৮১ বছর বয়সী প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতের রাজনীতিতে একজন বিরল ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯৬৯ সাল থেকে দিল্লির রাজনীতিতে নিজের উজ্জ্বল ছাপ রেখে যাচ্ছেন।
২০০৪ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ভারত সরকারের প্রায় সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের পিছনে অন্যতম ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। ভারতের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অবদান অনস্বীকার্য। রাজনীতির ক্ষেত্রে তার বিচক্ষণ মস্তিষ্ককে চাণক্যের সঙ্গে তুলনা করে তাকে ‘রাজনীতির চাণক্য’ বলা হতো।
একদিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক অন্যদিকে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, দুই ক্ষেত্রেই প্রণব মুখোপাধ্যায় ছিলেন অসামান্য দক্ষ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ইন্দিরা গান্ধীর অন্যতম প্রধান পরামর্শদাতা ছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।
ইতিহাস এবং রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ছাত্র প্রণব মুখোপাধ্যায় ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবেও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিষয়ে ভারত সরকারকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করে গেছেন। নিগুঢ় পাঠক হিসেবে যেমন প্রণব মুখোপাধ্যায় সর্বত্র পরিচিত তেমনই তিনি লিখেছেন ভারতের অর্থনীতি ও রাষ্ট্র নির্মাণ সম্পর্কে একাধিক বই। অবসর এর পর তিনি রাইসিনা হিলসের ভবন ছেড়ে চলে যাবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল কালামের ব্যবহার করা দিল্লির বাড়িতে।
রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট তার স্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায় দেহত্যাগ করেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী শুভ্রা মুখোপাধ্যায় ছিলেন বাংলাদেশের নড়াইলের বাসিন্দা।
ইতিমধ্যেই ভারতের আগামী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। আগামী জুলাই মাসে নতুন রাষ্ট্রপতি তার পদ গ্রহণ করবেন।
একথা অনস্বীকার্য প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অবসর গ্রহণের সাথে সাথে সমাপ্ত হবে ভারতের রাজনীতির একটি বিশেষ অধ্যায়।
মনে করা হচ্ছে সম্ভবত রাজনীতি থেকে নিজেকে দূরে রাখবেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। পড়াশুনার মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রাখবেন তিনি। তবে রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও ভারতের রাজনীতি তাকে চিরকাল একজন সৎ এবং দক্ষ রাজনীতিক হিসেবে মনে রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা,০৫ এপ্রিল , ২০১৭
ভি.এস/আরআই