নচিকেতা, কবীর সুমন, ইন্দ্রানী হালদার, শান্তুনু মৈত্র, দেব, সায়ন্তিকা, মিমি, সুদেষ্ণা, ইন্দ্রনীল, যশ, সোহমসহ লেখক, খেলোয়ার, চিত্রশিল্পী। মঞ্চে দলের সব নেতা নেত্রীর উপস্থিতি লক্ষণীয় হলেও দেখা গেলো না মদন মিত্রকে।
সামনে পঞ্চায়েত ভোট ও ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে দলের কর্মী সমর্থককে চাঙ্গা করতে নানা ধরনের নির্দেশনামূলক কথা বলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
উপস্থিত জমায়েতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ যেনো জনবিপ্লব। জনসমুদ্রে সমাবেশ যেনো জন ঢেউয়ে পরিণত হয়েছে। ২১ জুলাই আমাদের শেখায় আগামীতে কীভাবে চলতে হবে। ২০১৮ এর ২১ জুলাই ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। পরের বছর এই সমাবেশ আমরা অঙ্গীকার দিবস হিসেবে পালন করবো।
বিজেপিকে কটাক্ষ করে তৃণমূল প্রধান বলেন, হিন্দুত্ব কখনও উগ্র হতে পারে না। এরা আসল হিন্দু নয়। নকল হিন্দুদের থেকে সাবধান হোন সাংবাদিক ভাই-বোনেরা।
‘বিজেপির নেতা-কর্মীদের নামের সঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতির নাম জড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে সিবিআই ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেনো? তারা বিজেপি করে বলে?’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যারা সম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়ান। দরকার হলে পুলিশের নজরে আনুন। তাদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার দায়িত্ব নেবে। আমরাও নজর রাখছি।
‘কোনোভাবেই বাংলায় সম্প্রীতি নষ্ট হতে দেবো না। আমি ফেসবুককে সম্মান করি, ফেকবুক নয়। ’
তিনি বলেন, বাংলায় তফসিলি ভাইবোনেরা নিরাপদ, আদিবাসী ভাই-বোনেরা নিরাপদ, সংখ্যালঘু ভাই-বোনেরা নিরাপদ, সাংবাদিক ভাই-বোনেরা নিরাপদ, সবাই নিরাপদ।
১২ লাখ মানুষ নিয়ে আজকের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ উল্লেখ করে তৃণমূল প্রধান বলেন, চ্যালেঞ্জ করছি বিজেপিকে। তারাও এমন সমাবেশ করে দেখাক। তৃণমূল কংগ্রেসকে চ্যালেঞ্জ করুক তারা।
‘তৃণমূল একটি ডেডিকেটেড দল’ আখ্যা দিয়ে দলটির সভাপতি বলেন, তা না হলে ৩৪ বছরের বাম জামানাকে উৎখাত করা যেতো না। আমরা কাজ করি বলেই তারা নিন্দা করে। বিজেপিকে হারাতে যা যা করার তা আমরা করবো।
‘বিজেপির বিরুদ্ধে যারা লড়াই করবে বাংলা তাদের পাশে থাকবে। দিল্লির রক্ত চক্ষু থেকে নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেনও নিরাপদ নয়। ’
কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ভৌগলিকভাবে বাংলার সীমান্ত লাগোয়া বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের সীমান্ত। এদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন। আপনাদের কারণে অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। আর ফল ভোগ করছে বাংলা। আমরা কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করতে চাই না। সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে চাই।
আসছে ৯ আগস্ট থেকে ‘ভারত থেকে বিজেপি হটাও’ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। গ্রামে গ্রামে, অঞ্চলে অঞ্চলে এ কর্মসূচি পালন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মমতা বলেন, এ কর্মসূচি শেষ হবে ৩০ অাগস্ট অব্দি। বাংলা যে পথ দেখায়, সে পথ অনুসরণ করুন আপনারা (কেন্দ্র)।
আগামী বছরে পঞ্চায়েত নির্বাচনে জিতে আরও বড় করে ‘শহীদ দিবস’ পালন করার কথা জানান মমতা।
‘২০১৮ সালের লোকসভা ভোটে দিল্লি থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতেই হবে,’ যোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে কঠোরভাবে নিরাপত্তা বসিয়েছে পুলিশ। সবাই যাতে সুষ্ঠুভাবে তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্য সরকারি দেখতে পারেন সেজন্যে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, লেনিন সরণি, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, জওহরলাল নেহরু রোডের মতো একাধিক জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
ভিএস/এমএ