কলকাতা: আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) কলকাতার ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) আয়োজিত ‘এক্সপ্লোরিং ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া’ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে উঠে এলো পদ্মা সেতুর প্রসঙ্গ।
প্রধানমন্ত্রী হাসিনার প্রশংসা করে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে গোটা এশিয়ায় মোস্ট ডেভেলপিং কান্ট্রি হিসেবে নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছে। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ। তার হাত ধরেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, যা দেখে আমরাও খুশি।
দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্যহীন বাণিজ্য প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ভারসাম্যহীন বাণিজ্য হচ্ছে কথাটা বলা ঠিক হবে না। একটা নীতির প্রশ্নে আমরা আটকে রয়েছি। ফলে মাঝেমাঝে দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে দুই বাংলার মধ্যে ব্যবসাটা কমে যাচ্ছে। এটা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের একটা আইনের ফলে হচ্ছে। কিন্তু এটাকে ভারসাম্যহীন বলা যাবে না। ভারতের সঙ্গে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের সাথে বাংলাদেশের ব্যবসা ক্রমশই বাড়ছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়, কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রিজওয়ান-উর-রহমান প্রমুখ।
উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, পদ্মাসেতু চালু হওয়ার ফলে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে। পদ্মা সেতুর জেরে ১ দশমিক ৫ থেকে ২ শতাংশ জিডিপি বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীও সব সময় আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে জোর দিয়ে আসছেন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে আঞ্চলিক যোগাযোগে বড় প্রভাব পড়বে। মোংলাপোর্ট থেকে মালপত্র আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে। এ ব্যাপারে ভারত সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। আমরা মনে করি, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার ফলে গোটা দক্ষিণ-এশিয়ার অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সবকিছুতেই এর সদর্থক প্রভাব পড়বে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি রিজওয়ান-উর-রহমান বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের ফলে বাংলাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য অনেক গতিশীল হবে। যদিও এর পাশাপাশি স্থলবন্দরগুলিকে আধুনিকীকরণ করা দরকার।
বাংলাদেশের মাটিতে ভারতীয় বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ চিকিৎসা করাতে ভারতে আসেন। তাই হাসপাতাল মালিকরা যদি বাংলাদেশের মাটিতে চিকিৎসায় বেশি বিনিয়োগ করেন, সে ক্ষেত্রে আরও বেশি লাভবান হবেন। আমরা চাই বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে। কারণ ২০৪১ সালে আমাদের উন্নত দেশের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সমস্ত পাবলিক হেলথ কেয়ার, পাবলিক সেফটি-সহ প্রতিটি ক্ষেত্রকে সুনিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই আমাদের এই অগ্রযাত্রায় ভারতে যেন একটা শক্ত অংশীদার হয়।
পশ্চিমবঙ্গের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক ছিল, আছে এবং এই সম্পর্ক আগামী দিনে আরও সুদৃঢ় হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪০ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০২২
ভিএস/এমজেএফ