সালার জং জাদুঘরের ইউরোপিয়ান পেইন্টিং গ্যালারিতে চিত্রকর্ম আকারে আছে গ্রিক পুরাণের এই গল্প। ‘অ্যাওয়াকেনিং অব গালাতিয়া’ শিরোনামে ‘অয়েল অন ক্যানভাস’ ঘরানার চিত্রকর্মটি বিংশ শতকে ইংলিশ শিল্পী হার্বার্ট স্কমালজের তৈরি।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নানান দুষ্প্রাপ্য আর অমূল্য জিনিস সংগ্রহের সময় ‘অ্যাওয়াকেনিং অব গালাতিয়া’ও নিয়ে আসেন হায়দ্রাবাদের জাদুঘরটির প্রতিষ্ঠাতা নবাব মীর ইউসুফ আলী খান। সালার জং তৃতীয় নামে বিখ্যাত মীর ইউসুফ। ১৯৫১ সালে তার প্রতিষ্ঠিত এই জাদুঘরটি ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম জাদুঘর।
এটির গ্রাউন্ড ফ্লোর ও ফার্স্ট ফ্লোরে ইস্টার্ন, সেন্ট্রাল এবং ওয়েস্টার্ন নিয়ে মোট ছ’টি ব্লক। সেকেন্ড ফ্লোর ও থার্ড ফ্লোরের সেন্ট্রাল ব্লকে রয়েছে লাইব্রেরি, সংরক্ষণ ল্যাবসহ অন্যান্য হল-অফিস। এর মধ্যে গ্রাউন্ড ফ্লোরের ইস্টার্ন ব্লকে তিনটি হল; সেন্ট্রাল ব্লকে প্রতিষ্ঠাতার পরিচয়-পরিবার নিয়ে একটি গ্যালারিসহ ১৬টি গ্যালারি ও একটি শিশু সেকশন এবং ওয়েস্টার্ন ব্লকে দু’টি গ্যালারি ও একটি হল রয়েছে।
অন্যদিকে ফার্স্ট ফ্লোর ইস্টার্ন ব্লকে চাইনিজ-জাপানিসহ আছে চারটি গ্যালারি। একই ফ্লোরের সেন্ট্রাল ব্লকে অ্যারাবিক ও পারসিয়ান ম্যানুস্ক্রিপ্টস গ্যালারিসহ ১১টি গ্যালারি ও তিনটি শিশু সেকশন এবং ওয়েস্টার্ন ব্লকে ইউরোপিয়ান পেইন্টিং গ্যালারিসহ পাঁচটি গ্যালারি।
এসব হল গ্যালারিতে রয়েছে চীন-জাপানসহ প্রাচ্য-পাশ্চাত্য থেকে আনা অসংখ্য দামি মণি-মুক্তো, হাতির দাঁতের তৈরি নানা দামি উপকরণ, পর্সেলিনের পাত্র, মুঘল সম্রাজ্ঞী নূরজাহানের ফল কাটার ছুরি, সম্রাট আওরঙ্গজেবের মণিমুক্তো-শোভিত ছোরা, টিপু সুলতানের হাতির দাঁতের চেয়ার, একটি মাত্র মার্বেল পাথর খোদাই করে তৈরি পাঁচ ফুট-ঊর্ধ্ব ‘ভেইলড রেবেকা’র সিক্ত বসনা মূর্তি।
আছে একটি মাত্র পাথরে নির্মিত আশ্চর্য মূর্তি, যেটিকে সামনে থেকে পুরুষ, অথচ পেছনের আয়নায় নারীর আকৃতিতে দেখা যায়। বিস্ময়ের কারণ হয়ে আছে মিউজিক্যাল একটি ঘড়িও। চার্চের আদলে তৈরি সাড়ে তিন ফুট লম্বা ও দেড় ফুট চওড়া ঘড়িটিতে সময়ের ঠিক আগে একটি লোক দরজা খুলে বেরিয়ে আসে, এবং ঠিক সময় ধরে ঠিক ঘণ্টা বাজিয়ে ভেতরে চলে যায়, আরেকজন বাইরে বসে প্রতি সেকেন্ডে ড্রামে পিটিয়ে চলেছে হাতুড়ি। ঐতিহাসিক নানা অমূল্য সম্ভারের ভাণ্ডারটি দেখার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ ইয়ুথ ডেলিগেশন টু ইন্ডিয়ার শতজন সদস্য। ইতিহাসের নানা সময়ের অজস্র স্মারক দেখে বিস্মিত ডেলিগেশন টিমের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি মেডিকেল অফিসার ডা. অভিষেক ভদ্র ।
তিনি বলেন, একদিনে দেখে শেষ করা যায় না এই জাদুঘর। তবু যতখানি দেখতে পেরেছি, প্রতি পদে পদে আমি সত্যিই বিস্মিত হয়েছি। সবচেয়ে ভালো লেগেছে স্মারকগুলো সংরক্ষণের প্রক্রিয়াটা। আধুনিকতার মোড়কে ইতিহাস আর ঐতিহ্যকে ধরে রাখা হয়েছে এখানে। যেমন ধরুন- ‘অডিও গাইড’ অর্থাৎ টিকিটের বিনিময়ে আপনার মোবাইলে কিংবা অডিও প্লেয়ারে অডিও ফাইল দিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আর আপনি নির্দিষ্ট নিদর্শনের সামনে লিখে রাখা নির্দিষ্ট নাম্বারের ফাইলটি চালালেই ওই বিষয়ের বিস্তারিত শুনতে পাচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৯
এইচএ/
আরও পড়ুন
** সান্ধ্যকালীন সাউন্ড-লাইট শো নিয়ে গেলো গোলকোন্ডা যুগে
** উত্তম-সুচিত্রা-শাহরুখ-ঐশ্বরিয়াদের সঙ্গে লাঞ্চ!
** থিয়েটারে ঢুকেই নায়িকা কানেতা, ‘ফিল্ম’ তৈরি ১৫ মিনিটে!
** উষ্ণ অভ্যর্থনা-বর্ণিল আয়োজনে শতযুবাকে আপন করলো জেএনটিইউ
** কেক কেটে জাহানারার জন্মদিন উদযাপন করলো শতযুবা
** নাম লেখা হয়ে গেলো বিল ক্লিনটনের সঙ্গে
** মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩৮৪৩ ভারতীয় সেনার স্মৃতিরমিনারে
** মোহনীয় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর জয়গান
** ২৫শ বছরের ইতিহাসের জাদুঘরে বাজছে 'কারার ওই লৌহ কপাট'
** ভারতের সংসদে বাংলাদেশের শতযুবা
** মেঘের রাজ্যে মাথা উঁচিয়ে হঠাৎ হিমালয়
** নয়াদিল্লি পৌঁছেছে বাংলাদেশের শতযুবা
** ভারতের পথে ১০০ ‘বাংলাদেশি-বন্ধু’
** ১০০ ‘বাংলাদেশি-বন্ধু’ ভারত যাচ্ছে বৃহস্পতিবার
** ভারত যাচ্ছে আরও ‘১০০ বাংলাদেশি-বন্ধু