ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

বাংলাদেশ একক ধর্মাবলম্বী মানুষের নয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০১৮
বাংলাদেশ একক ধর্মাবলম্বী মানুষের নয় সম্প্রীতির বাংলাদেশ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তারানা হালিম

কলকাতা: ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার পথেই চলছে বাংলাদেশ। এমন সব কথা উঠে এলো কলকাতায় আইসিসিআর অডিটোরিয়ামে ‘সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনারে।

বাংলাদেশ উপ দূতাবাসের আয়োজনে সেমিনার শুরু হয় পবিত্র কুরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেলের সংক্ষিপ্ত পাঠের মাধ্যমে। এভাবে শুরু হওয়ার কারণ হিসেবে বলতে গিয়ে উদ্যোক্তারা বলেন, এটাই আসল বাংলাদেশ।

যেখানে সব ধর্মের সমান অধিকার বিরাজমান।

বক্তব্যের শুরুতেই প্রাধন অতিথি হিসাবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, “সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন- আপনার সবচেয়ে বড় গুণ কী? বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি আমার দেশের মানুষকে খুব ভালোবাসি। সাংবাদিক পরের প্রশ্ন করলেন, আপনার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা কী? তিনি বলেছিলেন, আমি এদেশের মানুষকে খুব বেশি ভালোবাসি। তিনি কিন্তু সেদিন স্বদেশের মানুষ বলতে বাংলার মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাইকে বুঝিয়েছেন। ”

...তারানা বলেন, “আজ যখন তার কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ৭.৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৫২ ডলার। এখন বর্তমানে সুষম উন্নয়ন সূচকে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৪তম। এলডিসিভুক্ত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের তালিকার মধ্যে অবস্থিত। তখন একইভাবে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই কৃতিত্ব এদেশের জনগণের। জনগণ বলতে বাংলাদেশের মুসলমান হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাইকে বুঝিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর যোগ্য কন্যা। ”

একটি রাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী জায়গাটা আগে ভাঙতে চায় বিরোধীরা। বাংলাদেশ কোনো একক ধর্মাবলম্বী মানুষের নয়। সব ধর্মের সমান অধিকার আছে। তাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার। একটি সরকার অসাম্প্রদায়িক কিনা তা বিবেচনা করতে হয় কয়টি মাপকঠি দিয়ে। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা দিয়ে সরকারকে বিবেচনা করা যায় না। এই কথা আরও দৃঢ়ভাবে বলতে পারি কারণ, বর্তমানে বাংলাদেশে ৮৮.২ শতাংশ মুসলিম ও ১০.৭০ শতাংশ হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।  ২০১৭ এর নিরিখে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বেড়ে হয়েছে ১১ শতাংশ, যোগ করেন তারানা হালিম।

তিনি বলেন, বর্তমানে সচিব পদে ৩২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও অতিরিক্ত যুগ্ম-সচিব পদে ১৩১ জন। ডেপুটি সেক্রেটারি পদে ১২৫ জন। সিনিয়র সহকারী সচিব পদে ৯৬ জন হিন্দু কর্মকর্তা কর্মরত আছেন। ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য ২০১৬-১৭  অর্থবছরে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে ২৪ হাজার মন্দির আছে। ৫ হাজার ৫শ’ মন্দিরে শিশু শিক্ষা প্রকল্প চালু আছে। এবার ৩০ হাজার ৭৭টি দুর্গাপূজা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ২৩০টির বেশি। বর্তমান সরকারের আমলে ৫শ’ শতাধিক বৌদ্ধ চাকরি পেয়েছেন। বিশ্বের মানচিত্রে ভৌগলিকভাবে দেশটা ছোট হলেও সবকিছু অর্জন হয়েছিল ত্যাগের মাধ্যমে। হোক না সে ভাষা আন্দোলন বা হোক না সে স্বাধীনতা অর্জন।
 
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়, উপ-হাইকমিশনার তৌফিক হাসান, প্রেস সচিব মোফাখারুল ইকবাল ও আরও বিশিষ্ট জনেরা।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০১৮
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।