ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

মোদী-মমতার হঠাৎ বৈঠক, বসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
মোদী-মমতার হঠাৎ বৈঠক, বসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতার বৈঠক। ছবি: সংগৃহীত

কলকাতা: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে রাজ্যের বকেয়া পাওনা সাড়ে ১৩ হাজার কোটি রুপি চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে তার সঙ্গে দেখা করে এ দাবি করেন মমতা। একইসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় কয়লা ব্লক দেউচা পাচামির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মোদীকে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সময় হলে পশ্চিমবঙ্গে আসবেন। 

এছাড়া, বৈঠকে রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ রাখার বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর তেমন আপত্তি নেই বলে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গে গত আট বছরে কতটা উন্নয়ন হয়েছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একটি প্রতিবেদনও দিয়েছেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টম্বর) প্রথমবারের মতো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে মমতার। তিনি বলেন, দিল্লি এলে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করি। এর আগে রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে দেখা করেছি। অমিত শাহ দায়িত্ব নেওয়ার পর এখনো সাক্ষাৎ হয়নি। আজ হবে।

লোকসভা নির্বাচন ও এর পর থেকে মোদী-মমতার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছে। ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল, এনআরসি থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি ইস্যুতেই মোদী সরকারের কঠোরতম সমালোচক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়া, সিবিআইকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই অভিযোগ তুলেও কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর লাগাতার আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।  

রাজনৈতিকভাবে মমতা বরাবরই তীক্ষ্ম আক্রমণ করে আসছেন নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহকেই। বিশেষ করে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, মমতার বিজেপি বিরোধিতা আরও প্রবল হচ্ছে। বিজেপির অন্যতম প্রধান এজেন্ডা এনআরসির বিরুদ্ধে তিনি কয়েকদিন আগেই প্রতিবাদ মিছিল করেছেন উত্তর কলকাতায়। মোদী সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম চার মাসে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, নীতি আয়োগ ও সরকারের ডাকা একটি বৈঠকেও হাজির না হয়ে মমতা তার কট্টর মোদীবিরোধী অবস্থান প্রকাশ করে আসছেন।  

এ অবস্থায় পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছাড়া আকস্মিক দিল্লি গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেন বৈঠক করলেন, তা নিয়ে চরম রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। নিজেই কৌতূহল উসকে দিয়ে মমতা সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে স্বাভাবিক নিয়মেই বৈঠক হয়েছে। তবে, কিছু রাজনৈতিক কথাবার্তাও এসেছে। সেই রাজনৈতিক আলোচনা কী- এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি তিনি।

এনআরসি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এসব নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সেভাবে কোনও আলোচনা হয়নি। হওয়ার কথাও ছিল না।  

মমতা বলেন, আপনারা ভুল করছেন। একটি বিশেষ চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে শুধু আসামের জন্যই এনআরসি হয়েছে। তাই বিজেপির কে কী বলছে, তা নিয়ে আমি কোনও জবাব দেবো না।  
তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এনআরসির কোনও প্রস্তাব নেই। হবেও না। হতে দেবো না।

প্রায় আড়াই বছর পর বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) একান্ত বৈঠক করলেন মোদী-মমতা। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গেও বৈঠক হতে চলেছে মমতার। দেখার বিষয়, কেমন হয় তাদের প্রথম আলাপ।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৯
ভিএস/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।