ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

মাত্র ২১ রুপিতে ভরপেট বাঙালি খাবার!

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৮
মাত্র ২১ রুপিতে ভরপেট বাঙালি খাবার! ২১ রুপিতে খাবার খাচ্ছেন কলকাতাবাসী

কলকাতা: কথায় আছে মাছেভাতে বাঙালি। যতই চায়নিজ, মোগলাই বা কন্টিনেন্টাল পেট পুরে খাওয়া হোক না কেন সারাদিনে একবার মাছ-ভাত না পেটে গেলে বাঙালির খাওয়া পরিপূর্ণ হয় না।

কিন্তু আজকাল মাছের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে বাজারে গেলে আঁতকে উঠতে হয়। তবে এ সমস্যার সমাধান করতে রাজ্য সরকার স্বয়ং অন্নপূর্ণার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।



ভাত, মাছ, ডাল, তরকারি ও চাটনি নিত্যদিনের ব্যস্ততায় কলকাতার বহু বাঙালি পরিবার থেকে লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আবার চাকরির রুটিন ঠিক রাখতে বাঙালিরা এসব খাবার খাওয়ার সুযোগ পান না। আর এসব বিবেচনা করেই শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মৎস্য দফতরের ‘একুশে অন্নপূর্ণা’ উদ্যোগ।

মাত্র ২১ রুপিতে ভরপেট খাঁটি বাঙালি খাবার। তাও আবার মাছ-ভাত। সঙ্গে সালাড, ডাল, সবজি এবং শেষ পাতে চাটনি। বেনফিশের ‘একুশে অন্নপূর্ণা’ প্রকল্পটি কলকাতায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গে মৎস্য বিভাগের উন্নয়নে বহুমুখী কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত বেনফিস।  

কম খরচে পুষ্টিকর ভালো মানের এমন খাবার পাওয়া যাচ্ছে কলকাতায়। ‘বেনফিশ’-এর ভ্রাম্যমাণ দোকানের সৌজন্যে অনেক চাকরিজীবীরই স্বাদ আর স্বাস্থ্য ঠিক রাখা সম্ভব হয়েছে।

বেনফিশ জানিয়েছে, কলকাতার বিভিন্ন অফিস পাড়া চত্বরে যেসব রেস্তোরাঁ চলে সেখানে খাবারের দাম অনেক বেশি। আবার কখনও খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। সেদিক থেকে বেনফিশের এই খাবারের দাম সস্তা, আবার মানও অনেক ভালো। প্লেট প্রতি খাবারে সরকারি ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ মানুষের মুখে কম খরচে সুষম খাবার তুলে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম উদ্যোগ। তারই দেওয়া নাম ‘একুশে অন্নপূর্ণা’। সেই মতো বেনফিশ কলকাতায় এই প্রোজেক্ট চালু করে।  

তবে কলকাতার পর এবার পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও স্বাদ পাওয়া যাবে ‘একুশে অন্নপূর্ণা’-র। জেলা শহরগুলিতে চালু হতে চলেছে এই প্রকল্প। আগামী পহেলা বৈশাখ থেকে জেলাগুলোতে ভ্রাম্যমাণ গাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য দফতর। গ্রামের যে সমস্ত মানুষ জেলা শহরগুলিতে চাকরির কারণে আসেন, তাদের সুবিধা দিতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।  

রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানান, খেটে খাওয়া মানুষের জন্য ‘একুশে অন্নপূর্ণা’ সত্যিই প্রশংসনীয়। এর আগে এই প্রজেক্ট ভারতে প্রথম শুরু করেছিলেন তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা।

ইতোমধ্যে জেলায় জেলায় একুশে অন্নপূর্ণা চালু করতে বেনফিশ কর্তৃপক্ষ তোড়জোড় শুরু করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এপ্রিল মাস থেকে জেলাগুলিতে এই প্রকল্প চালু হবে।  

পশ্চিমবঙ্গের মৎস্য দপ্তরের যুগ্ম সচিব তথা বেনফিশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর বিধান রায় বলেন, একুশে অন্নপূর্ণা কলকাতাতে যথেষ্ট সাফল্যের মুখ দেখেছে। এতে আমরা সফল হয়েছি। এবার সারারাজ্যে ওই প্রকল্প চালুর পরিকল্পনা নিয়েছি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় কম খরচে সাধারণ মানুষের খিদে মেটানোর জন্যই এমন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমরা তাতে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
 
বর্তমানে কলকাতার সল্টলেক, রুবি মোড়, গড়িয়াহাট ও শ্যামবাজারে একুশে অন্নপূর্ণা প্রজেক্ট চালু রয়েছে। ২১ রুপির থালিতে ১শ’ গ্রাম চালের ভাত, ৭৫ থেকে ৫০ গ্রাম ওজনের মাছের পিস, ৫০ থেকে ১শ’ গ্রাম সবজি, ৫০ গ্রাম ডাল এবং সালাড থাকে। সঙ্গে টমেটোর চাটনি। সব মিলিয়ে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ গ্রাম খাবারের প্যাকেজ।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৮
ভিএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।