কলকাতা: চরিত্র পাল্টে আবারও ভারতজুড়ে করোনাভাইরাস চোখ রাঙাতে শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত করোনা ভয়াবহ আকার না নিলেও সংক্রমণ বাড়ছে।
সম্প্রতি করোনার নতুন প্রজাতির সংক্রমে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। এবার করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলো দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিবিদ তথা তামিল অভিনেতা বিজয়কান্তর। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
দিনকয়েক ধরেই অসুস্থতার কারণে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বিজয়কান্তকে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা বাড়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টেও রাখার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) মৃত্যু হয় এ রাজনীতিবিদ-অভিনেতার।
তামিলনাড়ুর ‘জাতীয় প্রগতিশীল দ্রাবিড় ফেডারেশন (ডিএমডিকে)’ রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা হয় এই অভিনেতার হাতেই। ওই রাজ্যের ডিএমকে এবং এডিএমকে’র মতো দলগুলোকে চাপে ফেলতে নিজেই নতুন দল তৈরি করেন বিজয়কান্ত।
২০০৫ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন তিনি। রাজনীতিক হিসেবে খুবই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন বিজয়কান্ত। অনুগামীদের কাছে তিনি ‘ক্যাপ্টেন’ নামে পরিচিত। অভিনয় জীবন থেকে রাজনীতিতে এসে সাফল্য পেলেও সেই ‘ক্যাপ্টেন’ হেরে গেলেন করোনার কাছে।
অপরদিকে জানা যায়, এবার দিল্লিতেও ঢুকে পড়ল কোভিডের নয়া উপরূপ জেএন.১। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ জানিয়েছেন, এক ব্যক্তির দেহে কোভিডের এই নয়া উপরূপের হদিস মিলেছে। তবে রাজধানীবাসীকে এই উপরূপ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
এর আগে গোয়া, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, কেরালা, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানা এবং গুজরাটে আগেই পাওয়া গিয়েছে কোভিডের নতুন উপরূপ। এবার সেই তালিকায় জুড়ল দিল্লির নাম।
এখন পর্যন্ত ভারতে ১০৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন জেএন.১ উপরূপে। তারমধ্যে ৩৬ জন গুজরাট, ৩৪ জন কর্নাটক, ১৪ জন গোয়া, ৯ জন মহারাষ্ট্র, কেরলে ৬ জন, ৪ রাজস্থানে, তামিলনাড়ুতে ৪ এবং তেলেঙ্গানায় দু’জন।
জেএন.১ শনাক্ত হওয়া বেশিরভাগ রোগী হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এখনও পর্যন্ত তাদের তেমন গুরুতর কোনো শারীরিক সমস্যা দেখা যায়নি।
তবে কোভিডের নতুন প্রজাতি জেএন.১-এর সন্ধান কলকাতায় এখনও মেলেনি বলেই পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানিয়েছে।
কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর স্বীকার করেছে এই মৌসুমে বাড়ছে বিভিন্ন হাসপাতালে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। বাড়ছে আইসিইউ-তে রোগীর সংখ্যা।
এরইমধ্যে বড়দিনে লাখ লাখ মানুষের জমায়েতের রেকর্ড গড়েছে কলকাতা। সামনেই বর্ষবরণ। যাকে ঘিরে ফের উন্মাদনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, এখনও জেএন.১-এর থাবা এ রাজ্যে বসেনি বলেই কি এতটা অসতর্ক থাকতে পারছেন সাধারণ মানুষ? যা নিয়ে ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
করোনার নতুন এই উপরূপটির খোঁজ মিলেছিল গত সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকায়। তারপর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জেএন.১-এর সন্ধান মিলেছে। ইউরোপের দেশগুলিতে উদ্বেগের মাঝে চিনেও আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে হু হু করে। নভেম্বরের শেষের দিকে ভারতের কেরল রাজ্যে জেএন.১-সহ প্রথম করোনা রোগীর সন্ধান মেলে। তারপর ছড়িয়ে পড়ছে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২৩
ভিএস/এসএএইচ