ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

দুয়ারে ক্রিসমাস, কলকাতায় কমেছে কেকের চাহিদা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
দুয়ারে ক্রিসমাস, কলকাতায় কমেছে কেকের চাহিদা

কলকাতা: কথায় বলে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। বাঙালিই পারে সব সস্প্রদায়ের উৎসবে নিজেকে ভাসিয়ে দিতে।

কলকাতায় তাই বাদ পড়ে না ঈদের সেমাই থেকে পূজার ভোগ; বাদ পড়ে না খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিনের উৎসবে এক ফালি কেকের সাথে গরম কফির পেয়ালায় চুমুক দিতে। বিশেষ করে বড়দিন এলেই কেক কেনার হিড়িক পড়ে কলকাতায়।

তবে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে তাল কেটেছে সবকিছুর। রাত পোহালেই বড়দিন। তবুও শহরে কেক কেনার উত্তাপ নেই বললেই চলে। ক্রিসমাস উদযাপনে যেখানে বাঙালির প্রধান উপকরণ কেক সেখানে এবার তেমন চাহিদা নেই কেকের। নামজাদা ব্র্যান্ডগুলো মোটামুটি বাজার ধরে রাখতে পারলেও ছোট ব্যবসায়ীদের বাজার নেই বললেই চলে।

বড়দিনের উৎসবে ছোট বেকারিগুলোর বিক্রি বেশ খারাপ বলেই জানিয়েছেন ওয়েস্টবেঙ্গল বেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্তা আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, বড়দিন আমাদের কাছে মেয়ের বিয়ের সমান। প্রত্যেকটা বেকারির এ সময় দম ফেলার ফুরসত থাকে না। ক্রিসমাসে আমরা মূলত পাম কেক বানাই। তার প্রস্তুতিও শুরু হয় নভেম্বর থেকে। সরঞ্জাম জোগাড়, কেকের ছাঁচ নামানো, মোড়ক নিয়ে চিন্তাভাবনা— সে এক সাজ সাজ ব্যাপার থাকে।

কিন্তু এবার তেমন কিছুই নেই। উৎপাদন এবারে মেরেকেটে ৪০ শতাংশও নেই। কারণ এবারে অর্ডার আসেনি। সাধারণের কেক কেনার ক্ষমতা অনেকখানি কমেছে। বেকারির খরচ তোলাই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে, বলেন আরিফুল ইসলাম।

প্রখ্যাত কেক ব্যবসায়ী ‘বাপুজি’ ব্র্যান্ডের ডিরেক্টর অমিতাভ জানা বলেন, কেকের ব্যবসা এবার একেবারেই ভালো নয়। ক্রিসমাসেও বাজার একবারে ঝিমিয়ে আছে। শুধু ক্রিসমাস নয়, প্রায় সারাবছরই মার খেয়েছে টিফিন কেকের ব্যবসা। স্কুল বন্ধ হওয়ায় সেই বিক্রি ৫০ শতাংশের নিচে এসে ঠেকেছে। কেকে করোনা সংক্রমণের ভয় পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

অমিতাভ জানা আরও বলেন, বাজার সচল রাখার কারণে আমরা কেকের দাম বাড়াইনি। অথচ এবারে কেক বানানোর প্রতিটা উপাদানের দাম বেড়েছে। লিটার প্রতি প্রায় ৪০ রুপি বেড়েছে ভোজ্য তেলের দাম। সঙ্গে চিনি বা ময়দার দামও ঊর্ধ্বমুখী। ডিমের দাম যে হারে চড়েছে, তা আগে দেখা যায়নি। একদিকে আর্থিক চাপ, অন্যদিকে বিক্রি কম। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি ভালো না।

তবে নামজাদা কেক ব্র্যান্ডগুলোর দাবি মোটামুটি তারা ব্যবসা ধরে রাখতে পেরেছে। সুইটস ফুডস প্রাইভেট লিমিটেডের চিফ অপারেটার শিখরেশ সাহা বলেন, অস্বীকার করার উপায় নেই লোকাল ট্রেন কম চলা, অফিস-কাচারি, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় টিফিন কেক বা পেস্ট্রি কেকের ব্যবসায় কম হয়েছে। কিন্তু মানুষ জন্মদিন পালন করছেন। নানা উৎসব করছেন ঘরে বসেই। তাতে বিক্রি ধরে রাখতে পেরেছি। ক্রিসমাসেও সেই ধারা বজায় আছে। তবে গতবারের তুলনায় এবারে চাহিদা কম।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২০
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।