ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

দ্রৌপদীকে শুভেচ্ছা, উপরাষ্ট্রপতি ভোটে থাকছে না তৃণমূল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৯ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
দ্রৌপদীকে শুভেচ্ছা, উপরাষ্ট্রপতি ভোটে থাকছে না তৃণমূল

কলকাতা: ভারতের ১৫তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার পর দ্রৌপদী মুর্মুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ভারতের একমাত্র নারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী টুইটে লিখেছেন, রাষ্ট্রের প্রধান হিসেবে সংবিধানের মূল চরিত্র এবং গণতন্ত্র রক্ষায় আপনার ভূমিকার দিকে দেশবাসী অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকবে।

বিশেষত এরকম একটা সময়ে, যখন সমাজ নানা মতভেদে জর্জরিত।

দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের দ্বিতীয় নারী রাষ্ট্রপতি। এর আগে ভারতের নারী রাষ্ট্রপতি ছিলেন প্রতিভা প্যাটেল।

এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মমতা-সহ বিরোধীদের প্রার্থী ছিলেন যশবন্ত সিনহা। উল্টো দিকে ছিলেন বিজেপি জোটের প্রার্থী ছিলেন দ্রৌপদী।

সম্প্রতি মমতা জানিয়েছিলেন, আগে জানালে দ্রৌপদীকে সমর্থন করার কথা ভাবা যেত। তখনই জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা হলে কি বিরোধীদের মধ্যেও যশবন্তর জেতা নিয়ে দ্বিধা রয়েছে? আর হলোও তাই। ভারতের ১৫তম রাষ্ট্রপতি হলেন উড়িষ্যার ময়ূরভঞ্জ জেলার বাইদাপোসি গ্রামে আদিবাসী পরিবারের মেয়ে দ্রৌপদী মুর্মু।

এবার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন, যা আগামী ৬ আগস্ট হতে চলেছে। সেখানেও বিজেপির চমক। বিজেপি জোটের উপরাষ্ট্রপতির পদপ্রার্থী জগদীপ ধনকড়। যিনি পশ্চিমবঙ্গের সাবেক রাজ্যপাল ছিলেন। রোববার (১৭ জুলাই) তিনি রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। গোটা ভারত জানে তার সাথে মমতার মোটেও সুসম্পর্ক ছিল না। নীতিগতভাবে সম্পর্কটা ছিল আদা-কাঁচকলা। যদিও দুজনেই প্রকাশ্যে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন।

এবার সেই উপরাষ্ট্রপতি পদে ভোটদানে বিরত থাকছে মমতার দল। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যার জেরে আবারও সুবিধা পেতে পারে বিজেপি।

এদিন বিকেলে তৃণমূল নেত্রীর উপস্থিতিতে দলের সব সাংসদ সদস্যরা বৈঠক করেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এবারের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গের সাবেক রাজ্যপাল তথা বিজেপি জোটের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী জগদীপ ধনকড় এবং বিরোধীদলের প্রার্থী মার্গারেট আলভা, কাউকেই ভোট দেবে না পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস।

দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, আমরা রাজ্যপাল থাকালীন জগদীপ ধনকড়ের ভূমিকা ও দৃষ্টিভঙ্গি দেখেছি। ধনকড়কে কোনো মতেই সমর্থন করা যায় না। অন্যদিকে বিরোধীদের প্রার্থী মার্গারেট আলভাকেও সমর্থন করবে না তৃণমূল। উপরাষ্ট্রপতি ভোটে তৃণমূল ভোটদানে বিরত থাকবে।

এদিন তৃণমূলের দলের উপস্থিত ৮৫ শতাংশ সংসদ সদস্য মিলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তৃণমূল সংসদ সদস্যরা মনে করছেন, বিরোধীরা যেভাবে প্রার্থী নির্বাচন করেছে, তা ঠিক নয়। আরও সুষ্ঠুভাবে আলোচনার জায়গা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। ফলে তারা এই ভোটদানে বিরত থাকছেন।

অভিষেকের অভিযোগ, তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী নির্বাচন করেছে বিরোধী বাকি দলগুলো। যদিও, মার্গারেট আলভার নাম ঘোষণার পরই মহারাষ্ট্রের এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার বলেছেন, বৈঠকের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা হলেও তা সম্ভব হয়নি।

২০২৪ সালে বিরোধী জোট গড়ে বিজেপি সরকারকে পরাজিত করার কথা বারে বারেই বলে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দলের এই সিদ্ধান্তে কি বিরোধী জোটের ফাটলের ছবি স্পষ্ট হলো? অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, আমরা বিজেপি প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছি না। ভোটদানে বিরত থাকছি। তাতে বিরোধী ঐক্যে ফাটল ধরছে এমনটা নয়।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৭ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
ভিএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।