জামাইষষ্ঠীর সূচনা কিভাবে? তথ্য বলছে, প্রাচীনকাল থেকেই জামাইকে আপন করার চেষ্টা চালিয়ে যান শাশুড়িমায়েররা। জামাইয়ের হাতেই মেয়ের ভবিষ্যৎ।
যদিও আধুনিক নারীবাদীরা এই ব্যাখ্যা শুনে রে রে করে উঠতে পারেন, অভিযোগ করতে পারেন সমাজের চূড়ান্ত পুরুষতান্ত্রিকতার, তবুও একটি দিনের জন্য সেই অভিযোগ না হয় একটু এড়িয়ে যাওয়া যেতেই পারে। কারণ সবকিছুর পরেও জামাইষষ্ঠী পারিবারিক মিলনমেলার উৎসব।
জামাইষষ্ঠীর এই নিয়ম সম্পর্কে পুরাণ বলছে, ধান হলো বহু সন্তান-সমৃদ্ধি-ঐশ্বর্যের প্রতীক। একইসঙ্গে দূর্বা তারুণ্য আর সুস্বাস্থ্যের প্রতীক। তাই জামাইয়ের সুস্বাস্থ্য কামনা করেই নাকি শাশুড়িমায়েররা সবশেষে ধান-দুব্বো দিয়ে দোয়া করতেন জামাইকে। ভেজা পাখার বাতাস করা হতো, যাতে জামাইয়ের শরীর ঠাণ্ডা হয়। তখন তো আর এসির ব্যবস্থা ছিলো না। আর হলুদ-দই মঙ্গল বা শুভ শক্তির প্রতীক। বাকি ফলের থালা। পাঁচ ধরনের ফল জামাইয়ে হাতে তুলে দেওয়ার অর্থ ফলবান হোক জামাই। তবে সে যাক আজ এতো সব রীতিনীতি মানে না বঙ্গবাসী। তবু রীতি অনুযায়ী দিনটায় জামাইয়েরা হানা দেবেন শ্বশুরবাড়িতে। শুধু কিছু নিয়ম থাকে জামাইয়ের পক্ষ থেকে। জামাইদের বছরেরর অন্যান্য উৎসবে শ্বশুরবাড়ির উপহার বাধা ধরা থাকলেও এইদিনে খালি হাতে প্রবেশ নিষেধ। শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য উপহারসহ আরও কিছু ক্রিয়াচার থাকে জামাইদের।
তবে দু’পক্ষের আদর সমাদরে লাভ হয় বিক্রেতাদের। দিনটাতে বাজারে জিনিসপত্রের দাম আগুন। এর নির্যাস, সকাল থেকেই বাজারে ভিড়। কলকাতার প্রতিটি বাজারে তিল ধারণের জায়গা নেই। সাধ্যের মধ্যেই জামাই আদরের আয়োজন চলছে। মাছ, মাংস থেকে ফল, সবকিছুরই দাম একেবারে ঊর্ধ্বমুখী। আছে জামাইষষ্ঠী স্পেশাল মিষ্টি। তবে এর মধ্যেও ঘরে ঘরে বেজে উঠছে শাঁখের আওয়াজ। এই বিশেষ দিনে পারিবারিক মিলনমেলায় পশ্চিমবঙ্গে চলছে জামাইষষ্ঠী উৎসব।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১৯
ভিএস/এএটি