ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ফের তৃতীয় মোর্চা গড়ছেন মমতা

ভাস্কর সরদার, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০২১
প্রধানমন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ফের তৃতীয় মোর্চা গড়ছেন মমতা

কলকাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যদিয়ে তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতা এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এবার তার একমাত্র লক্ষ্য মোদী সরকারের পতন ঘটানোর।

বুধবার (৯ জুন) রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন থেকে মোদী সরকারের পতনের জন্য সর্বভারতীয় স্তরে মোদীবিরোধী ‘তৃতীয় মোর্চা’ গঠনের ডাক দিলেন মমতা।  

একই সঙ্গে এদিন মোদীর ভ্যাকসিন নীতি, কৃষক আইনের বিরোধিতা নিয়েও কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ভারতে শিল্প থেকে কৃষি, সবকিছুতেই মোদী সরকার ব্যর্থ বলে এদিন দাবি করেন মমতা।

বুধবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন দিল্লিতে চলা কৃষক আন্দোলনের নেতা রাকেশ টিকায়েত ও তার টিম। কৃষি আইন বাতিলের বিষয়ে এদিন মমতার সঙ্গে কথা হয় কৃষক নেতাদের। পরে কৃষক নেতারা মমতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মমতাদি আপনি বিজেপির হাত থেকে বাংলাকে বাঁচিয়েছেন, এবার দেশকে বাঁচাতে হবে।

মূলত, ভারতের কৃষক আন্দোলনকে গোড়া থেকেই সমর্থন জানিয়ে এসেছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, কৃষক না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না। যতদিন কৃষকদের দাবি পূরণ না হবে ততদিন এই আন্দোলনের পাশে থাকবো। মোদী সরকারকে এবার গদি থেকে উৎখাত করতেই হবে। এখন এটাই আমাদের লক্ষ্য। এজন্যে মোদীবিরোধী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলবো। ফের জোট বেঁধে কী করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করবো। প্রয়োজনে মহামারি পরিস্থিতিতে ভার্চ্যুয়ালি একটা মিটিং করা যেতে পারে।

একই সঙ্গে যারা বাজপেয়ীর আমলে বিজেপি করতেন এদিন তাদের উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, যারা বিজেপির পুরনো লোক ছিলেন এবং এখনও আছেন, যেসব নেতারা মোদীকে দেখে বিজেপি থেকে চলে গিয়েছিলেন। তাদের আবার ফিরে আসার আবেদন করছি। একসঙ্গে দেশকে বাঁচাতে হবে।

এই প্রয়াস মমতার প্রথম নয়। ২০১৯ সালে ভারতে লোকসভা ভোটের আগেও বিজেপিবিরোধী জোট গঠনের দায়িত্বে ছিলেন মমতা। সেবার কলকাতার ব্রিগেড গ্রাউন্ডে মোদীবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতিতে তৈরি হয়েছিল ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ব়্যালি অর্থাৎ তৃতীয় মোর্চা। তা সত্ত্বেও কংগ্রেস এবং তৃতীয় মোর্চাকে চরমভাবে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের জন্য এককভাবে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি।

ফলে প্রথমবার সফল না হয়েও দ্বিতীয়বার কোন ভরসায় এমন ঘোষণা করলেন মমতা?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে এবারের নির্বাচন ছিল মোদী ভার্সেস মমতার। বাংলার বিধানসভা ভোটে সর্বশক্তি দিয়ে জয়ের জন্য ঝাপিয়ে পড়েছিল মোদীবাহিনী। তা সত্ত্বেও সফলতা পেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। মমতার এই জয়ে মোদী-শাহসহ গোটা বিজেপি দলের কাছে জোর ধাক্কা লেগেছে। এরপরই মোদীবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আবার বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, যে মোদীর যোগ্য প্রতিপক্ষ একমাত্র মমতা বন্দোপাধ্যায়ই। তাই ভারতে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রধানমন্ত্রী মুখ করে লড়াইয়ের পক্ষপাতি মোদীবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর। বিরোধীদের এই অবস্থান অজানা নয় মমতার কাছেও। তাই দেরি না করে, ফের তৃতীয় মোর্চার ডাক দিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ এও মনে করছেন যে, সবকিছুই নির্ভর করবে আসন্ন উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনের পর। ২০২২-এ রাজ্যটিতে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে ইতোমধ্যে মোদী-যোগী দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। ভোটে সেখানের বিজেপির পতন হলে অনেকটাই সফল হতে পারে মমতার তৃতীয় মোর্চা।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০২১
ভিএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।