ঢাকা: তিন বিতর্কিত আইন রদের ঘোষণাই সব নয়, কৃষককল্যাণে সরকারের আশু কর্তব্যগুলো মনে করিয়ে দিতে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখছেন কৃষকনেতারা।
রোববার (২১ নভেম্বর) সংযুক্ত কিষান মোর্চার জরুরি বৈঠকে এই চিঠির খসড়া আলোচিত হয়।
বৈঠকের পর মোর্চার অন্যতম নেতা বলবীর সিং রাজেওয়াল সিংঘু সীমান্তে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, সেই চিঠিতে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) নিশ্চিত করতে আইন প্রণয়নের দাবির কথা লেখা হবে। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, তিন সীমান্ত খালি করে কৃষকেরা এখনই ফিরে যাবেন না। তিন আইন রদ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। পাশাপাশি যেসব কর্মসূচি আগেই নেওয়া হয়েছে, সব পালন করা হবে।
এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সোমবার (২২ নভেম্বর) উত্তর প্রদেশের রাজধানী লক্ষ্ণৌয়ে কৃষকদের মহা পঞ্চায়েত অনুষ্ঠান। ২৬ নভেম্বর দিল্লির তিন সীমান্তে ব্যাপক সমাবেশ। ২৯ নভেম্বর সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের শুরুর দিনে সংসদ অভিযান।
রাজেওয়াল বলেন, তাদের মূল দাবি ছিল তিন আইন রদ ও এমএসপি নিয়ে আইন তৈরি। আইন রদের কথা ঘোষিত হলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমএসপির আইনি বৈধতা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।
মোর্চার আরেক নেতা সিপিএমের সাবেক সাংসদ হান্নান মোল্লা বলেন, চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে এ কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলা হবে, মোর্চার নেতাদের তিনি বৈঠকে ডাকুন। কৃষককল্যাণে যখন তিনি এতই চিন্তিত, তখন কৃষকদের কাছ থেকে শুনুন কী করলে তাদের মঙ্গল। মোর্চার নেতারা বলেছেন, এমএসপি নিয়ে আইন না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন ছাড়বেন না। পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য মোর্চার নেতারা ২৭ নভেম্বর আবার বৈঠকে বসবেন।
আইনের মাধ্যমে ফসলের এমএসপি নিশ্চিত করা ছাড়াও কৃষক নেতারা নিহত কৃষকদের পরিবারগুলোকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার দাবি তুলেছেন। বিদ্যুৎ সংশোধন বিল প্রত্যাহারের পুরোনো দাবিও তারা নতুন করে মনে করিয়ে দিয়েছেন। আর বলেছেন, লখিমপুর খেরি ঘটনায় জড়িত বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রকে বরখাস্ত করা জরুরি। এই দাবি পূরণ করা না হলে তারাও আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন না।
লক্ষ্ণৌর মহা পঞ্চায়েত সফল করতে মোর্চার নেতারা সচেষ্ট। পশ্চিম উত্তর প্রদেশের জাট নেতা রাকেশ টিকায়েত এক টুইটে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ভাবছেন, সেই সংস্কারে কৃষকদের দুর্দশা দূর হবে না। তাদের মুখে হাসি ফোটাতে দরকার এমএসপি আইন। ‘চলো লক্ষ্ণৌ’ হাঁক দিয়ে টিকায়েত বলেছেন, এমএসপি আইনই আসল সংস্কার।
আরেক নেতা হরনাম সিং ভার্মা বলেন, আইন রদ করার কথা বললেও প্রধানমন্ত্রী এমএসপি আইন নিয়ে একটা শব্দও উচ্চারণ করেননি। সেই আইন প্রণয়ন ও অজয় মিত্রর অপসারণ না হলে তারাও জমি ছাড়বেন না।
ভারতের এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়, তিন বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আগামী বুধবারই সম্মতি দিতে পারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ২৪ নভেম্বর বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। সংবাদ সংস্থা এএনআই গতকাল সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে এ খবর জানিয়েছে।
এএনআই বলছে, বুধবারের বৈঠকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সবুজ সংকেত পাওয়া গেলে কৃষি আইনগুলো প্রত্যাহারের জন্য সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে তা নিয়ে বিল পেশ করা হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০২১
এনটি