ঢাকা, বুধবার, ২৭ কার্তিক ১৪৩১, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গে গণহত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তি দিক রাজ্য, সরব মোদী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫০ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
পশ্চিমবঙ্গে গণহত্যাকারীদের দ্রুত শাস্তি দিক রাজ্য, সরব মোদী

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে গণহত্যায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।  

বুধবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অপরাধীদের দ্রুত শাস্তির জন্য পশ্চিবঙ্গের সরকারকে সাহায্য করবে কেন্দ্রী সরকার।

বীরভূমের এই হিংসাত্মক ঘটনায় প্রাধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেছেন।  

নিহতদের পরিবারের সমবেদনা জানিয়ে মোদী বলেছেন, আমি বাংলার মানুষদের কাছে আবেদন করব এ ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের যেনো ক্ষমা না করা হয়। পাশাপাশি তাদের যারা ইন্ধন দিয়েছে তাদেরওর ক্ষমা না করা হয়। আমি আশা করব, রাজ্য সরকার দ্রুত অপরাধীদের সাজা দেবে। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে সব ধরনের সাহায্য করতে প্রস্তুত।  

এ বিষয়ে এদিন দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, চক্রান্ত করে আমাদের বদনাম করা হচ্ছে। বীরভূমে যা ঘটেছে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। যারা ঘটনা ঘটিয়েছে তারা কেউ ছাড় পাবে না।  ওখানের দায়িত্বরত পুলিশ ও এসডিপিওকে সরিয়ে দিয়েছি। জেলা ইন্টেলিজেন্স অফিসার বা ডিআইও-কে সাসপেন্ড করেছি। সিট গঠন করেছি। ফিরহাদ হাকিম, আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠিয়েছিলাম। আজই যেতাম। কিন্তু বিরোধীরা গেছেন। তাই বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) আমি যাবো। আমরা সিপিএম, কংগ্রেসের মতো চক্রান্তকারী দল নই।

রাজ্য রাজনীতিতে সরব পশ্চিমবঙ্গেম সবকটি রাজনৈতিক দল। এ গণহত্যায় স্বতঃপ্রণোদিত একাধিক মামলা জমা পড়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বুধবার বলেছেন, নারী-শিশুসহ আটজন মারা গেছে।  এটি বেদনাদায়ক ঘটনা ও একটি সিরিয়াস ক্রাইম। তবে, এদিন হাইকোর্ট রাজ্যকে প্রথম তদন্ত করার আগে সুযোগ দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে সিসিটিভি দিয়ে মুড়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় বগটুই মোড়ের কাছে একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেসময় তাকে বোমা মেরে খুন করে দুর্বৃত্তরা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই গ্রামের ১০ বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে নারী-শিশুসহ ৮ জনের মৃত্যু হয়।  

স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই দিন রাতে দুর্বৃত্তরা রাতভর গ্রামে তাণ্ডব চালায়। ভাদু শেখের মৃত্যুর পর বাইকে চেপে চার-পাঁচজন বগটুই গ্রামে এসে বাড়িগুলোতে ভাঙচুর চালায় ও আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে ৮ জন পুড়ে মারা যায়। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) রাতেই পুলিশ মরদেহগুলো দাফন করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ তৃণমূল নেতার খুনের বদলা নিতেই গ্রামে গণনিধন চলেছে। রাজনৈতিক মহল ধারণা করছে, শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই এ গণহত্যা। তবে, এই বিষয়ে পুলিশ এখনও কিছু বলেনি। যদিও প্রথম দিকে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ কথা বলা হলেও পরে সরকারিভাবে আগুন দেওয়ার ঘটনাই সামনে আসে। এ ঘটনায় ২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ঘটনাস্থলে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে গণহত্যার প্রতিবাদে এদিন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বাম প্রতিনিধিদের নিয়ে ওই গ্রামে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ তাকে বাধা দেয়। তবে, সিপিএমের  রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ঘুর পথে বাইকে বগটুই গ্রামে পৌঁছাতে পেরেছেন। সেলিম এদিন পোড়া বাড়িগুলো ঘুরে দেখেন। কথা বলেন স্থানীয়দের সঙ্গে। সেলিম বলেছেন, এর সঙ্গে শাসকদলের লোকই জড়িত আছে। সরব কংগ্রেস, বিজেপিও।

বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
ভিএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।