ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পেছাতে পারে কলকাতা বইমেলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২২
পেছাতে পারে কলকাতা বইমেলা

কলকাতা: কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় নিয়ে মমতার সরকারের সায় থাকলেও দ্বিধায় আছেন  প্রকাশকদের একাংশ। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সোশ্যাল সাইটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের উদ্দ্যেশে ছোট প্রকাশকদের পক্ষ থেকে পাঠানো নামহীন একটি চিঠি এই দ্বিধা বাড়িয়েছে।

২০২০ সালে কলকাতা বইমেলার শেষ আসর বসেছিল সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে। আগামী ৩১ জানুয়ারি ওই অঞ্চলে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ওই তারিখে করা যাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। কারণ প্রকাশকদের একাংশ ওই তারিখে বইমেলার পক্ষপাতী নন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলা তথা ভারতসহ বিশ্বের বহুদেশের কবি, লেখক, সম্পাদকদের কাছে কলকাতা বইমেলা হলো সাংস্কৃতিক মিলন ক্ষেত্র। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বহু প্রতীক্ষিত সেই বইমেলা দু’বছর পর ফিরে এলেও ব্যবসা এবং সাংস্কৃতির কতটা ঠিকঠাক মিলন ঘটবে, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।

চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ৩১ জানুয়ারি বইমেলা শুরু হলে বাংলার জেলার গ্রামগুলি থেকে পাঠকসহ বিদ্বজনদের অনেকেই আসতে পারবেন না। তাছাড়া, চলমান করোনা সমস্যার জন্য অনেক প্রকাশকেরই প্রস্তুতিতে ধাক্কা লাগছে। ছাপাখানার কর্মী ও বাঁধাইকর্মীদের অনেকেই কোভিড সংক্রমণে ঘন ঘন অসুস্থ হচ্ছেন। ফলে বইমেলার নতুন বই তৈরির কাজও পিছিয়ে যাচ্ছে।

লিটল ম্যাগাজিনের প্রকাশক মানস দাস বলেছেন, আমাদের মত ছোট প্রকাশকরাই পর্যাপ্ত পরিমাণ বই ছাপাতে পারছি না। যারা বড় প্রকশাক তাদের সমস্যাও বড়। ফলে সবদিক বিচার করলে আমারও মনে হয়, বইমেলা কয়েকটা দিন পিছিয়ে দিলেই সবার সুবিধা হবে। পাশাপাশি পাঠকরা আরও নির্ভয়ে বইমেলায় আসবেন। তাছাড়া  প্রতিবছর কলকাতা বইমেলাকে কেন্দ্র বাংলাদেশিদের আসা-যাওয়াটা অনেকটাই বাড়ে। এবারতো কলকাতা বইমেলার থিমকান্ট্রি বাংলাদেশ। ফলে তাদের আনাগোনা আরও বাড়বে। পাশাপাশি বহু রাজ্য থেকেই মানুষজন আসেন। এমন পরিস্থিতি চললে নামেই বইমেলা হবে, ব্যবসা হবে না। আমাদের সারা বছরের উপার্জনের বেশি অংশটাই আসে কলকাতা বইমেলা থেকে। দুবছর হয়নি আলাদা বিষয়। এবার অংশ নিলাম, বাড়তি বই ছাপলাম, কিন্তু ব্যবসা হলো না। তাহলে কী লাভ অংশ নিয়ে? সময়টা একটু পিছিয়ে দিলে পাঠক থেকে প্রকাশক, সবার সুবিধা হবে।

বইমেলার পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের কর্তারা লিটল ম্যাগাজিন থেকে ছোট প্রকাশকদের সমস্যা নিয়ে ওয়াকিবহাল। গিল্ড কর্তা ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা চাই সবার সুবিধা দেখেই বইমেলা হোক। দরকারে একটু পিছিয়ে দেওয়া যায় কি না, সেটা রাজ্য সরকার অবশ্যই ভাববেন। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বইমেলা না পিছিয়ে, অন্য একটি তারিখে বইমেলা করা যেতেই পারে।

প্রসঙ্গত, ৩১ জানুয়ারি বইমেলা হলে তাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতি নিয়েও বইপাড়ায় জল্পনা চলছে। কারণ ১২ ফেব্রুয়ারি ওই অঞ্চলে অর্থাৎ বিধাননগরের পৌরভোট। তার আগে সল্টলেকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে বইমেলার উদ্বোধন নির্বাচনী বিধিতে আটকাবে কি না, তা নিওে প্রশ্ন থাকছে। ফলে সব মিলিয়ে পেছোতে পারে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমলা!

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, ১৭ জানুয়ারি, ২০২১
ভিএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।