বুধবার (১৫ মে) মঙ্গলবারের (১৪ মে) এ ঘটনার প্রতিবাদে কলেজ স্ট্রিট থেকে এ মিছিল বের করে বাম সংগঠনগুলো।
মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন- বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, নীলোৎপল বসু, সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য ও সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি এবং পলিটব্যুরো সদস্য প্রকাশ করাত প্রমুখ।
ইতোমধ্যে অমিত শাহের বিরুদ্ধে কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বিদ্যাসাগর কলেজের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগে অমিত শাহের নেতৃত্বেই তাণ্ডবের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন তারা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে সিপিআই(এম)-এর রাজ্য কমিটির সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, রোড শোকে কেন্দ্র করে কলকাতায় ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থিত দুষ্কৃতীরা। এ ধরণের বর্বরোচিত ঘটনার মধ্য দিয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের চরিত্র মানুষের সামনে আরও স্পষ্ট হলো। সংঘর্ষে দু’পক্ষই দুষ্কৃতী জড়ো করেছিল, যাদের অনেকেই বহিরাগত। দু’দলের পক্ষ থেকেই উসকানিমূলক ও প্ররোচনামূলক স্লোগানও দেওয়া হচ্ছিল। দু’দিক থেকেই ইট-রড ছোড়া ও আগুন লাগানো হয়েছে৷ এক হিংসাত্মক ঘটনার সাক্ষী হলো শহরবাসী। এমনকি দুষ্কৃতীরা বিদ্যাসাগরের মূর্তিও ভাঙচুর করেছে। এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে তীব্র মেরুকরণের রাজনীতি করে মানুষকে ভাগ করতে চাইছে তৃণমূল ও বিজেপি।
সিপিআই (এম)-এর পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, এটা নিছক তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ নয়। এরা আমাদের গণতন্ত্র ও সংস্কৃতি ধ্বংস করেছে। এবার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধ্বংস করছে। এর আগে ওরা সুকান্ত ও লেলিনের মূর্তি ভেঙেছে। এবার বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙল।
এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে জাতীয় কংগ্রেসেরও। কোনো প্রতিবাদ মিছিল না করলেও রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, মঙ্গলবার কলেজ স্ট্রিট চত্বরে যে গুণ্ডামির খণ্ড চিত্র দেশের মানুষ দেখল, সেটা পশ্চিম বাংলার মানুষের কাছে লজ্জাজনক। যারা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙল তাদের আর যাই হোক রাজনৈতিক কর্মী বলা যায়না।
তৃণমূলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আবারও প্রমাণ হলো রাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও। ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই এদিন রাতে টুইটার ও ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের ছবি পরিবর্তন করে বিদ্যাসাগরের ছবি রাখেন দলটির প্রধান মমতা বন্দোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল টুইটার পেজের প্রোফাইল ছবিও পরিবর্তন করা হয়েছে।
এদিকে বুধবার কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও একটি রোড শো আছে। এই রোড শোতে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সবাইকেই হাতে বাংলার মনিষীদের ছবি নিয়ে হাঁটার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের বুদ্ধিজীবী মহলও।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাসহ যে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে এর তীব্র নিন্দা করে কবি শঙ্খ ঘোষ বলেন, কথা বলার কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছিনা। অধঃপতনের আর কোন স্তর পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে তা জানি না।
এ ছাড়াও এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন- কবি সুবোধ সরকার, পবিত্র সরকার, নাট্য ব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে।
এর আগে ত্রিপুরাতে লেলিন এবং কবি সুকান্তের মূর্তি ভাঙা হয়েছিল। সে ঘটনায় অভিযোগের তির ছিল বিজেপির দিকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৩ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১৯
ভিএস/এসএ