ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

দুর্গোৎসবের মধ্যেই ৭ চিকিৎসকের অনশন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১০, ২০২৪
দুর্গোৎসবের মধ্যেই ৭  চিকিৎসকের অনশন

কলকাতা: কলকাতার আর জি কর হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় এখনো ভারতজুড়ে আন্দোলন চলছে। এর মধ্যেই দুর্গাপূজায় শামিল হয়েছে শহরবাসী।

শহরে যখন একাংশ দুর্গোৎসব নিয়ে ব্যস্ত, তখন সাত জুনিয়র চিকিৎসক কলকাতার বুকে বিচার চেয়ে ১০ দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন।

গত শনিবার থেকে তারা অনশন শুরু করেন। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) শত ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। তবু কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলায় অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন এ সাতজন। মুখে তুলছেন না খাবারের এক অংশও। মণ্ডপের ঢাকের শব্দ পৌঁছাচ্ছে না তাদের কানে। তাদের সামনে খাবারও খাচ্ছেন না বাকি সহকর্মীরা। তবে সময় যত গড়াচ্ছে, ততই শরীরে দুর্বলতা জেঁকে ধরছে তাদের।  কেউ কেউ মাথা তুলতে পারছেন না।  

খাবার মুখে না তুললেও পানি পান করছেন অনশনকারীরা। তবে শুধুই পানি। অন্য কোনো তরল নয়। তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যতক্ষণ না রাজ্য সরকারের সাড়া পাচ্ছেন, যতক্ষণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভবুদ্ধির উদয় না হয়, ততক্ষণ পানি ছাড়া কিছুই মুখে তুলবেন না তারা। অনশনকারী প্রত্যেকের ওজন কমেছে। তাদের ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি ভেবে মঞ্চে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন সিনিয়র ডাক্তাররা। আগামীতে কি হবে জানা নেই, তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনশনকারীরা মনের জোর ধরে রেখেছেন।

কালের চাকা যেন ফিরে ফিরে আসে। ২০০৯ সালে এই স্থানে মমতা তখন বিরোধী নেত্রী। বাম শাসনের বিরুদ্ধে টানা ২১ দিন অনশনে বসেছিলেন। তৎকালীন বিরোধী মমতার দাবি ছিল, সিঙ্গুরে চাষের জমিতে হবে না টাটা গোষ্ঠীর গাড়ি কারখানা। ফিরিয়ে দিতে হবে চাষের জমি।  

মমতার সেই দাবিতে হার মেনেছিল বামেরা। বাংলা থেকে বিদায় নিয়েছিল টাটা। সেবার রতন টাটা বাংলায় তার শেষ ভাষণে বলেছিলেন, বাংলায় বন্ধ হচ্ছে, এই গাড়ি শিল্প পাড়ি দিচ্ছে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী মোদীর গুজরাটে। সেই রতন টাটা আজ না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন, বামেরা শূন্য, কিন্তু সেই সিঙ্গুরে জমিতে এখন আর ঘাস ছাড়া কিছু জন্মায় না।  

সেই স্থানেই বর্তমানে অনশন চালাচ্ছেন সাতজন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কবে টনক নড়ে সেটিই এখন দেখার বিষয়। পূজার মৌসুমে রাজ্যজুড়ে যখন এ রকম চিত্র ধরা পড়ছে, তখন আর জি কর কাণ্ডে নারী চিকিৎসকের পরিবারে শোকের ছায়া। মেয়ের হাত ধরে শুরু হয়েছিল দুর্গাপূজা। আজ সে নেই। তাই সেই স্মরণে মঞ্চ বানিয়ে একত্রিত হয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।  

মঞ্চের সামনে জ্বলছে একটি প্রদীপ। বিচারের দাবিতে সেই প্রদীপকে প্রণাম করছেন আত্মীয়-স্বজন থেকে পাড়া-প্রতিবেশী। মায়ের আর্তনাদ, আমার দুর্গা বিসর্জন হয়ে গেছে। আর তো কোনোদিন আমার বাড়িতে দুর্গাপূজা হবে না। তাই বিচারের দাবিতে আশার আলো জ্বালিয়ে পরিবার এক হয়েছি। এই দিনে গত বছরও বাড়িতে আত্মীয় স্বজনে ভর্তি ছিল। মেয়েই শুরু করেছিল দুর্গা পূজা।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ১০ অক্টোবর ২০২৪
ভিএস/আরএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।