তবে রোববার (২৪ মার্চ) রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে বিষয়টার মান্যতা দিলেন স্বয়ং তৃণমূল সংসদ সদস্য তথা মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কি ঘটেছিল ওই দিন? ঘটনাটি ছিল অভিষেকের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায় গত ১৬ মার্চ ভোরে ব্যাংকক থেকে দেশে ফেরেন।
রুজিরার বিরুদ্ধে কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক দফতরের অভিযোগ, দেশে ফেরার সময় তার কাছে বেআইনিভাবে দুই কেজি স্বর্ণ পাওয়া গেছে। এমনই অভিযোগ এনেছিল
বিরোধীদের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়া হয়েছে। তবে বিষয়টা প্রকাশ্যে আসছিল না বলে রাজ্যে উড়োখবর বলেই প্রায় ধরে নেয়া হচ্ছিলো। এই জল্পনা কল্পনার মধ্যেই রোববার বিষয়টা নিয়ে মুখ খোলেন রুজিরা স্বামী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক বলেছেন, আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমার স্ত্রী স্বর্ণসহ ধরা পড়ে থাকলে, শুল্ক দফতর সঙ্গে সঙ্গে তা বাজেয়াপ্ত করেনি কেন? আর কেনই বা সাতদিন পরে এফআইআর করা হয়েছে?
‘ওখানে তো সিসিটিভি আছে, ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হোক। ২ কেজি কি ২০০ গ্রাম স্বর্ণ পেলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেবো। ’
এদিকে রুজিরার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে, তার কাছে দুটি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। ভারত ও থাইল্যান্ডের।
এ বিষয়ে রুজিরার স্বামী বলেন, আমার স্ত্রী গত ৩৪ বছর ধরে থাইল্যান্ডের নাগরিক এবং এবার সে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিল। এ অভিযোগে আর কোনো কথা বলেননি তিনি। তবে ঘটনাটি কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক চক্রান্ত বলে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক।
অপরদিকে, শুল্ক দফতরের কর্তারা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের করেছেন-এমন অভিযোগে ব্যারাকপুর আদালতে মামলাও করেছেন অভিষেকের স্ত্রী।
এরপরই সোমবার রাজ্যের সিপিআই (এম), কংগ্রেস এবং বিজেপি- এ বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছে। সিপিআই (এম) এর ররিষ্ঠ নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, আমরা বারবারই বলেছি মোদী-দিদির বড় আঁতাত আছে রাজ্যে। একজন রাজ্য দেখবে একজন কেন্দ্র- এটাই তার প্রমাণ।
তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ ও স্ক্যানিং মেশিনের রিপোর্ট ক্ষমতা থাকলে প্রকাশ্যে দেখানো হোক। তবে তা পারবে না এটা জানি।
অপরদিকে রাজ্যের কংগ্রেস সভাপতি বর্ষীয়ান নেতা সোমেন মিত্র বলেন, ঘটনাটা সত্য বলেই অভিষেককে মুখ খুলতে হয়েছে। প্রকাশ্যে রিপোর্ট আনা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ঘটনা যে চাপা দেওয়া হয়েছে তা এখন বোঝাই যাচ্ছে। কেঁচো খুড়তে কেউটেও বের হয়ে যেতে পারে।
এদিকে বিজেপির রাজ্যের অবজারভার বিজয় বর্গী বলেন, ডাল মে কুছ কালা থা, তাই মুখ খুলেছে অভিষেক। সিবিআইকে তদন্ত ভার দেয়া উচিৎ।
তবে বিষয়টা নিয়ে শুল্ক দফতরের ব্যাখ্যা, একজন পুরুষ যাত্রী টানা ১ বছর বিদেশে থাকার পরে ভারতে আসার সময়ে সর্বাধিক ৫০ হাজার রুপির স্বর্ণ আনতে পারেন। তার জন্য শুল্ককর দিতে হয় না। নারী যাত্রী হলে এক লাখ রুপি পর্যন্ত স্বর্ণে ছাড় পাওয়া যায়। অন্যথায় গয়না ছাড়া অন্যান্য স্বর্ণের উপরে শুল্ককর দিতে হয়।
শুল্ক দফতরের এফআইআর-এ বলা হয়েছে, বিমানবন্দরের স্ক্যানিং মেশিনে ধরা পড়েছিল রুজিরার সঙ্গে থাকা তিনটি ব্যাগে গয়না রয়েছে। রুজিরার সঙ্গে থাকা স্বর্ণের পরিমাণ অবশ্য উল্লেখ নেই এফআইআর-এ। তবে বিভিন্ন মহল থেকে তা দুই কিলোগ্রাম স্বর্ণ ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০১৯
ভিএস/ এমএ