কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে আগামী ১২ এপ্রিল দুই কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। একটি লোকসভা ও অপরটি বিধানসভা উপ-নির্বাচন।
রোববার (২০ মার্চ) সন্ধ্যায় আসানসোল পৌঁছেছেন শত্রুঘ্ন সিনহা। পশ্চিমবঙ্গের অন্ডালের কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরে অবতরণের পর ওই তারকাকে দেখতে ভিড় জমান সাধারণ মানুষ। বিমানবন্দর থেকে শত্রুঘ্নকে আসানসোলের একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গেছে, সোমবার (২১ মার্চ) থেকেই শাসকদলের হয়ে প্রচারে নামবেন শত্রুঘ্ন। বাবার হয়ে আসানসোলে প্রচারে আসতে পারেন কন্যা সোনাক্ষী সিনহা। এখানে শাসকদলের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিজেপি প্রার্থী ফ্যাশান ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পাল।
এই কেন্দ্রে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী অভিনেত্রী সায়নীকে পরাজিত করে জয় পেয়েছিলেন অগ্নিমিত্রা। এখন ওই কেন্দ্রের বিধায়ক। এবারে যদি জয়ী হন তাহলে অগ্নিমিত্রা হবেন সংসদ সদস্য (এমপি)। পরাজিত হলেও তার বিধায়ক পদ বাতিল হবে না। ফলে কিছুটা বাড়তি চাপ থাকবে শত্রুঘ্নর ওপর।
২০১৯ সালে বিজেপির টিকিটে আসানসোল লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে দ্বিতীয়বার এমপি হয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। অপরদিকে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাবুলকে টালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে বিধায়ক পদে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু বাবুল পরাজিত হন তৃণমূল প্রার্থী অরুপ বিশ্বাসের কাছে। পরে মমতার দলে যোগ দেন বাবুল। দল পরিবর্তন করায় নিয়ম মাফিক এমপি পদ থেকে ইস্তফা দেন বাবুল। তাই আসানসোল কেন্দ্রে উপনির্বাচন হচ্ছে।
এদিন আসানসোলের বিধায়ক বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল তৃণমূল প্রার্থীর সম্পর্কে বলেন, ‘বিহার থেকে এসেছেন বিহারীবাবু। উনি বহিরাগত। ফল ঘোষণার দিন জল-মিষ্টি খাইয়ে বিদায় দেবে আসানসোলের মানুষ। ’
বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে তার অভিমত, ‘বন্ধুত্ব বন্ধুত্বের জায়গায়। তবে তার জন্য রাজনীতির সুচাগ্র জমিও ছাড়ব না। ’
একই সঙ্গে অগ্নিমিত্রা পাল আরও বলেন, ‘আসানসোলে আমাদের দু’দুবার এমপি নির্বাচিত হয়েছে। তিনি (বাবুল) দল ছেড়ে চলে গিয়েছেন সেটা ভিন্ন বিষয়। বিগত কয়েক বছর মোদীজি ও বিজেপির সমর্থক এখানকার মানুষজন। যদি শাসকদল অশান্তি না পাকায়। আসানসোলের মানুষ ভোট দিতে পারেন তাহলে নিশ্চিতভাবে বিজেপি জয়ী হবে। আসানসোল আমার জন্মস্থান। এখানকার মানুষ আমাকে চেনেন। তাই ২১ এর নির্বাচনেও আমার প্রতি অর্থাৎ বিজেপির প্রতি ভরসা রেখেছেন আসানসোলবাসী। তবে কোনও নির্বাচনেই প্রতিপক্ষকে আন্ডারএস্টিমেট করা উচিত নয়। আমিও করছি না।
কিন্তু অগ্নিমিত্রার অভিযোগ, রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট হলে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারবেন না। ভোট লুট হবে।
কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলে মানুষের ভরসা থাকে। তারা বুথে গিয়ে ভোটটা অন্তত দিতে পারেন। বিগত নির্বাচনগুলোতে রাজ্য পুলিশ দাঁড়িয়েছিল। তাদের সামনেই রিগিং হয়েছে।
শত্রুঘ্ন ভারতবাসী হয়েও কিভাবে বহিরাগত হন? অগ্নিমিত্রার মত, মুখ্যমন্ত্রী ২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বলেছিলেন বাংলার বাইরের মানুষ সব বহিরাগত। ওনার কথা মত শত্রুঘ্ন সিনহাও বহিরাগত। উনি নিজে কর্মক্ষেত্রে নামকরা গুণী মানুষ। তবে, সুচাগ্র জমিও আমি ছাড়ব না। রাস্তায় নেমে লড়াই হবে। আসানসোলের মানুষ বিজেপির পাশে থাকবে।
এই কেন্দ্রে সিপিএম প্রার্থী পার্থ মুখোপাধ্যায়। তবে, কংগ্রেস এখনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। ফলে চতুর্মুখী লড়াইয়ে কে অ্যাডভান্টেজ পাবে তা জানা যাবে, ১৬ এপ্রিল ফল ঘোষণার দিন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২২
ভিএস/এএটি