পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সূত্র জানিয়েছে, আগে আসামে ভুলে ভরা এনআরসির চিত্রটা স্পষ্ট হোক। তারপর প্রেক্ষাপট বুঝে অন্য রাজ্যে এনআরসি চালু করা হবে।
আসাম রাজ্যে বিজেপি এবং এনআরসির পক্ষে বিভিন্ন মামলা সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে তালিকা রিভিউ করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। অন্যদিকে, যে ১৯ লাখ ছয় হাজার ৬৫৭ জন মানুষ চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, তাদের মধ্যে কতজন ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আগামী ১২০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে যাবেন। সেদিকেও তাকিয়ে রয়েছে কেন্দ্র।
এই দু’টি প্রক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়া দেখেই বিজেপির শীর্ষ স্তর থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে, অন্য কোনো রাজ্যে নতুনভাবে এনআরসি হবে কি-না বা স্থগিত রাখা হবে। এদিকে, নাগরিক বাদ যাওয়ায় ক্ষোভে ফুটছে আসাম। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ‘ভাষা ও চেতনা সমিতি’র সম্পাদক অধ্যাপক ড. ইমানুল হক বলেন, প্রতিটা মানুষ নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে প্রচুর অর্থ খরচ করছেন। ধৈর্যের একটা সীমা থাকে। আর কত খরচ করবে?
তবে মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, বোঝা যাচ্ছে এনআরসি আসামের সমস্যা সমাধান করতে পারবে না। কারণ বহু বেআইনি নাগরিক ঢুকে পড়েছে তালিকায়। আবার বহু ভারতীয় নাগরিক বাদ পড়েছে। সুতরাং এবার নতুন কোনো প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। সে ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল দিল্লি যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলতে।
পাশাপাশি এনআরসি তালিকা তৈরি নিয়ে দুর্নীতির প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ১৬০০ কোটি রুপি ব্যয় করেও ত্রুটিপূর্ণ তালিকা কেনো প্রকাশ করা গেল না এমন প্রশ্নও উঠছে বিজেপির অন্দরে। এছাড়া আসামের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় বেআইনি নাগরিকের সংখ্যা কম। আর সে তুলনায় অনেক বেশি প্রকৃত নাগরিক বাদ পড়েছেন। এছাড়া একই পরিবারের স্বামী আছেন, স্ত্রী নেই তালিকাতে। দুই ছেলে আছেন, তালিকায় মা নেই। এ রকম অসংখ্য উদাহরণে আসামে বিজেপি বিধায়করাই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।
এমনকি এনআরসি তালিকা তৈরি করা সফটওয়্যার সংস্থার বিরুদ্ধে মামলাও করা হতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন বিজেপি বিধায়করা। ফলে এই অবস্থায় আসামের চূড়ান্ত চিত্রটা স্পষ্ট না হলে আপাতত এখনই এনআরসি নিয়ে আর অন্য রাজ্যে ঝাঁপ দেবে না বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব তথা কেন্দ্রীয় সরকার। বিষয়টা স্থগিত রাখবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৯
ভিএস/টিএ