ঢাকা, শনিবার, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গে ৪ হেভিওয়েট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৪ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২১
পশ্চিমবঙ্গে ৪ হেভিওয়েট সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন শেষ হতেই আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে নারদা কাণ্ড ঘুষকাণ্ডের মামলা। এ মামলায় তৎকালীন চার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে রোববার (৯ মে) আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।

 

এরপরই নারদা মামলায় সোমবার (১৭ মে) সকালে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হন ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র, শোভন চ্যাটার্জি ও সুব্রত মুখার্জি। ইতোমধ্যে সিবিআই দপ্তরে পৌঁছে গেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।

এদিন সকালে ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে পৌঁছায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিশাল দল। বাড়ির বাইরে দেখা যায় কলকাতা পুলিশকেও। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে বাড়ি থেকে বের করে গাড়িতে তুলে কলকাতার সিবিআই দপ্তর নিজাম প্যালেসে নিয়ে যায় সিবিআই কর্তারা। তারপরই একে একে বাকি তিনজনকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় গোয়ন্দা সংস্থা।

বর্তমানের রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং গ্রামন্নোনয় মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি। এবারেও তৃণমুলের টিকিটে বিধায়ক মদন মিত্র। অপরদিকে, ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে তাকে এবারের ভোটের লড়ার টিকিট দেয়নি বিজেপি। কিন্তু দল খারাপ রেজাল্ট করায় দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তিনি।
 
এ বিষয়ে রাজ্যের বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দোপাধ্যায় বলেন, আইন অনুযায়ী রাজ্যের কোনো বিধায়ক এবং মন্ত্রীকে গ্রেফতার করতে হলে অধ্যক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে অনুমতি নিতে হয়ে। তা নেওয়া হয়নি। শুধু রাজ্যপালের অনুমোদনে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা আইনের সঠিক কাজ নয়। তবে সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যের রাজ্যপাল শেষ কথা বলতেই পারেন।

সিবিআই প্রধান সতীন্দ্র সিং এর আগে জানিয়ে ছির ১৬৩ ও ১৬৪ অনুচ্ছেদ মেনে সিবিআই, রাজ্যপালের কাছে অনুমতি চেয়েছিললেন, বেশ কয়েক বছর আগের এই ঘুষকাণ্ডের তদন্ত করছে সিবিআই। চারজনের বিরুদ্ধে দুর্নীতিদমন আইনে। সেই আবেদনে সায় দিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এদিন সকালেই নিজাম প্যালেসে এনে অ্যারেস্ট মেমোয় সই করানো হয়। আজই চার্জশিট পেশ করবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এরপর বেলা ১টার দিকে তোলা হবে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। যা নিয়ে গোটা রাজ্যে চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে।

তবে রাজ্যপাল ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার অনুমোদন দিলেও এই তালিকায় নাম নেই নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর। তালিকায় কেন শুভেন্দু অধিকারীর নামে নেই, সেই প্রসঙ্গে সিবিআইয়ের ব্যাখ্যা শুভেন্দু অধিকারী নারদাকাণ্ডের সময় সংসদ সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে গেলে দিল্লির সংসদ ভবনের অধ্যক্ষের অনুমতি প্রয়োজন। তাই নাম নেই শুভেন্দুর।

২০১৬ সালে মমতার সরকারের ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়, মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীকে গোপন ক্যামেরার সামনে ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছিল। যা নিয়ে ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এরপরই ২০১৭ সালে নারদাকাণ্ডে তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের ওপর। তারপর থেকেই মামলা চলছে। এদিন গ্রেফতার পর আরও একবার নারদা ঘুষকাণ্ড নিয়ে রাজ্যজড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, মে ১৭, ২০২১ আপডেট: ১১৩৭ ঘণ্টা
ভিএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।