ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

চোরাপথে ইলিশ আসায় বাংলাদেশ মুনাফা পাচ্ছে না, ভারতীয় মাছ ব্যবসায়ী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
চোরাপথে ইলিশ আসায় বাংলাদেশ মুনাফা পাচ্ছে না, ভারতীয় মাছ ব্যবসায়ী

কলকাতা: ভারতের ফিশ ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেছেন, ইলিশের মৌসুমে চোরাপথে বা অবৈধভাবে কমবেশি পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ কার্টন ইলিশ আসছে। এই ইলিশ থেকে ডলার আয় করতে পারে না বাংলাদেশ।

আমরাও কোনো অর্থনৈতিক লাভ করতে পারি না। ইলিশের এই অবৈধ অর্থ পাচ্ছে দুই দেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ফলে বাংলাদেশ ইলিশ দেয় না, এটা সঠিক তথ্য নয়। তবে চোরাপথে ইলিশ আসা বন্ধ হলে দু’পারেই ইলিশের দাম কমবে এবং দুই দেশের সরকারি কোষাগারে অর্থ ঢুকবে। এরজন্য বাড়তি সজাগ হতে হবে বাংলাদেশকে।

তিনি বলেছেন, ভারতে ইলিশ আসার ক্ষেত্রে বছরে একবার সরকারিভাবে অনুমোদন মেলে। তবে ইলিশ ছাড়াও ভারতে আসে পারশে, টেংরা, ভেটকি, পাবদার মতো প্রচুর মাছ। একইভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে যায় আইড়, বোয়াল, বড় রুই এবং কাতলা মাছ। এইসব মাছের মধ্য দিয়ে লুকিয়ে ইলিশ আসছে বাংলাদেশ থেকে। ফলে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করেও লাভের মুখ দেখছে না বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ইলিশ নিয়ে কি জটিলতা তৈরি করেছে, এমন প্রশ্নের জবাবে এই মাছ ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে কী করে আঙুল তুলছেন? ইলিশ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে হাসিনার আমলে। ২০১২ সাল থেকে ভারতে ইলিশ নিষিদ্ধ করেছে হাসিনার সরকার।

রাত পোহালেই ভারতের বাজারে ঢুকবে বাংলাদেশের ইলিশ। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালেই হাওড়ার পাইকারি বাজারে পৌঁছে যাবে বাংলাদেশের ইলিশ। শনিবার সকাল থেকে কলকাতার খুচরা বাজারেও পাওয়া যাবে সেইসব ইলিশ। তবে এবার ইলিশ আমদানি নিয়ে কিছুটা হতাশ সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ।

তিনি বলেন, চলতি বছর এক হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করতে পারলেই নিজেদের ভাগ্যবান মনে করব। বাংলাদেশ এবার দুই হাজার ৪২০ মেট্রিক টন ইলিশের অনুমতি দিয়েছে। এই অনুমতির মেয়াদ কার্যকর থাকবে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত। ফলে এবারও অনুমোদন দেওয়ার সমসংখ্যক ইলিশ ঢুকবে না বলেই মনে করছেন তিনি।

পরিসংখ্যান তুলে ধরে এই ব্যবসায়ী বলেন, ২০১৯ সালে প্রথম পূজা মৌসুমে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল বাংলাদেশ। সে বছর ৫০০ মেট্রিক টন আনতে পেরেছি। ২০২০ সালে তা বেড়ে দাড়ায় ১৮৫০ মেট্রিক টন। সেবার ১৮৫০ মেট্রিক টন ভারতে এসেছিল। ২০২১ সালে অনুমতি ছিল ৪ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন, তবে আমদানি হয়েছিল ১২০০ মেট্রিক টন। ২০২২ সালে ২৯০০ মেট্রিক টন ইলিশের অনুমতি থাকলেও ভারতে এসেছিল ১৩০০ মেট্রিক টন। গত বছর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন, ভারতে এসেছে ৫৮৭ মেট্রিক টন। চলতি বছরে ২৪২০ টন অনুমতি থাকলেও তার মধ্যে হাজার টনও যদি আনতে পারি তাহলেও অনেক।

অনুমতি থাকলেও কম ইলিশ আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব সময় বাংলাদেশে চাহিদা অনুয়ায়ী ইলিশ ওঠে না। চলতি বছর যেমন ১৫-২০ দিন আগেও যে পরিমাণে ইলিশ বাংলাদেশে উঠছিল, তা এখন অনেকটাই কমে গিয়েছে। যে কারণে রপ্তানি অনুমোদনও কমে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।