কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় দফার ভোট ১ এপ্রিল। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) ছিল দ্বিতীয় দফার ভোটের প্রচারের শেষদিন।
এদিন বিকেলে প্রচার শেষলগ্নে নন্দীগ্রামের টেঙ্গুয়ায় জনসভা করেন তিনি। সভা শেষে সেখানেই জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার কথা হয়। দলীয় নেতারা মমতাকে জানান, আপনি চলে যান। তারপর জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হবে।
রাজি হননি নেত্রী। তিনি জানিয়ে দেন, উঠে দাঁড়াবেন। কোনো সমস্যা হবে না। দলনেত্রীর নির্দেশ অমান্য করার সাধ্য কারো হয়নি। তখনই হুইলচেয়ার থেকে উঠে দাঁড়ান নেত্রী। উঠে দাঁড়াতে তাকে সহযোগিতা করেন দলের রাজ্য সভাপতি ও তার নিরাপত্তা রক্ষীররা। তাদের সহযোগিতায় দাঁড়িয়ে মাইক ধরে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, আমি ঠিক আছি। আমাকে কাউকে ধরতে হবে না। আমি ঠেসান দিয়ে আছি। এরপর সভার উদ্দেশ্যে বলেন, সবাই হাত জড়ো করে জাতীয় সঙ্গীত গাও। মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাত জোড় করে সম্পূর্ণ জাতীয় সঙ্গীতটি গান মমতা।
১০ মার্চ নন্দীগ্রামে বিরুলিয়া বাজারে আহত হন মুখ্যমন্ত্রী। আহত অবস্থাতেই গাড়িতে বসেই যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, চার-পাঁচজন জন ইচ্ছাকৃতভাবে চেপে গাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়েছে বলে বিজেপিকে নিশানা করেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে এনে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার পায়ে চিড় আছে জানা যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগের পরই উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি।
যদিও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, এটা চক্রান্ত নয়, দুর্ঘটনা। তবুও আহত হওয়া নিয়ে সোমবার (২৯ মার্চ) মমতা বলেছেন, নন্দীগ্রামের কেউ আমাকে আক্রান্ত করেননি। চক্রান্ত করে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর আনা বহিরাগতরা আহত করেছেন। এসময় শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্যে করে মমতা বলেছিলেন, ইলেকশনের সময় তুই আমার পা জখম করিয়েছিস। আমি চেপে গেছি ভদ্রতা করে। আজও আমায় পা ভাঙা নিয়ে হুইলচেয়ারে বসে মিটিং করতে হচ্ছে। মঙ্গলবারও মমতার কথায় একই সুর ধরা পড়েছে।
তার কথায়, তোমার (শুভেন্দু) নির্দেশ ছাড়া এ সব হতে পারে না। কোনো নন্দীগ্রামের লোক এ সব করতে পারে না। বহিরাগত গুণ্ডাদের দিয়ে এ সব করিয়েছো তুমি। এরপরই ভোট প্রচারের শেষলগ্নে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় হুইলচেয়ার থেকে উঠে দাঁড়়ালেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২১
ভিএস/ওএইচ/