ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গে নেই ইন্ডিয়া জোট, রাহুলের পাল্টা যাত্রা মমতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গে নেই ইন্ডিয়া জোট, রাহুলের পাল্টা যাত্রা মমতার

কলকাতা: রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বিহারে পথে। বাংলায় রাহুলের যাত্রা ঘিরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

তবে কংগ্রেস নেতাকে সোমবার (২৯ জনিুয়ারি) সরকারি জায়গায় থাকা-খাওয়ায় অনুমতি দেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের প্রশাসন। অনুমতি না দেওয়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তার ওপর রাহুলের ন্যায় যাত্রা বাংলায় যে পথ দিয়ে গেছে, সেই পথেই মঙ্গলবার মিছিল করতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, বাংলায় রাহুলকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ নেত্রী। তাই ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার পাল্টা যাত্রা করছেন মমতা।

মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর, রায়গঞ্জ ও চোপড়ায় তিনটি রাজনৈতিক মিছিল করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পথ দিয়েই সোমবার রাহুল গান্ধীর যাত্রা গেছে। শুধু তাই নয়, বুধবার মালদহ জেলায় একটি সভাও করবেন মমতা। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, ওই দিনই ফিরতি পথে বিহার হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকবেন রাহুল গান্ধী। মালদহ জেলার সুজাপুর দিয়ে পুনরায় রাজ্যে ঢুকবে রাহুলের যাত্রা। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, কংগ্রেস যে কর্মসূচি নিয়েছে তাকে এবার সরাসরি টক্কর দেওয়ার পথেই হাঁটছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বার্তাই যেন দিতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী।

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া (ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়ান্স) জোট নিয়ে কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত সুর নরম করে রেখেছে। বারবার মমতাকে ভারত জোড়ো যাত্রায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। জোট নিয়ে আলোচনার পথ খোলা রাখা হয়েছে কংগ্রেসের তরফে, সেই বার্তাও দেওয়া হয়েছে রাহুলের পক্ষ থেকে। কিন্তু বরফ গলেনি। নেত্রী তাই রাহুলের যাত্রায় সামিলও হননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট দাবি, বাংলায় কোনো জোট হবে না। আসন্ন সংসদ ভোটে তৃণমূল একা লড়বে। আর তাই কংগ্রেসের যাত্রার পথে মিছিল-সভা করে সেই বার্তাই আরও পরিষ্কারভাবে দিতে চাইছেন মমতা।

প্রসঙ্গত, সোমবার সরকারি জায়গায় রাহুল গান্ধীর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থায় অনুমতি দেয়নি মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। জানা গেছে, মালদহের একটি গেস্ট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের অনুমতি চাওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের তরফে। কিন্তু সেই অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে মুর্শিদাবাদ জেলার বহরমপুর স্টেডিয়ামে রাহুল গান্ধীর রাত্রিবাসের অনুমতিও দেয়নি প্রশাসন।

এর আগে রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাজ্যটির উত্তরবঙ্গে পা রেখেছেন রাহুল গান্ধী। জলপাইগুড়ি হয়ে শিলিগুড়িতে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন তার ন্যায় যাত্রাকে। শিলিগুড়ির রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাংলার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন রাহুল গান্ধী। যদিও তার মুখে একবারও শোনা যায়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। স্বাধীনতার ইতিহাস টেনে তিনি বলেছিলেন, ব্রিটিশ আমল থেকে বাঙালি দেশকে পথ দেখিয়েছে। এখনও বাংলার মানুষকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে।

রাহুল গান্ধী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল, নেতাজি, বিবেকানন্দের মতো যুগপুরুষরা দেশকে পথ দেখিয়েছেন। এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় যে, বাঙালিদের মধ্যে দেশকে পথ দেখানো ক্ষমতা রয়েছে। এই দায়িত্ব যদি আপনারা না নেন, তাহলে দেশ আপনাদের ক্ষমা করবে না। এটাই আপনারদের দায়িত্ব।

বাংলা ও বাঙালি নিয়ে রাহুল এত কথা বললেও একবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নেননি।

গত ১৪ জানুয়ারি মণিপুর থেকে ভারত জোড়ো যাত্রা শুরু করার পর নাগাল্যান্ড হয়ে আসামে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন রাহুল। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশের পরও এই যাত্রাকে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের তরফে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।