কলকাতা: বিশুদ্ধ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বাংলাদেশ একদিন আগে নববর্ষকে স্বাগত জানালেও পশ্চিমবাংলার দিনপঞ্জী অনুযায়ী শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ১৪২৮ বর্ষকে বিদায় জানিয়ে ১৪২৯ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিয়েছেন কলকাতাবাসী। নতুন বছরকে বরণ করে নিতে কলকাতা ছিল আনন্দ মুখর।
এ উপলক্ষে ভাষা ও চেতনা সমিতির সম্পাদক তথা বিশিষ্ট অধ্যাপক ইমানুল হক বলেন, আমরা বারে বারে বলে আসছি, ঈদ নয়, দুর্গাপূজা নয়, বাঙালির জাতীয় উৎসব হোক পহেলা বৈশাখ। এর কারণ, পহেলা বৈশাখ ৩০ কোটি বাঙালির উৎসব। ১৮ কোটি বাংলাদেশের বাঙালি, ১০ কোটি পশ্চিমবঙ্গে এবং গোটা বিশ্বের দুই কোটি বাঙালি। তাদেরই তো উৎসব বাংলা নববর্ষ।
ভারতের ৭ কোটি বাঙালির প্রধান উৎসব দুর্গাপূজা। একইভাবে বাংলাদেশের ১৬ কোটি বাঙালির প্রধান উৎসব ঈদ। ফলে এই দুই উৎসবে সবার মিলন হয় না। কিন্তু বাঙালির নববর্ষ, বাংলা নববর্ষ, এই উৎসব কিন্তু সবার। এই উৎসবে সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলিত হয়। সে কারণে গত ২৪ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে পহেলা বৈশাখ জাতীয় উৎসব এই নিয়ে লড়াই করে চলেছি।
দিনটির সূচনায়, কলকাতার ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামের পাশে সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ের সামনে থেকে এক মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করে ভাষা ও চেতনা সমিতি। শেষ হয় রবীন্দ্রসদন সংলগ্ন অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে রাণুচ্ছায়া মঞ্চে। প্রভাতফেরিতে পা মেলান শিক্ষার্থী, বিশিষ্টজন এবং বাংলাভাষা প্রেমী মানুষেরা।
এরপর নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গান, কবিতা, নাচ, নাটকের আয়োজন করা হয়। এখানেই শেষ নয়, খাওয়া-দাওয়াতেও ছিল চমক! সবার জন্য ছিল আম পোড়া শরবত, পান্তা ভাত এবং শুঁটকি। দুপুরে মাছ ভাত, আলু পোস্ত এবং কাঁচা আমের চাটনি।
প্রতিবছরই কলকাতার বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন বাংলা বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নানান আয়োজন করে থাকে। তবে করোনার কারণে গত দুই বছর এতে ছন্দপতন ঘটেছিল। পশ্চিমবঙ্গে করোনা প্রভাব কমায় এবং বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় সব কিছুই আগের ছন্দে ফিরছে।
পহেলা বৈশাখ এলেই কলকাতার রাজপথে দেখা যায় রঙ বেরঙের মুখোশ, প্যাঁচা, রাস্তায় দেওয়া আল্পনা, শোভাযাত্রা সবই। তাতে পা মেলান কলকাতার কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার সব বয়সী মানুষ।
আগের ছন্দে ফিরতে এ বছর বঙ্গবাসী দিনটি আনন্দ উৎসব এবং সামাজিক মাধ্যমে সেরে ফেলছেন, ‘শুভ নববর্ষ…। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৪ ঘণ্টা, ১৫ এপ্রিল, ২০২২
ভিএস/এমএমজেড