীপন সাহা জানান, বাংলাদেশি পর্যটকরা কলকাতায় এলে নিউমার্কেটকে বেছে নেন শপিংয়ের জন্য। কারণ এখানে তারা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, সুরক্ষিত বোধ করেন। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের নৈতিক দ্বায়িত্ব তাদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া এবং দশকের পর দর্শকদের সেই দায়িত্বই পালন করে আসছে এখানকার স্থানীয় মানুষ, ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৩
ভিএস/এসআই