কলকাতা: ভারতে চিকিৎসা নিতে আসা বাংলাদেশি রোগীদের বয়কট না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির চিকিৎসক সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএম)। এছাড়া সাম্প্রতি ঘটে যাওয়া অস্থিরতা পরিস্থিতির কারণে দুই দেশের ব্যবসায় যাতে কোনো ধরনের লোকসান না হয় সে বিষয়েও হুঁশিয়ারি করেছে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স।
বুধবার (৪ ডিসেস্বর) সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের আইএমএর সদস্য ও চিকিৎসক এন কাঞ্জিলাল এবং কৌশিক চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে তারা জানিয়েছেন, কোনোভাবেই ভারতে আসা বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ করা যাবে না। এছাড়া রোগীদের কোনোভাবেই হয়রানি করা যাবে না। বাংলাদেশি রোগীদের চিকিৎসা দিতেই হবে। তারা চিকিৎসকদের আরও মানবিক হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।
তারা আরও বলেছেন, চলমান অস্থিরতায় যেমন বাংলাদেশি রোগীরা সমস্যায় পড়েছেন, তেমনি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ভারতের মেডিকেল ট্যুরিজম। অচিরেই এই সমস্যা কেটে যাবে মনে করছে আইএমএ।
বাংলাদেশি রোগীদের জন্য দ্রুত হেল্পলাইন চালু করবেন বলেও জানিয়েছেন তারা। যে নাম্বারে রোগীরা ফোন দিলে চিকিৎসা সংক্রান্ত সব ধরনের সাহায্য পাবেন। তবে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দুই দেশকে কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত ও মধুর করতে এগিয়ে আসতে হবে বলেও তারা দাবি করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কলকাতার বেসরকারি জেএন রায় হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশের কোনো রোগীকে তারা চিকিৎসা দেবেন না। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক শুভ্রাংশু ভক্ত প্রকাশ্যে এ কথা বলেন। বাকি চিকিৎসকরা যেনও সাময়িক এ সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে চরম বিরোধিতা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী, তথা কলকাতা মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
তিনি বলেছিলেন, একজন চিকিৎসকের কাজ হলো রোগীকে সেবা দেওয়া এবং তাকে সুস্থ করে তোলা। চরম শত্রুর সাথে চিকিৎসকরা এই আচরণ করতে পারে না। কেউ অসুস্থ হলে তাকে সুস্থ করব না? চিকিৎসক বা চিকিৎসাকেন্দ্রের ধর্মই তো রোগীকে সুস্থ করে তোলা।
অপরদিকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে দুই দেশের ব্যবসাতেও প্রভাব পড়া উচিত নয় বলে মনে করেছে বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স।
ওই সংগঠনের সদস্য তথা ভারতের খেলানা বিভাগের সেক্রেটারি, অনির্বাণ গুপ্ত বলেছেন, চলমান ইস্যুতে দুই দেশের ব্যবসায় কোনো প্রভাব পড়বে না।
বুধবার তিনি আরও বলেছেন, সংগঠনের তরফ থেকে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। ভারত সরকার যেভাবে বলবে সেভাবেই আমাদের চলতে হবে। ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, দুই দেশে একটা সুষ্ঠু সম্পর্কে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। রাজনৈতিক উত্তাপ ব্যবসায় যেন না পড়ে। একটা সুষ্ঠু সম্পর্কের মধ্য দিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। দুই দেশেরই উচিত দুই দেশকেই সম্মান করা। আমি মনে করি, সবকিছু ভুলে আমাদের মধ্যে যে হৃদ্রতা ছিল, সেই সম্পর্কেই আগামীতে আরও মজবুত হবে।
উল্লেখ্য, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের কমার্শিয়াল ইস্যুতে রাজনীতি প্রবেশ করবে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বরর ০৪, ২০২৪
ভিএস/এএটি