ঢাকা, রবিবার, ৩০ চৈত্র ১৪৩১, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৬

ভারত

মুম্বাই হামলার ষড়যন্ত্রকারী তাহাউরকে প্রত্যর্পণ করল যুক্তরাষ্ট্র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৫
মুম্বাই হামলার ষড়যন্ত্রকারী তাহাউরকে প্রত্যর্পণ করল যুক্তরাষ্ট্র

কলকাতা: ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘লস্কর-ই-তৈয়বা’র হামলায় কেঁপে উঠেছিল ভারতের বাণিজ্য নগরী মুম্বাই। সে সময় সমুদ্রপথে মুম্বাইয়ে প্রবেশ করেছিল ১০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদী।

মুম্বাইয়ের তাজ হোটেল, হাসপাতাল, রেল স্টেশন, জিউস সেন্টারসহ বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালায় সন্ত্রাসবাদীরা। প্রায় ৬০ ঘণ্টার হামলায় মৃত্যু হয়েছিল ১৬৬ জনের। আহত হন প্রায় তিন শতাধিক মানুষ। ওই হামলার ঘটনায় পরে আদালতের নির্দেশে ফাঁসিও হয় আটক আজমল কাসভের।

এবার ২৬/১১ মুম্বাই হামলার ষড়যন্ত্রকারী তাহাউর হুসেন রানাকে (৬৪) হাতে পেল ভারত। হামলার ১৬ বছর পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যর্পণ করানো হলো পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক রানাকে।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রানাকে বহনকারী বিশেষ বিমান দিল্লির পালাম বিমানবন্দের অবতরণ করে। ওই একই বিমানে রানার সঙ্গে ছিল ভারতের গোয়েন্দা ও তদন্তকারী কর্মকর্তারা। ভারতে অবতরণের পরই রানাকে সরকারিভাবে গ্রেপ্তার করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ।

পরে এনআইএ তরফে গ্রেপ্তারের একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। গ্রেফতারি আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেখান থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়িতে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে রাতে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টে এনআইএ বিশেষ আদালতে তোলা হয় রানাকে। এএআইএ বিচারক চান্দের জিৎ সিং-এর এজলাসে এই মামলার শুনানি হবে।  

ইতোমধ্যেই দিল্লিজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আদালত চত্বরে নিরাপত্তা আঁটোসাটো করা হয়েছে। জানা যায়, রানাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে রিমান্ডের আর্জি জানাতে পারে এনআইএ। সে কারণে ইতোমধ্যেই এনআইএ’র সদর দপ্তরেই একটি সেলও গঠন করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদের টিমে থাকবেন এনআইএ'র ডিজি সদানন্দ দাতে, আইজি আশিষ বাত্রা, ডিআইজি জয়া রায়সহ ১২ জন সদস্য। ওই বিশেষ সেলে গিয়ে রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার ছাড়পত্র পাবেন কেবলমাত্র এই ১২ জন সদস্যই। এর বাইরে অন্য কেউ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে লাগবে বিশেষ অনুমতি।

সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদ সময় ২৬/১১ মুম্বাই হামলার জড়িত থাকার সমস্ত প্রমাণ অর্থাৎ তার রেকর্ড করা কণ্ঠস্বর, ছবি, ভিডিও ও ই-মেইল তাকে দেখানো হতে পারে। হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দিল্লির তিহার জেলে রাখা হবে তাকে। কারাগারের যে কুঠুরিতে তাকে রাখা হবে তার নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। তবে হামলাস্থল মুম্বাই হলেও নিরাপত্তার কারণেই দিল্লিতে রেখেই রানার বিচার প্রক্রিয়া চলবে।

তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্র, ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা, খুন, প্রতারণা এবং ‘আনলফুল অ্যাক্টিভিটিস প্রিভেনশন অ্যাক্ট’ (ইউএপিএ) লঙ্ঘন করারও অভিযোগ রয়েছে।

এই মামলায় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ'র হয়ে মামলা লড়বেন সিনিয়র ক্রিমিনাল লইয়ার দয়ান কৃষ্ণান। সঙ্গে থাকবেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নরেন্দ্র মান। অন্যদিকে তাহাউর রানার হয়ে মামলা লড়বেন দিল্লির লিগাল সার্ভিস অথরিটির আইনজীবী পীযুষ সচদেবা।

মুম্বাই হামলার পরই ২০০৯ সালে অক্টোবর মাসে তাকে গ্রেফতার করে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। এরপর ২০১১ সালে রানাকে দোষী সাব্যস্ত করে মার্কিন আদালত। সেই থেকেই লস এঞ্জেলেসের ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি রাখা হয়েছিল তাকে।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২৫
ভিএস/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।