ঠিক সে সময় মুকুল রায়কেও জেরা করা হয়। কিন্তু মুকুল গ্রেফতার হন না।
বাকি সবাই গ্রেফতার হলেও মূল কাণ্ডারি সহজে ছাড় পেয়ে যাওয়াটা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি বোধ হয় ভালোভাবে নেননি। কারণ সত্যি যদি মুকুল রাজসাক্ষী হতেন তাহলে আরও হেভিওয়েট সেলিব্রিটির হয়তো জেলে যেতে হতো।
এরপরই মুকুলের তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সম্পাদক পদটি কেড়ে নেওয়া হয়। সঙ্গে তৃণমূল যুবা দল থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। ধীরে ধীরে দলে কোনঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। এখান থেকেই প্রকাশ্যে বিবাদ শুরু। ২০১৫’র শেষে সে সময়ও একটা জল্পনা উঠেছিলো মুকুল দল ছাড়ছেন।
কিন্তু ২০১৬ সালে বিধান সভা ভোটের আগে মমতা-মুকুলকে আবার কাছকাছি আসতে দেখা যায়। তৃণমূল সর্বভারতীয় সহ সম্পাদক হন এবং ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী ভোটের মূল দায়িত্ব আবার মুকুলকে দেওয়া হয়। আবার তৃণমূল সুপ্রিমো ক্ষমতায় আসেন। তবুও বিবাদ কিন্তু অনেকটা ছাই চাপা আগুনের মতো ছিলো। এরপর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা তার ভাইপো অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে প্রকাশ্যে আনতে শুরু করেন এবং বড়-ছোট যে সব দায়িত্বগুলো মুকুল রায়কে দেওয়া হয়েছিলো সেগুলোর মাথায় মমতা তার ভাইপো অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে আনেন। কারণ হয়তো তিনি বুঝতে পারছিলেন মুকুল একদিন দল ছাড়বে।
এরপরই বিবাদ প্রকাশ্যে আসে। চলতি বছরের ২১ জুলাই তৃণমূলের শহীদ দিবসে মুকুল মঞ্চে থাকলেও তাকে একটি কথাও বলতে দেওয়া হয়নি। এরপরই দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন মুকুল। অবশেষে সব জল্পনার অবসান ঘটলো সোমবার (২৫ সেপ্টম্বর)। দল ছাড়ার ঘোষণা দিলেন মুকুল রায়।
ভবিষ্যৎ কি?
মুকুল যদি সরাসরি বিজেপিতে যোগ দেন সেক্ষেত্রে তৃণমূলের খুব যে ভালো হবে না তা বোঝাই যাচ্ছে। কারণ ৯৭ সালে দল গঠনের শুরু থেকেই মুকুল রায় ছিলেন। সেক্ষেত্রে তৃণমূলের সব কিছুই তার জানা। দলের শক্তি, দুর্বলতা সবই। আর যদি নিজে কোনো দল গঠন করেন তাতে মুকুলের কিছু সুবিধা না হলেও তৃণমূলের যে খুব ভালো হবে না সেটাও বোঝা যাচ্ছে। তবে মুকুল রায় কি করবেন সেটা জানা যাবে পূজার পরই। কারণ ওই সময় দল ছাড়ার বিস্তারিত জানাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
ভিএস/জেডএস